Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

জামিন পেলেন আনোয়ার, তবে পারদ নেমেছে এক দিনেই

এক দিনেই মেজাজ বদল! বৃহস্পতিবার হাঁকডাক করছিলেন। শেষ পর্যন্ত আর হম্বিতম্বি সামাল দিতে পারেননি কাশীপুরের তৃণমূল নেতা আনোয়ার খান। সংবাদমাধ্যমের সামনেই শাগরেদদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘‘কমিশনকে মুহ্ মে জুতা মারো।’’

আদালত চত্বরে আনোয়ার খান। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

আদালত চত্বরে আনোয়ার খান। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৬ ০১:২১
Share: Save:

এক দিনেই মেজাজ বদল!

বৃহস্পতিবার হাঁকডাক করছিলেন। শেষ পর্যন্ত আর হম্বিতম্বি সামাল দিতে পারেননি কাশীপুরের তৃণমূল নেতা আনোয়ার খান। সংবাদমাধ্যমের সামনেই শাগরেদদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘‘কমিশনকে মুহ্ মে জুতা মারো।’’

খবর দ্রুত চাউর হয়। নির্বাচন কমিশন তাঁকে শায়েস্তা করতে পারে আঁচ করে এলাকা ছাড়লেও শেষ পর্যন্ত পুলিশের জাল এড়াতে পারেননি তিনি। লালবাজারের খবর, জামিনযোগ্য ধারা সত্ত্বেও রাতটা আনোয়ারকে কাটাতে হয়েছে কাশীপুর থানার লক-আপেই!

শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতের এজলাসে মাথা নিচু করে বসে ছিলেন তিনি। ৭০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেতেই তড়িঘড়ি আদালত ছাড়লেন। কমিশনে হুমকি দেওয়া ও তার জেরে গ্রেফতারির প্রসঙ্গ তুলতেই বললেন, ‘‘শরীর খারাপ।’’ তার পর নিচু গলায় বললেন, ‘‘সত্যের জয় হবেই।’’

গোষ্ঠীকোন্দল বা এলাকা দখল, কাশীপুর আনোয়ারকে চেনে ‘দাদা’ হিসেবেই। লোকে বলে, তাঁর নির্দেশ ছাড়া উদ্যানবাটী থেকে বিবিবাজার পর্যন্ত গাছের পাতাও নাকি নড়ে না! বৃহস্পতিবারের ভোটেও যে তাঁর বাহিনী কাজ করেছে, তা প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন আনোয়ার। এমন এক জন দাপুটে নেতা কী ভাবে এই বেফাঁস মন্তব্য করলেন?

আনোয়ারের অনুগামী এক যুবক বললেন, ‘‘ক্যামেরা চলছে, দাদা খেয়াল করেননি। না হলে ও সব বলতেন না।’’ সিঁথির এক তৃণমূল নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘ও ফোনে ব্যক্তিগত কথা বলছিল। সংবাদমাধ্যম ফাঁস করেছে।’’ কিন্তু ক্যামেরার সামনে আনোয়ার এমন দরাজ গলায় ব্যক্তিগত আলাপচারিতা সারলেন কেন, তার ব্যাখ্যা ওই নেতা দিতে পারেননি। তবে কাশীপুর-বেলগাছিয়ার তৃণমূল প্রার্থী মালা সাহার অবশ্য সাফ কথা, ‘‘এমন মন্তব্য সমর্থন করি না।’’

আনোয়ারের এই মন্তব্যের উদ্দেশ্য নিয়ে যেমন ধন্দ আছে, তেমনই ধন্দ ভোটের দিন আনোয়ার বাহিনীর কাজ নিয়েও। কারণ এলাকার রাজনীতিতে তিনি স্থানীয় বিধায়ক মালা সাহার বিরোধী বলেই পরিচিত। মালাদেবীর অনুগামী স্বপন চক্রবর্তীর সঙ্গেও পুরনো গোলমাল। অভিযোগ, পুরভোটে স্বপনের দল আনোয়ারের এলাকায় হামলা চালায়। আনোয়ার ঘনিষ্ঠ অনেকেই বলেন, তখন দলে ন্যায্য বিচার পাননি তিনি। এ বার ভোটে তাই আনোয়ারের দলবল এলাকা থেকে দলকে কতটা ‘লিড’ দেবে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। বস্তুত, ভোটের দিন সিপিএমের কাছ থেকে স্বপন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ মিললেও আনোয়ারের বিরুদ্ধে কার্যত কোনও অভিযোগই ওঠেনি।

আনোয়ার দলবিরোধী কাজ করবে, মানতে নারাজ কাশীপুর-বেলগাছিয়া তৃণমূলের আর একটি অংশ। তারা বলছেন, পরিস্থিতি যা তাতে জোড়াফুল চিহ্নকে টিঁকিয়ে রাখাটাই আসল। গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবে না। এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘আনোয়ারকে নিয়ে যদি আশঙ্কাই থাকত, তা হলে ভোটের আগে গ্রেফতার হওয়ার পরে ও জামিন পেত না।’’ মালাদেবীও গোষ্ঠীকোন্দলের কথা পরোক্ষে মেনে নিলেও ভোটে তার প্রভাব মেনে নিতে নারাজ। বলছেন, ‘‘এখন আমার-তোমার বলে কিছু নেই। ওদের দু’জনের গোলমাল ছিল। তা মিটে গিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anwar Khan Assembly Election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy