মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভিডিয়ো বার্তা। ছবি: ফেসবুক
দরকার হলে তিনি হুইল চেয়ার নিয়েই প্রচারে ঝাঁপাবেন। বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের সাড়ে ১২ নম্বর কেবিন থেকে এমন বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার মমতার বার্তা থেকে স্পষ্ট যে তিনি চক্রান্তের তত্ত্ব থেকে সরে এসেছেন। বুধবার বলেছিলেন, তাঁকে পিছন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার তিনি গোটা বার্তায় তেমন কিছু বলেননি। তাঁর ঘনিষ্ঠরা মনে করছেন যে তাঁর বৃহস্পতিবারের বার্তা আগের চেয়ে অনেক বাস্তবসম্মত এবং যৌক্তিক।
বুধবার সন্ধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে আহত হন মমতা। সেখান থেকে তাঁকে সরাসরি কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। রাতে তাঁর পায়ে প্রাথমিক ভাবে প্লাস্টার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর গোড়ালিতে ব্যথা রয়েছে। তাঁর হাড়ে চোট লেগেছে। পাশাপাশি শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কম রয়েছে। বুধবার সন্ধ্যার ঘটনার পর থেকেই তৃণমূল নেতৃত্বের পাশাপাশি দলের কর্মী-সমর্থকেরা চিন্তিত ছিলেন, আসন্ন ভোটের প্রচার কাজ কী ভাবে সামলানো হবে। দলনেত্রী আহত হয়ে পড়ে থাকলে এত বড় ‘দায়িত্ব’ কে সামলাবেন? নির্বাচন প্রক্রিয়াও সামলানো হবে কী ভাবে? বৃহস্পতিবার সে সব ভাবনারই জবাব দিলেন মমতা। জানিয়ে দিলেন, দরকার হলে তিনি হুইল চেয়ার নিয়েই প্রচারে ঝাঁপাবেন। একই সঙ্গে তিনি দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের সংযত থাকার বার্তাও দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালের বেডে শুয়ে এক ভিডিয়ো বার্তা দিয়েছেন মমতা। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, দুই এক দিনের মধ্যেই তিনি প্রচার শুরু করবেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা আমার কর্মী-ভাইবোন আছেন, তাঁদের বলছি, গতকাল আমার খুব জোর চোট লেগেছিল। পায়ে চোট আছে। লিগামেন্টেও চোট লেগেছে। মাথায় এবং বুকে খুব ব্যথাও হয়েছে। খুব বড় চোট লেগেছে। গাড়ির বনেটের উপরে দাঁড়িয়ে সকলকে নমস্কার করছিলাম। তখন এমন জোরে চাপ আসে, গাড়ির দরজাটা আমার পায়ের উপর চেপে যায়। আমার কাছে যে ওষুধগুলো ছিল সেগুলো খেয়ে কলকাতার দিকে রওনা হই। ডাক্তারদের চিকিৎসাতেই আছি। আমি অনুরোধ করব সকলের কাছে, শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন, ভাল থাকুন। এমন কিছু করবেন না যাতে মানুষের কোনও অসুবিধা হয়। আশা করি আমি আবার দু’তিন দিনের মধ্যেই নিজের ফিল্ডে ফিরে যেতে পারব। তবে হয়তো পায়ের সমস্যা থাকবে। কিন্তু আমি ম্যানেজ করে নেব। আমার মিটিং কিছুই আমি নষ্ট করব না। হয়তো কিছু দিন আমাকে হুইল চেয়ারে ঘুরতে হবে।’’
বুধবার রাতেই চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ পা ফুলেছে। সেই অবস্থার এখনও তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে বুধবার রাতে এমআরআই-এর পর পায়ে অস্থায়ী প্লাস্টার করা হয়েছে। সেই ছবিও ছড়িয়ে পড়েছে নেটমাধ্যমে। মুখ্যমন্ত্রীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পায়ের ফোলা ভাব কমলে বৃহস্পতিবার স্থায়ী প্লাস্টার করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতার জন্য চিকিৎসকদের যে মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি হয়েছে, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে মমতা প্রচারে অংশ নিতে চাইলে চিকিৎসকরা কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা এখনও জানা যায়নি। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, নেত্রীর ইচ্ছা মতো যাবতীয় ব্যবস্থা করতে তৈরি দল। হেলিকপ্টারে করে তাঁর রাজ্য সফরের ব্যবস্থা করা হবে। সেই সঙ্গে হেলিকপ্টার থেকে মঞ্চে ওঠা— মমতার যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার ব্যবস্থাও রাখা হবে। প্রতিটি জায়গায় মঞ্চে হুইল চেয়ার তোলার জন্যও ব্যবস্থা করা হবে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy