কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
বিদায়ী খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ আনল বিজেপি। রেশনের চাল ও ত্রিপলে ব্যাপক দুর্নীতির সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় যুক্ত বলে গেরুয়া শিবিরের দাবি। শুধু জ্যোতিপ্রিয় নন, তাঁর মেয়ের বিরুদ্ধেও আর্থিক দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ তোলা হয়। অবশ্য জ্যোতিপ্রিয় এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
রবিবার কলকাতার এক হোটেলে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘আমরা বার বার বলে এসেছি তৃণমূল সরকার এবং তার মন্ত্রীরা বিভিন্ন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত। তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি। এখানে রেশনে ব্যাপক দুর্নীতি করা হয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা করে। আমাদের হাতে ৫ বছরের দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। তবে তার আগে থেকেই এই দুর্নীতি চলে আসছে।’’
জ্যোতিপ্রিয়র বিরুদ্ধে রেশনে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কৈলাসের দাবি, "মোদীজি চাল, ত্রিপল পাঠালেও তা বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছয়নি। কারণ তৃণমূলের মন্ত্রী সেই দুর্নীতিতে জড়িত। সে জন্য আমরা বার বার বলতাম চাল চোর, ত্রিপল চোর সরকার।" আর্থিক দুর্নীতির পিছনে জ্যোতিপ্রিয়র কমিশনের কাছে দেওয়া হলফনামার তথ্য তুলে ধরেছেন কৈলাস। বলেন, ‘‘২০০৬ সালে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় মন্ত্রীর সম্পত্তি ছিল মাত্র ৫ লক্ষ টাকার। ২০১১ সালে তা বেড়ে হয় ৮৫ লক্ষ টাকা। ২০১৬ আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা। আর ২০২১ সালে সম্পত্তির পরিমাণ হয় ৬ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। এর বাইরেও তাঁর অনেক সম্পত্তি রয়েছে। এমনকি, বাংলাদেশেও সম্পত্তি রয়েছে বলে জানতে পেরেছি।’’ জ্যোতিপ্রিয়র সঙ্গে এই দুর্নীতিতে মহেন্দ্র আগরওয়াল, কালিদাস সাহা এবং মতিবুর রহমান নামে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী যুক্ত বলে জানান কৈলাস।
প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি যোজনায় রাজ্য সরকার অংশগ্রহণ করেনি। অংশগ্রহণ না করলেও কৃষকদের তালিকা রাজ্যের কাছে চেয়েছিল কেন্দ্র। সেই তালিকা কেন্দ্রকে পাঠানো হয়নি বলে কৈলাসের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ফসল কেনার কথা বললেও এ রাজ্যে ধান কেনার ক্ষেত্রে সে নিয়ম মানা হয়নি। তথ্য জানার অধিকার আইনে আমরা সরকার কত জনের কাছ থেকে ধান কিনেছে তার তালিকা চেয়েছিলাম। দেখা গিয়েছে বিভিন্ন সংস্থা মারফত নগদে ধান কেনা হয়েছে। কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা চেকের মাধ্যমে হয়নি। অর্থাৎ রাজ্যের হাতে কৃষকদের কোনও তালিকায় ছিল না। এই জন্য তারা কেন্দ্রকে তা দিতে পারেনি। ফলে কৃষকরা তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।’’
শুধু বিদায়ী মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় নন, তাঁর মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিকের বিরুদ্ধেও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন কৈলাস। বলেন, ‘‘নোট বাতিলের সময় ওঁর মেয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা জমা হয়। টিউশন পড়িয়ে ওই টাকা এসেছিল বলে তিনি দাবি করেন।’’ বিজেপি ক্ষমতায় এলে এসব দুর্নীতির তদন্ত হবে বলে জানান কৈলাস।
বিদায়ী মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। ক্ষমতা থাকলে প্রমাণ করে দেখাক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy