Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪

ভোটের মুখে জামিন দু’পক্ষের প্রার্থীদেরই

মামলা হয়েছে বছর খানেক আগেই। আদালতে গড়িয়েছে একের পর এক মামলার দিন। কিন্তু ভোট বড় বালাই! তাই ভোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হতেই আদালতে হাজির হয়ে পুরানো মামলায় জামিন, অন্তর্বর্তী জামিন নেওয়া শুরু করলেন বাম-ডান দুই পক্ষের প্রার্থীরাই।

শিলিগুড়ি আদালতে অশোকবাবু। ছবি: সন্দীপ পাল

শিলিগুড়ি আদালতে অশোকবাবু। ছবি: সন্দীপ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি ও ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৬ ০২:৫৪
Share: Save:

মামলা হয়েছে বছর খানেক আগেই। আদালতে গড়িয়েছে একের পর এক মামলার দিন। কিন্তু ভোট বড় বালাই! তাই ভোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হতেই আদালতে হাজির হয়ে পুরানো মামলায় জামিন, অন্তর্বর্তী জামিন নেওয়া শুরু করলেন বাম-ডান দুই পক্ষের প্রার্থীরাই।

মঙ্গলবার দুপুরে শিলিগুড়ির এসিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিনটি মামলায় জামিন পান শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর সঙ্গে ওই মামলাগুলিতে আরেক অভিযুক্ত সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকারও আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়েছেন। একই ভাবে চোপড়ার তৃণমূল প্রার্থী হামিদুল রহমান ১০ বছর আগের একটি পুরানো মামলায় আদালতে গিয়ে জামিন নিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছিল আদালত।

শিলিগুড়ি আদালত সূত্রের খবর, তিনটি মামলার মধ্যে দু’টি মামলায় অশোকবাবুর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, পুলিশকে সরকারি কাজে বাধা এবং শ্লীলতাহানির মতো জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা চলছে। অশোকবাবুদের হয়ে ২০ জনের বেশি আইনজীবী একযোগে এ দিন আদালতে দাঁড়ান। বিচারক কাগজপত্র দেখার পরে প্রতিটি মামলায় ৫০০ টাকা এবং তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে তদন্তের কাজে সহযোগিতার কথা বলে জামিন মঞ্জুর করেছেন। তিনটি মামলার মধ্যে জামিন অযোগ্য দু’টি মামলা মাটিগাড়া থানার এবং একটি শিলিগুড়ি থানার। অশোকবাবু জামিন পাওয়ার পরে বলেন, ‘‘এ সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা। আমরা আইনি পথেই লড়াই করব।’’ অশোকবাবুর আইনজীবীদের পক্ষে মিলন সরকার বলেছেন, ‘‘মামলাগুলি একেবারে ভিত্তিহীন। রাস্তা অবরোধের মামলার বিচারক জামিন এবং আগামী শুনানির দিন দিয়েছেন। বাকি দু’টিতে অশোকবাবুরা অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিয়েছেন।’’

পুলিশ এবং আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ওই তিনটি মামলা হয়েছিল অশোকবাবুদের বিরুদ্ধে। প্রথমটি হয় ২০১৫ সালের ২৯ এপ্রিল। শিলিগুড়ি থানার কাছারি রোড চা বাগানের শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে সে দিন মিছিল করেন বামেরা। তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অশোকবাবু, জীবেশ সরকারের। বিনা অনুমতিতে মিছিল এবং রাস্তা বন্ধ করার অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। এর পরে ওই বছরের ১৫ অগস্ট মাটিগাড়ার বালাসন কলোনি এলাকাতে সিপিএমের মিছিল ঘিরে গোলমাল হয়। অশোকবাবুরা অভিযোগ করেন, তাঁদের উপর তৃণমূলের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। তৃণমূলের তরফে পাল্টা অভিযোগ করে জানানো হয়, সিপিএম নেতারা তৃণমূলের মহিলাদের উপরে হামলা চালান। সেখানে খুনের চেষ্টা, শ্লীলতাহানি এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশে মামলা দায়ের হয়।

সিপিএম নেতা জীবেশবাবু জানান, ‘‘আক্রান্ত হই আমরা, আবার আমরাই না কি খুনের চেষ্টা, শ্লীলতাহানি করেছি বলে মামলা হয়। রাজনীতিটা কতটা নীচে নেমেছে তা ভাবলেই কেমন লাগে। যাই হোক, ভোটের আগে জামিন নেওয়া হয়েছে।’’ প্রার্থীর মনোনয়নের ক্ষেত্রে মামলার বিস্তারিত তথ্যও দরকার হয়।

এদিন বেলা ৩টে নাগাদ দুই সিপিএম নেতা আদালতে এসে আইনজীবীদের সঙ্গে বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করেন। বিচারক পুলিশ ফাইলের শুনানি শুরু হতেই তাঁদের মামলার শুনানি করেন। তার পরে দুই নেতা বন্ড পেপারে সই করে সোজা দলীয় দফতরে চলে যান।

এ দিনই ইসলামপুর মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা ও বিচারবিভাগীয় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন হামিদুল রহমান। তাঁকে জামিনে মুক্তি দেন বিচারক। আদালত সূত্রে খবর, তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মারপিটের মামলা ছিল। তবে আদালতে গরহাজিরার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। গত ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর নির্বাচনের সময় গাড়িতে হামলার ঘটনায় হামিদুল রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল সিপিএম। তাঁর আইনজীবী কাজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘এর আগে উনি জামিন নিলেও পরে গরহাজিরার জন্য ওই পরোয়ানা জারি হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 cpm tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE