Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
হামলার অভিযোগ সিপিএমের

লাভপুরের ওসি-র বদলি চেয়ে আর্জি

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্য মঞ্চে ‘জঙ্গলমহলের মা’ সম্বোধন করতে এক উর্দিধারী পুলিশকে ইতিমধ্যেই দেখেছেন রাজ্যবাসী। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার সেই ভারতী ঘোষকে সদ্যই তাঁর পদ (ওএসডি, এলডব্লিউই) থেকে সরিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল শাসকদলের হয়ে তাঁবেদারির।

ওসি দেবাশিস ঘোষ

ওসি দেবাশিস ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
লাভপুর ও সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৬ ০৩:২০
Share: Save:

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্য মঞ্চে ‘জঙ্গলমহলের মা’ সম্বোধন করতে এক উর্দিধারী পুলিশকে ইতিমধ্যেই দেখেছেন রাজ্যবাসী। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার সেই ভারতী ঘোষকে সদ্যই তাঁর পদ (ওএসডি, এলডব্লিউই) থেকে সরিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল শাসকদলের হয়ে তাঁবেদারির।

ঠিক একই অভিযোগে এ বার আর এক পুলিশকর্মীর বদলি চেয়ে কমিশনের দ্বারস্থ বিরোধীরা। তিনি বীরভূমের লাভপুর থানার ওসি দেবাশিস ঘোষ। প্রকাশ্য মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘দিদি’ সম্বোধন করার নজির রয়েছে এই অফিসারেরও।

লাভপুরের ঠিবা গ্রামে দোলের দিন (বুধবার) পতাকা টাঙানো নিয়ে সিপিএম সমর্থকদের সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের ঝামেলা বাধে। এক তৃণমূল কর্মীর মাথা ফাটানোর অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের ধরতে বৃহস্পতিবার রাতে তল্লাশির নামে দেবাশিসবাবুর নেতৃত্বে পুলিশ বাম কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা করে বলে অভিযোগ। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদার কথায়, ‘‘প্রচার-মিছিলে হাঁটার জন্য আমাদের কর্মীদের উপর অত্যাচার, মারধর, বাড়ি ভাঙচুর থেকে ওই ওসি পিছ-পা হন না। এমন লোক যদি নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় থাকেন, তা হলে অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়।’’ বৃহস্পতিবার রাতে দেবাশিসবাবুর বদলি চেয়ে জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানান বামেরা। জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী শুক্রবার বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। দেখা হচ্ছে।’’

জেলা পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, বরাবর শাসকদলের নেকনজরে থাকার চেষ্টা করে গিয়েছেন ১৯৯৮ ব্যাচ-এর অফিসার দেবাশিস। গত বছর ইলামবাজারে একটি প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে তাঁকে ‘দিদি’ বলে ডেকে বসেন তিনি, যা শুনে অনেক পুলিশ-কর্তাও অবাক হয়ে যান।

দেবাশিস ওসি হিসেবে প্রথম দায়িত্ব পান মহম্মদবাজার থানার। ২০১৩-র অক্টোবরে আসেন লাভপুরে। তার পর থেকেই এলাকার ‘বিতর্কিত’ তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তিন ভাইকে পায়ের তলা দিয়ে পিষে মারার কথা প্রকাশ্য বলে বিতর্কে জড়ান মনিরুল। অথচ, ২০১৪-য় সেই নবগ্রাম হত্যাকাণ্ডের চার্জশিটে মনিরুলের নাম বাদ দেয় লাভপুর থানা। ঘটনার মূল অভিযোগকারীর অার্জিতে পুনর্তদন্তের আবেদন প্রত্যাহারের পিছনেও দেবাশিসবাবুর হাত দেখছেন বিরোধীরা। রয়েছে গত লোকসভা ভোটে শাসক দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও।

এলাকার একাধিক বিরোধী নেতার দাবি, শুধু মনিরুলই নয়, লাভপুর থানা কার্যত পরিচালিত হয় মনিরুলের রাজনৈতিক গুরু, তৃণমূলের বর্তমান জেলা সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নানের অঙ্গুলি হেলনে। মান্নান সাহেব এ ব্যাপারে মন্তব্য করেননি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘যা বলার, মনিরুল ইসলামই বলবেন।’’ মনিরুল ইসলাম ফোন ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসের।

দেবাশিস এ দিন বলেছেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি সম্পর্কে যা বলার, বলবেন জেলার এসপি।’’ ঘটনা হল, শাসক দলের সঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের সম্পর্ক নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে বিরোধীদের। এসপি বলেন, ‘‘কমিশনের কাছে অভিযোগ হলে, কিছু বলার নেই। তবে আমার কাছে অভিযোগ এলে তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy