Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

শূন্য থেকে শুরু করে হাল না ছাড়ার লড়াই

খেলোয়াড় হিসেবে তিনি নতুন নন। জীবনে অনেক ম্যাচই খেলেছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের মতো তাঁরও পিচ অজানা। তাই এক সময়ে কলেজ টিমের হয়ে ছক্কা হাঁকানো খেলোয়াড় তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন্দ্রনাথ (অঞ্জন) বেরা এ বার বালির রাজনীতির পিচে কত রান তুলবেন, সেটাই দেখার।

সৌমেন্দ্রনাথ (অঞ্জন) বেরা

সৌমেন্দ্রনাথ (অঞ্জন) বেরা

শান্তনু ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৪৭
Share: Save:

খেলোয়াড় হিসেবে তিনি নতুন নন। জীবনে অনেক ম্যাচই খেলেছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের মতো তাঁরও পিচ অজানা। তাই এক সময়ে কলেজ টিমের হয়ে ছক্কা হাঁকানো খেলোয়াড় তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন্দ্রনাথ (অঞ্জন) বেরা এ বার বালির রাজনীতির পিচে কত রান তুলবেন, সেটাই দেখার।

সৌমেন্দ্রনাথবাবু এ বার বালি বিধানসভার সিপিএম প্রার্থী। কলেজ জীবন থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার সুবাদে তথ্য সংস্কৃতি দফতরের প্রাক্তন এই রাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ভোটের লড়াই নতুন কিছু নয়। তাই ভোট ময়দানের পিচে প্রতিপক্ষ বৈশালী ডালমিয়ার গুগলি বল সামলে তাঁর ‘টিম বালি’ কতটা সফল হয়ে উঠবে, তা নিয়েই এখন চিন্তায় সৌমেন্দ্রনাথবাবু।

কেননা, এক সময়ের বামেদের লাল দুর্গ বলে পরিচিত বালির মাটিতে সিপিএমের সংগঠন এখন বেশ দুর্বল। গত পুরভোটের আগেই বালি পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি থেকে ২১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়। তাতেই সিপিএমের পুর চেয়ারম্যান-সহ অন্যান্য নেতাদের নাম জড়িয়ে যায়। ঘুষ-কাণ্ডের সেই ছায়া গিয়ে পড়ে পুরভোটেও। ফলে পুরভোটের লড়াই থেকেও কার্যত নিজেদের গুটিয়ে রাখেন বালির সিপিএম নেতৃত্ব। পুরভোটে পুরোপুরি ভরাডুবি হয় সিপিএমের।

সেখানেই এ বার লড়তে নেমেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার অধ্যাপক সৌমেন্দ্রনাথবাবু। শাসকদলের মতো সিপিএমেরও এ বার বিধাননগরের বাসিন্দা এই ব্যক্তিকে প্রার্থী করার পিছনে রয়েছে কৌশল। সূত্রের খবর, কোটি টাকার কেলেঙ্কারি-সহ বিভিন্ন কারণে বালির মানুষের কাছে স্থানীয় সিপিএম নেতাদের ভাবমূর্তি তেমন একটা স্বচ্ছ নয়। সেই জায়গায় তাঁদের কাউকে প্রার্থী করলে বালির মানুষ যে তা গ্রহণ করবে না, তা জানতেন সিপিএমের শীর্ষ নেতারা। তাই প্রাক্তন এই মন্ত্রীকে টিকিট দিয়ে একটা উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তৈরির চেষ্টা করেছেন তাঁরা।

সেই মতো টিকিট পেয়ে বালির মাটিতে পা দেওয়া ইস্তক নিজের জায়গা তৈরির মরিয়া চেষ্টা করছেন সৌমেন্দ্রনাথবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের খুব ভালবাসা পাচ্ছি। হতে পারেন কেউ অন্য রাজনৈতিক মনোভাবাপন্ন। তিনি অন্য কাউকে ভোট দিতেই পারেন। তা-ও আমার সঙ্গে হেসে কথা বলছেন তাঁরা। এই জনসংযোগটাই অনেক বড় পাওনা।’’

এইটুকু জনসংযোগই যে ভোট বাক্সের চিত্রটা বদলে দিতে পারে, তা ভাল মতোই জানেন পোড়খাওয়া রাজনীতিক সৌমেন্দ্রনাথবাবু। তাই বালির মাটিতে পা দেওয়ার পর থেকে এই কাজই করেছেন তিনি। ছোটবেলায় বাবার কাছেই তিনি রাজনীতির ‘সহজপাঠ’ পড়েছিলেন। কলেজে ভর্তি হয়ে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। এর পরে দলের বিভিন্ন প্রকাশনায় লেখালেখি শুরু করেন। সেই সুবাদে রাজ্যস্তরে রাজনীতি করার সুযোগ। এর পরে ২০০৬ সালে তাঁকে পুরশুরা বিধানসভা কেন্দ্রে টিকিট দেয় দল। সেখান থেকে জিতে বিধানসভায় তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞানপ্রযুক্তির স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হন। ২০১০ সালে তিনি তথ্য সংস্কৃতি দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রীও হয়েছিলেন। ২০১১-এ অবশ্য তৃণমূলের পারভেজ রহমানের কাছে পরাজিত হন।

পাঁচ বছর ধরে নিজের রাজনৈতিক বুদ্ধিতে শান দিয়ে আরও পোক্ত হয়েছেন সৌমেন্দ্রনাথবাবু। তাই প্রায় ছ’ফুট লম্বা মানুষটি রাস্তার ধারের চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে মাটির ভাঁড়ে চুমুক দিয়ে বলছেন, ‘‘সবার উপরে মানুষ সত্য। তাহার উপরে নাই।’’

আজ সেই ফাইনাল ম্যাচ। দেখা যাক গুগলি বলে কে ছক্কা হাঁকান আর কে ক্লিন বোল্ড হন!

অন্য বিষয়গুলি:

Anjan Bera assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy