সবংয়ে বিজেপি নেতার বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। —নিজস্ব চিত্র।
দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর, বোমাবাজির ঘটনায় উত্তপ্ত হল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং এবং দাসপুর। জখম ১ বিজেপি কর্মী। তৃণমূল প্রার্থী মানস ভুঁইয়ার অনুগামীরাই মঙ্গলবার সবংয়ের একাধিক জায়গায় হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি-র। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে মানসের দাবি, আদি ও নব্য বিজেপি-র গন্ডগোলের জেরেই বোমাবাজি-ভাঙচুর হয়েছে। এই হামলার ঘটনায় প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সবং এবং দাসপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি। পুলিশ জানিয়েছে, বিজেপি-র অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
বুধবার সবংয়ের বিজেপি প্রার্থী অমূল্য মাইতির অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত থেকেই সবংয়ের বিরখোয়া, কলন্দা, খরিকা এবং চাউলকুরি এলাকায় বোমাবাজি থেকে শুরু করা থেকে বিজেপি-র লোকজনের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সবংয়ে বোমায় ঘায়ে আহত হয়েছেন এক বিজেপি কর্মী।
বিজেপি-র অভিযোগ, সবং থানার ৬ নম্বর অঞ্চলের চাউলকুরি কজলিভেড়ি ১০৫ নম্বর বুথ এলাকায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য দেবজ্যোতির বাড়িতে মঙ্গলবার রাতভর হামলা চালায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। তাঁর বাড়ির মহিলাদেরও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এক মহিলার কথায়, “ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য আমাদের হুমকি দেয় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। বলে,ভোট দিতে গেলে বস্তাবন্দি করে রাখা হবে বলে। তৃণমূলের শ্যাম কুইল্যার লোকেরা আমাদের লাশ ফেলে দেবে বলেছে।” এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। আমরা শান্তিতে ভোট দিতে চাই।”
এই হামলার পর বিজেপি-র ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তন্ময় দাস বলেন, “ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি হুমকি দেওয়া হয়েছে।” যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের ব্লক সভাপতি অমল পণ্ডা বলেন, “বিজেপি মিথ্যে অভিযোগ করছে। আসলে বেশ কয়েকটি গ্রামে হনুমান তাণ্ডব চালিয়েছে। আমার বাড়িতেও অ্যাসবেস্টসের চাল ভেঙে দিয়ে গিয়েছে হনুমান।”
তবে অমূল্যর অভিযোগ, “মানস ভুঁইয়ার সাগরেদরাই এই হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ বিরখোয়া এবং কলন্দায় ৩টে বাড়িতে ভাঙচুর করেছে। শ্যাম কুইল্যা, অনন্ত তুঙ, রঞ্জন ঘড়াইদের নেতৃত্বে মুহুর্মুহু বোমা ফাটিয়েছে। এরা দীর্ঘদিন এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়ে এসেছে। প্রায় একই সময়ে আমাদের দলের পঞ্চায়েত সদস্য দেবজ্যোতি পালের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে। খরিকায় স্বপন জানা বাড়িতেও বোমাবাজি করেছে।”
যদিও অমূল্যর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মানস। তাঁর দাবি, “আদি ও নব্য বিজেপির মধ্যে গন্ডগোল রয়েছে। তার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের দিক থেকে বহিরাগতদের নিয়ে এসেছে বিজেপি। পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশনকে বলেছি যাতে সবংয়ের সীমানায় পূর্ব মেদিনীপুরে ময়না এবং ভগবানপুরের দিকে সিল দেওয়া হয়।” মানসের আরও দাবি, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করছে বিজেপি। বার বার দোষারোপ করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বিজেপি দুবরাজপুর এবং মেটাপুকুর এলাকায় প্রায় ২০০ বোমা ফাটিয়েছে বিজেপি।”
সবংয়ের মতোই ভোটের আগের দিন দাসপুরে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বুধবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার রাজানগরের রাসতলায় রাস্তার ধারে একটি পলিথিনে দু’টি তাজা বোমা দেখতে পান স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দাসপুর থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বোমা দু’টি উদ্ধার করে তাতে জল ঢেলে নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করে। ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দাসপুর থানার পুলিশ।
১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার ভোটের সবং, দাসপুর মিলিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৯টি বিধানসভা আসনে ভোট। তার আগেই বোমাবাজি, ভাঙচুরের ঘটনায় ভোটে অশান্তি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। দাসপুরে বোমা উদ্ধারকে ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা। তৃণমূলের দাবি, শান্ত এলাকা অশান্ত করতেই চক্রান্ত করে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। অপর দিকে, বিজেপি-র অভিযোগ, ভোটে হেরে যাবে বুঝে গিয়েই এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy