Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Saltlake

Bengal polls 2021: এক দলে থেকেও ‘যুদ্ধ’ করতেন ২ জন, এ বার ভোটে কি সম্মুখসমরে সুজিত আর সব্যসাচী

দলে থাকাকালীন সুজিত-সব্যসাচী সম্পর্ক কতটা ‘মধুর’ ছিল, তা সল্টলেক, রাজারহাট, নিউটাউন জুড়ে সুবিদিত। তবে খাতায়কলমে দু’জনেই এখনও তৃণমূল বিধায়ক।

ইতিমধ্যেই প্রচার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন সব্যসাচী অনুগামীরা। প্রতিপক্ষ সুজিত হবেন বলেই অনুমান তাঁদের।

ইতিমধ্যেই প্রচার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন সব্যসাচী অনুগামীরা। প্রতিপক্ষ সুজিত হবেন বলেই অনুমান তাঁদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২১ ১৬:৩৩
Share: Save:

সুজিত বসু এবং সব্যসাচী দত্ত। দু’জনের দু’টি পথ অনেক আগেই দু’টি দিকে বেঁকে গিয়েছে। এক দলে থেকেও তাঁদের ‘মিত্রতা’ ছিল বলে শোনা যায়নি। কিন্তু দু’জনের ‘লড়াই’ হয়নি কখনও। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বার সেটাই হতে চলেছে বিধাননগরে। তৃণমূল সূত্রে খবর, বিধাননগরে ফের সুজিত প্রার্থী হচ্ছেন। আর বিজেপি শিবির ইতিমধ্যেই সব্যসাচীকে জানিয়ে দিয়েছে, তিনি বিধাননগরেই প্রার্থী হচ্ছেন। দলে যোগ দেওয়ার সময় নাকি এমন দাবিই জানিয়েছিলেন সব্যসাচী।

দু’জনে দীর্ঘ দিন একই এলাকায় রাজনীতি করেছেন। সুজিত এখনও বিধাননগরের বিধায়ক। আর সব্যসাচী কিছু দিন আগে পর্যন্ত ছিলেন ওই বিধাননগরেই তৃণমূল পুরসভার মেয়র। খাতায়কলমে তিনি এখনও রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক। কিন্তু একই দলে থাকাকালীনও সুজিত-সব্যসাচী সম্পর্ক কতটা ‘মধুর’ ছিল, তা সল্টলেক, রাজারহাট, নিউটাউন জুড়ে সুবিদিত। বিধননগরের মেয়র পদ নিয়েই যত ‘কাণ্ড’। ওই পদ পাওয়ার বাসনা যে সুজিতেরও ছিল, সে কথা কারও অজানা নয়। কিন্তু ২০১৫-র নির্বাচনের পরে সুজিত, কৃষ্ণা চক্রবর্তীদের টেক্কা দিয়ে সব্যসাচীই আদায় করে নেন মেয়র পদ। এর পরে ক্রমশ আরও বেড়েছিল দলের অন্দরের টানাপড়েন। কৃষ্ণা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সব্যসাচী আর সুজিতের লড়াই মাঝে মধ্যেই ‘অতিষ্ঠ’ করে তোলে তৃণমূল নেতৃত্বকে।

তবে সব্যসাচী যে আর বেশি দিন দলে নেই এটা স্পষ্ট হয়ে যায় গত লোকসভা নির্বাচনের আগেই। মুকুল রায় তাঁর বাড়িতে ‘লুচি আলুরদম’ খেতে যাওয়ার দিন। শুধু খাওয়া নয়, দীর্ঘ সময় রাজনৈতিক আলোচনাও হয় দু’জনের। ওঁরা অবশ্য বলেছিলেন, নিছক আড্ডা হয়েছিল। সঙ্গে ‘রসনাতৃপ্তি’। মুকুল বলেছিলেন, ‘‘সব্যসাচীর সঙ্গে দাদা-ভাইয়ের সম্পর্ক। লুচি-আলুরদম খেয়ে গেলাম। খিদে পেলে মাঝেমাঝেই আসি। ওর স্ত্রী খুব ভাল রান্না করেন।’’ কী আলোচনা হল প্রশ্নে মুকুল বলেছিলেন, ‘‘ক্রিকেটের অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ— আলোচনা তো কত কিছু নিয়েই হতে পারে!’’ আর সব্যসাচী দাবি করেছিলেন, এই ‘দেখা হওয়া’র মধ্যে অন্য কোনও ‘গন্ধ’ নেই।

তবে সেই ‘গন্ধ’ টের পেয়ে যায় তৃণমূল। সব্যসাচী যে জোড়াফুল ফেলে পদ্মফুল হাতে তুলে নিতে চলেছেন তা বুঝে বিধাননগরের মেয়র পদ থেকে তাঁকে সরানোর তোড়জোড় শুরু করে তৃণমূল। সব্যসাচীও ইস্তফা দিয়ে দেন। তার পরে অমিত শাহর হাত ধরে বিজেপি-তে। বিজেপি সূত্রে খবর, শুরু থেকেই সব্যসাচীর দাবি ছিল, তাঁকে বিধাননগর আসন থেকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী করতে হবে। একই সঙ্গে রাজারহাট-নিউটাউন কেন্দ্র তাঁর কাছের কাউকে দিতে হবে। এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে সেটাই মেনে নিয়েছে বিজেপি। তাঁর অনুগামীরা ইতিমধ্যেই ‘দাদা’-র হয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। তবে সব্যসাচী বুধবার আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, ‘‘বিজেপি একটা সংগঠন নির্ভর দল। ব্যক্তির ইচ্ছা কিছু নয়। দল আমাকে কোনও নির্দেশ দেয়নি বা কোনও মতামত জানতেও চায়নি। যা বলবে তাই করব। যেখানে লড়তে বলব সেখানেই লড়ব।’’

সব্যসাচী এমন বললেও নীলবাড়ির লড়াইয়ের জন্য তাঁর অনুগামীরা পূর্ণ উদ্যমে ময়দানে নেমে পড়েছেন। তৃণমূল প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করলেও সুজিতকে প্রতিপক্ষ ধরেই প্রচার পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলেছেন তাঁরা। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে বিধাননগর কেন্দ্রে অনেকটাই এগিয়ে বিজেপি। বারাসত লোকসভা আসন তৃণমূল জিতলেও বিধাননগর বিধানসভা এলাকায় ভোট পেয়েছিল ৫৮ হাজার ৯৫৬টি ভোট। অন্য দিকে বিজেপি পায় ৭৭ হাজার ৮৭২টি ভোট। সেই হিসেবে বিধাননগরকে ‘সুবিধাজনক’ আসন বলেই মনে করছে বিজেপি। পদ্মশিবির চায়, বিধাননগরে সব্যাসাচী টিকিট পেলেও দলের কাছে কঠিন আসন রাজারহাট-নিউটাউনের দায়িত্বও তাঁকে নিতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Saltlake Sujit Basu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy