গত ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রাম আসনে প্রার্থী হিসেবে মমতা প্রকাশ্য সভা থেকে নিজের নাম কার্যত ঘোষণাই করে দিয়েছিলেন। —নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট পরিচালনার জন্য নন্দীগ্রামে দু’টি দফতর খুলছে তৃণমূল। নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকে খোলা হচ্ছে ওই দু’টি অফিস। ২০০৯ সালের এলাকা পুনর্বিন্যাসের পর নন্দীগ্রাম-১ এবং ২ নম্বর ব্লক নিয়ে তৈরি হয়েছে নন্দীগ্রাম বিধানসভা। আর সেই ২০০৯ সাল থেকেই নন্দীগ্রামে ভোট পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্বে থাকতেন শুভেন্দু অধিকারী। ফলে ওই বিধানসভা এলাকা তাঁর হাতের তালুর মতো চেনা। কিন্তু সেই শুভেন্দু এখন বিজেপি শিবিরে। ঘটনাপ্রবাহ যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে ওই আসনে সম্ভবত শুভেন্দুই বিজেপি-র প্রার্থী হবেন। ফলে নন্দীগ্রামে সরাসরি মমতা-শুভেন্দু লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা। ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই ভোটের কাজ নিবিড় ভাবে পরিচালনার জন্য দু’টি ব্লকে দু’টি পৃথক অফিস তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা প্রকাশিত হওয়া কথা আগামী শুক্রবার। তা নিয়ে জল্পনাও চূড়ান্ত। কিন্তু একটি কেন্দ্রের প্রার্থী নিয়ে কোনও সংশয় কার্যত নেই। কারণ, গত ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রাম আসনে প্রার্থী হিসেবে মমতা প্রকাশ্য সভা থেকে নিজের নাম কার্যত ঘোষণাই করে দিয়েছিলেন। ওইদিন নন্দীগ্রামের তেখালি মাঠের জনসভা শেষ হতেই ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছিল। গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে সব রাজনৈতিক শিবিরে। কিন্তু নন্দীগ্রাম নিয়ে তৃণমূলে প্রস্তুতি একটু বেশিই। কারণ, সেখানে প্রার্থী খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তাই দলের রাজ্য স্তরের নেতারা প্রায় নিয়ম করে নন্দীগ্রামে যাতায়াত শুরু করেছেন। সেই ঘটনাপ্রবাহ মেনেই ভোট পরিচালনার জন্য একজো়ড়া অফিস তৈরি হচ্ছে নন্দীগ্রামে।
নন্দীগ্রামে জোড়া অফিস খোলা প্রসঙ্গে তৃণমূলের নেতারা জানাচ্ছেন, নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকের রাজনৈতিক ও সামাজিক চরিত্র ভিন্ন। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক যেমন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত, তেমনই আবার নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে সংখ্যাগুরুদের প্রাধান্য। তাই পৃথক দু’টি কার্যালয় থেকে পৃথক কৌশল এবং রণনীতি নিয়ে প্রচার-সহ যাবতীয় কাজকর্ম সারবেন নেতা-কর্মীরা। প্রার্থী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার নন্দীগ্রামে গিয়ে নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে এসেছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। তৃণমূল সূত্রে খবর, নন্দীগ্রামে ভোট পরিচালনার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে। এছাড়াও নন্দীগ্রামে গিয়ে নির্বাচনের কাজকর্মে সহায়তা করতে বলা হয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনকে। উল্লেখ্য, দোলা নিজে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় অনেকবারই সেখানে গিয়েছেন। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সঙ্গে তিনি নিজেও প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন।
মমতার প্রতিপক্ষ হিসেবে শুভেন্দুকে ধরেই এগোচ্ছে তৃণমূল। তাই নন্দীগ্রাম বিধানসভার প্রতিটি কোণায় পৌঁছে যেতে চাইছে শাসকদল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনীতিতে কাঁথির অধিকারী পরিবারের প্রভাব প্রকাশ্যে অস্বীকার করলেও তাকে হাল্কা বা লঘু ভাবে নিচ্ছেন না তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব। বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশিই অধিকারীদের ‘দুর্গ’ ভেঙে দেওয়াটাও বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রের কথায়, ‘‘নন্দীগ্রামে প্রচারের ক্ষেত্রে দু’টি ব্লককেই আমরা সমান গুরুত্ব দিচ্ছি। দল এ বিষয়ে আমাদের নির্দিষ্ট গাইডলাইন দিয়েছে। সেই নির্দেশ মতোই কাজ হচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীকে তৃতীয়বারের জন্য নবান্নে পৌঁছে দেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy