প্রতীকী ছবি। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
শাসক ও বিরোধী শিবির নির্বিশেষে পশ্চিমবঙ্গের বিধায়কদের ৩৪ শতাংশ কোটিপতি! ২৮২ জন বিধায়কের মধ্যে ৯০ জনের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। ৩২ শতাংশ বিধায়ক গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত। বুধবার নাগরিক নজরদার সংগঠন ‘ওয়েস্টবেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচ’ এবং ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’ প্রকাশিত রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।
২০১৬ সালের ভোটে বা তার পরের উপনির্বাচনে ওই ২৮২ জন বিধায়কের দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে: বিজেপির ৫০ শতাংশ বিধায়ক গুরুতর অভিযোগে বিদ্ধ। বর্তমানে রাজ্যে বিজেপি বিধায়ক আছেন ছ’জন। তাঁদের মধ্যে তিন জন গুরুতর মামলায় অভিযুক্ত। কংগ্রেসের ৩৯ শতাংশ এবং সিপিএমের ৪২ শতাংশ বিধায়কের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সার্বিক ভাবে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে কংগ্রেসের ৫১ শতাংশ বিধায়কের বিরুদ্ধে।
তৃণমূলের ৩০ শতাংশ বিধায়কের বিরুদ্ধে গুরুতর মামলা রয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সব মিলিয়ে ১০৪ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯০ জন খুন, ধর্ষণ, অপহরণের মতো জামিন-অযোগ্য এবং গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত। ওঁদের মধ্যে ১০ জন বিধায়কের নামে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং সাত জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রয়েছে।
অভিযুক্তদের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে নাগরিক সমাজের একাংশের দীর্ঘদিন ধরেই আপত্তি রয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে যুক্ত অনেকের দাবি, শাসক দল প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসায়। তাই শুধু অপরাধের অভিযোগ সংক্রান্ত খতিয়ান দেখলে বাস্তব ছবি না-ও বোঝা যেতে পারে।
রাজ্যের ধনী বিধায়কদের ক্ষেত্রে প্রথম তিনটি স্থানেই রয়েছেন তৃণমূল প্রতিনিধিরা। বাঁকুড়ার তালড্যাংরার বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেন এবং কলকাতার কসবার বিধায়ক জাভেদ খান। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, ওই তিন জনই পেশাগত ভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। সব থেকে কম সম্পত্তি রয়েছে, এমন তিন বিধায়কের তালিকায় একমাত্র তৃণমূল প্রতিনিধি নবদ্বীপের বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা। বাকি দু’জন সিপিএমের, পাঁশকুড়ার বিধায়ক শেখ ইব্রাহিম আলি এবং সোনামুখীর বিধায়ক অজিত রায়। শতাংশের নিরিখে ধনীর তালিকায় যুগ্ম ভাবে দ্বিতীয় বিজেপি এবং কংগ্রেস। হলফনামা বিশ্লেষণ করে জানানো হয়েছে, তৃণমূল বিধায়কদের মাথাপিছু গড় সম্পত্তির পরিমাণ এক কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা। বিজেপি বিধায়কদের মাথাপিছু গড় সম্পত্তির পরিমাণ এক কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। ধনসম্পত্তির পরিমাণে সব থেকে নীচে রয়েছেন পাঁশকুড়ার সিপিএম বিধায়ক শেখ ইব্রাহিম আলি।
এই রিপোর্টের রাজ্য কো-অর্ডিনেটর উজ্জয়িনী হালিম জানান, রাজ্যে মোট বিধায়কের সংখ্যা ২৯৪। কিন্তু ১০টি আসন বর্তমানে খালি। তৃণমূলের সুদর্শন ঘোষদস্তিদার এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের আলি ইমরানের হলফনামা অস্পষ্ট থাকায় তা বিশ্লেষণ করা যায়নি। তাই ২৮২ জন বিধায়কের নথি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। শিক্ষার দিক থেকে সামগ্রিক ভাবে ছবি ‘উজ্জ্বল’। রিপোর্ট অনুযায়ী রাজ্যের ৬৬ শতাংশ বিধায়ক স্নাতক স্তর উত্তীর্ণ। এক জন বিধায়ক শুধু ‘স্বাক্ষর’ গোত্রভুক্ত। লিঙ্গসাম্যের নিরিখে ছবি তত ‘আশাপ্রদ’ নয়। রাজ্যে মহিলা বিধায়কের হার মাত্র ১৫ শতাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy