ননীগোপাল দত্ত
ভোটের মুখে পুলিশ-প্রশাসনের শাসক ঘনিষ্ঠ আধিকারিকদের সরানো চলছিলই। এ বার ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মোকাবিলা করতে না পারায় পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানার ওসি-কে সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন।
বুধবার রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী অফিসার দিব্যেন্দু সরকার বলেন, ‘‘সবংয়ের ওসি ননীগোপাল দত্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নিয়েছেন বেলদার জোড়াগেড়িয়া ফাঁড়ির ওসি শুভাশিস দত্ত। কমিশন সূত্রের খবর, ভোটের পরে এলাকায় সন্ত্রাস মোকাবিলায় ব্যর্থ বলেই গত ২৩ মার্চ সবং থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ননীগোপালবাবুকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সবংয়ের অবস্থান পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না ও পটাশপুরের সীমানা এলাকায়। আজ, বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় ভোট রয়েছে। তাই সেখানে ভোট-পর্ব অবাধ করার বিষয়টিও কমিশনের এই পদক্ষেপের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পেয়েছে।
গত ১১ এপ্রিল সবংয়ে ভোটের তিন দিন আগে প্রাণ গিয়েছিল এক জন তৃণমূল কর্মীর। তার পর ভোটের দিনটা বিনা রক্তপাতে কাটলেও নির্বাচন মিটতেই একের পর এক সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। কখনও জোট প্রার্থী মানস ভুঁইয়ার পোলিং এজেন্টের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে, কখনও আবার সিপিএম সমর্থকেরা আক্রান্ত হয়েছেন, কখনও আবার গ্রামে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের।
এই পরিস্থিতিতে বাম-কংগ্রেস জোটের তরফে কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছিল, ভোটের পরে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছেন না সবংয়ের ওসি ননীগোপাল দত্ত। বিরোধীদের অভিযোগকে তিনি কোনও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। উল্টে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের নির্দেশ মেনে মিথ্যা মামলায় বিরোধীদের জড়িয়ে দিচ্ছেন। সবংয়ের জোট প্রার্থী, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া বলেন, “ননীগোপাল দত্ত তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বসে একাধিক মিথ্যা মামলায় কংগ্রেস ও বাম কর্মীদের জড়িয়ে
দিচ্ছিলেন। আমাদের নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র তাঁর বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিয়েছে।”
জঙ্গলমহলে প্রথম দফা ভোটের আগে থেকেই শাসকের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগে পুলিশ-প্রশাসনের পরপর আধিকারিককে সরিয়ে দিয়েছে কমিশন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকেও সরতে হয়েছে। ভোটের দিন কয়েক আগে সরিয়ে দেওয়া হয় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে। কমিশনের এই সব পদক্ষেপ নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের ফল প্রকাশের পর ‘বুঝে নেওয়া’র হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দেন তিনি।
এ দিকে, নির্বাচনের পর থেকেই উত্তপ্ত সবং। দণ্ডরা গ্রামে বোমাবাজি, দুবরাজপুরে সিপিএম সমর্থকের বাড়িতে হামলার মতো একের পর এক অভিযোগ উঠেছে। তবে সে সব ক্ষেত্রে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি, এই অভিযোগ মানতে নারাজ ননীগোপালবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘সবংয়ের মতো শান্তিপূর্ণ নির্বাচন এ বার কোথাও হয়নি। ভোটের পরেও কোনও অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিয়েছি। আর পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি থানার ওসি হয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ভোটে প্রভাব খাটানোর মতো ক্ষমতা আমার নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy