বাবার রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকা মন থেকে কিছুতেই মানতে পারছেন না শোভনপুত্র ঋষি। ফাইল চিত্র।
তৃণমূল আগেই ছেড়েছিলেন। বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁকে পছন্দ মতো কেন্দ্রে প্রার্থী না করায় সদ্য বিজেপি থেকেও পদত্যাগ করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর নীলবাড়ি দখলের লড়াইতেও যে তিনি নিষ্ক্রিয় থাকবেন, তা ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাবার রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকা মন থেকে কিছুতেই মানতে পারছেন না শোভনপুত্র ঋষি। তাঁর কথায়, ‘‘ছোটবেলা থেকে বাবাকে রাজনীতির ময়দানেই দেখেছি। এটাই তাঁর কর্মক্ষেত্র। তাই আমি চাই বাবা রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হোন।’’
বিদেশ থেকে চলচ্চিত্র বিষয়ে পড়াশুনো করেছেন বছর ২৫-এর ঋষি। শোভন বেহালা পর্ণশ্রী এলাকার গোপাল মাস্টার লেনের বাড়ি ছেড়েছেন প্রায় সাড়ে তিন বছর হল। সেই থেকেই সাক্ষাত্ নেই পিতা-পুত্রের। কিন্তু বাবার রাজনীতি থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাওয়াকে মাঝে মাঝে বিশ্বাসই করে উঠতে পারেন না পুত্র। তাঁর কথায়, ‘‘বাবা বাংলার অন্যতম সেরা রাজনীতিকদের মধ্যেই একজন ছিলেন। নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতার জন্যই এত উচুঁতে পৌঁচ্ছেছিলেন। বাবাকে আবার রাজনীতির ময়দানে দেখতে চাই। তা যে কোনও শিবিরেই হোক না কেন।’’
১৯৮৫ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রথমবার কাউন্সিলর হন শোভন। আর ঋষির জন্ম ১৯৯৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর। সেই সময় শোভন ছিলেন কলকাতা পুর নিগমের বোরো-১৪-র চেয়ারম্যান। ধীরে ধীরে ঋষির বয়স যত বেড়েছে, ততই রাজনৈতিক উচ্চতাও বেড়েছিল শোভনের। কিন্তু সেই উচ্চতা স্বেচ্ছায় ছেড়েছেন একদা মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহধন্য কানন। বাবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদানকেও রাজনীতির পাশাখেলা হিসেবেই বিবেচনা করছেন শোভন তনয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে যে কেউ যে কোনও রাজনৈতিক দল করতেই পারেন। তাই বাবা যদি বিজেপি করেন, তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই। আমি চাই, তিনি আবার সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে আসুন। আমাদের বিরুদ্ধে হলেও কোনও অসুবিধা নেই। গণতন্ত্রে মতাদর্শের পার্থক্য তো থাকতেই পারে।’’
শোভনের অনুপস্থিতিতে তাঁর ছেড়ে যাওয়া রাজনৈতিক দায়িত্বের একাংশ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। তাই বিদেশ থেকে লেখাপড়া শেষ করে ফিরে এসে মাকে সাহায্য করছেন ঋষি। বিধানসভা ভোটে বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন রত্না। ১০ এপ্রিল ভোট বেহালা পূর্বে । মাকে সুরাহা দিতে একঝাঁক দায়িত্ব স্বেচ্ছায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন তিনি। মা নেটমাধ্যমে অত সড়গড় নন। অথচ নেটমাধ্যমই এ যুগের সবচেয়ে বড় প্রচারের মঞ্চ। তাই মায়ের নেটমাধ্যমে প্রচারের যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন ঋষি। ভোট পরিচালনায় অর্থ খরচ একটি বড় মাথাব্যথার কারণ হয় প্রার্থীর কাছে। মায়ের সেই দুশ্চিন্তার ভারও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও মায়ের প্রচারে কোন কোন সেলিব্রিটিদের আনতে হবে, সেই সমস্ত ব্যবস্থাপনার দায়িত্বও নিজের হাতেই রেখেছেন ঋষি। আর পিতার অনুপস্থিতিতে ছেলে এমন দায়িত্ববান হয়ে ওঠায় মা রত্নার চোখের কোনে অশ্রুর কণাবিন্দু এলেও, বলছেন, ‘‘ছেলে আমার বড় হয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy