শীর্ষ আদালতের রায়ে ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে জোরদার। জেলায় আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেট চত্বর। বিক্রেতাদের দাবি, নববর্ষের সময়ে ওই এলাকায় প্রতিদিন শিক্ষক-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের জেরে কিছুটা মার খাচ্ছে নববর্ষের বাজার। প্রতিদিনই রাস্তা অবরোধ হচ্ছে। তাই ক্রেতারা কার্জন গেট চত্বর এড়িয়ে যাচ্ছেন। ফলে চা বিক্রেতা থেকে শুরু করে বস্ত্র ব্যবসায়ী, সবাই বলছেন, বাজার এ বার খুব খারাপ।
কার্জন গেট চত্বর এবং সংলগ্ন বিসি রোড, কাছারি রোডের ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘিরে কখনও রণক্ষেত্রের আকার নিচ্ছে কার্জন গেট চত্বর। জিটি রোড অবরোধ করা হচ্ছে। কার্জন গেট অবরোধ হয়েছে। আন্দোলনে নেমেছে এসএফআই, বিজেপি এবং কংগ্রেস। তৃণমূলের উদ্যোগে প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। বামেরা পুরসভা অভিযান করেছে। সেখানেও চাকরিহারাদের কথা উঠেছে। বিজেপির মিছিলে তৃণমূলের কুশপুতুল দাহের চেষ্টা আটকাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অশান্তি হয় বিজেপি কর্মীদের। এখন প্রায় রোজই আন্দোলনের জেরে সরগরম থাকছে কার্জন গেট এলাকা।
বিক্রেতাদের দাবি, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের অনেকে চাকরি হারানোয় তাঁদের পরিবার, পরিজনেরা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। কাছারি রোডের চা ব্যবসায়ী সুকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, ফুটপাতের বস্ত্র বিক্রেতা তপন দাস, ফল ব্যবসায়ী শেখ লালনরা জানান, পয়লা বৈশাখের আগে বাজারে ভাল ভিড় হয়। কিন্তু সকালে দোকান খোলার পরে
ইদানীং তাঁরা দেখছেন, বেলা বাড়লেই মিটিং, মিছিল পথ অবরোধ শুরু হচ্ছে। বিকেলের দিকে বাজার বেশি খারাপ যাচ্ছে।
ঠান্ডা পানীয়ের ব্যবসায়ী ধণুক দত্ত, পোশাকের দোকানের মালিক শুভাশিস কংসবণিকের দাবি, গত এক সপ্তাহ ধরে কার্জন গেট চত্বর পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। যখন তখন অবরোধ হচ্ছে। মানুষ তাই এ দিকে আসার ঝুঁকি নিচ্ছেন না। ঠিক যেমন হয়েছিল আরজি কর-কাণ্ডের সময়ে। গত বছর পুজোর আগে আর জি-কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনের জেরে ব্যবসার ক্ষতি হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের দাবি, তাঁরা আন্দোলনের বিরোধিতা করছেন না। তবে যে কোনও আন্দোলনের জন্য কার্জন গেট চত্বরকে বেছে নেওয়ার কারণে তাঁদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও সমস্যায় পড়েন। তাই এই বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)