Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪

অশোকের অস্ত্র উন্নয়ন, পাল্টা প্রশ্ন রামচন্দ্রের

পরনে স্কুলের পোশাক। নীল পাড়ের সাদা শাড়ি। সাইকেলে স্কুলের পথে যেতে যেতেই থমকে দাঁড়াল জনা কয়েক ছাত্রী। রাস্তা জুড়ে এগিয়ে আসছে ভিড়টা। সঙ্গে ব্যান্ডপার্টি। হাতে ঝান্ডা। ভিড়ের মধ্যমণি সামনে এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলেন— ‘‘কোন ক্লাস?’’ একটু ইতস্তত করে ছাত্রীরা উত্তর দিতেই, পরের প্রশ্ন— সাইকেল কী ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের?

ভোট প্রচারে সিউড়ি কেন্দ্রের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের রামচন্দ্র ডোম (বাঁ দিকে) এবং তৃণমূলের অশোক চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

ভোট প্রচারে সিউড়ি কেন্দ্রের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের রামচন্দ্র ডোম (বাঁ দিকে) এবং তৃণমূলের অশোক চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৬ ০২:৪৪
Share: Save:

পরনে স্কুলের পোশাক। নীল পাড়ের সাদা শাড়ি। সাইকেলে স্কুলের পথে যেতে যেতেই থমকে দাঁড়াল জনা কয়েক ছাত্রী। রাস্তা জুড়ে এগিয়ে আসছে ভিড়টা। সঙ্গে ব্যান্ডপার্টি। হাতে ঝান্ডা। ভিড়ের মধ্যমণি সামনে এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলেন— ‘‘কোন ক্লাস?’’ একটু ইতস্তত করে ছাত্রীরা উত্তর দিতেই, পরের প্রশ্ন— সাইকেল কী ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের?

মঙ্গলবার সকালে দুবরাজপুরের পারুলিয়া পঞ্চায়েতের করমকাল গ্রামে নির্বাচনী সারলেন শাসকদলের চিকিৎসক-প্রার্থী অশোক চট্টোপাধ্যায়। পথচলতি মানুষকে হাত নেড়ে, কখনওবা নমস্কার জানিয়ে, কখনওবা দু’একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে প্রচার চালালেন তিনি। গ্রামের শেষ মাথায় এক আদিবাসী মহিলাকে তৃণমূল প্রার্থীর জিজ্ঞাসা ২ টাকা কিলো চাল পান? ভাল আছেন তো?

মাথা নেড়ে কিছু বললেন ওই বধূ। কিছু পরে প্রচারে পৌঁছন পরের গ্রাম ওই পঞ্চায়েতের আদুরিয়ায়। গ্রামের মুখে তখন অপেক্ষমান দলের কর্মী সমর্থকেরা। গাড়ি থেকে নেমে ফের প্রচার শুরু। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সঙ্গী নির্বাচন কমিশনের ফ্লাইং স্কোয়াড। পুলিশের গাড়ি।

যখন দুবরাজপুরের পারুলিয়া গ্রামে প্রচার সারছেন সিউড়ি বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী প্রায় একই সময়ে দুবরাজপুরের গোহালিয়া পঞ্চায়েতে প্রচার সারলেন আর এক চিকিৎসক-প্রার্থী সিপিএমের রামচন্দ্র ডোম। অশোক যেখানে উন্নয়নের বার্তা তুলে ধরে প্রচার চালাচ্ছেন, তখন উল্টো পথে হেঁটে কোথায় খামতি শাসকদলের, সারদা থেকে নারদা, বেকারদের চাকরি নিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের ছিনিমিনি খেলার অভিযোগ উঠে এল রামচন্দ্রের প্রচারে। গোহালিয়াড়ার মেটেলা গ্রামে বাড়ি বাড়ি সে কথাই কৌশলে পৌঁছে দিলেন রামচন্দ্রের বাহিনী।

কথা বলে জানা গেল, দু’জনেই সকালে হাল্কা জলখাবার খেয়ে প্রচারে নেমেছেন। সিউড়ি বিধানসভা এলাকায় যে চারটি পঞ্চায়েত রয়েছে তার মধ্যে অশোকবাবু বেছে নিয়েছিলেন পারুলিয়া ও সাহাপুর অঞ্চল। সকাল আটটা নাগাদ পারুলিয়া, মাঝিগ্রাম, বীরনারায়ণপুর, আদিবাসীপাড়া, রাজগঞ্জ, করমকাল আদুরিয়া, দূর্লভপুর, কলোসোনা, হোদলা, বরুলে প্রচার চলে। প্রচারের মাঝেই গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকে বয়স্কা মহিলাদের আর্শীবাদ চেয়ে নেওয়া, কিংবা উন্নয়ন নিয়ে নানা বার্তা ফেরি করেন অশোকবাবু। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চলে প্রচার। দুপুরে একটু বিশ্রাম। বিকালে সাহাপুরে সভা করেন। অন্য দিকে, সিপিএমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এ দিন গোহালিয়াড়া, বক্রেশ্বর ও মেটেলায় দিনভর বাড়ি বাড়ি প্রচারের কথা থাকলেও জেলা নির্বাচনী দফতর থেকে একবেলা প্রচারের অনুমতি নেওয়া ছিল।

বিকালে সিউড়ি বিধানসভা এলাকার দুবরাজপুরের চিনপাই অঞ্চলে আসেন রামচন্দ্র। এই এলাকায় মিছিলের অনুমতি আগেই রেখেছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। সেই মিছিলের পুরোভাগে রামচন্দ্রকে রাখা হয়। গোটা চিনপাই গ্রামে ঘোরে মিছিল। রামচন্দ্রের উপস্থিতিতে পতাকা হাতে মহিলা ও পুরুষ দলীয় কর্মীদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ছিল বাজনা।

প্রত্যেকটি বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় কুশল বিনিময় করেন রামচন্দ্র। কখনও বা দীর্ঘ দিনের পরিচিত কাউকে দেখে কাছে এসে কুশল জানতে চান। কোলের বাচ্চার গাল টিপে দেন। পরে চিনপাইয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক সভায় বক্তব্য রাখেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE