এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদের শেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, লোকসভা ভোটে বিজেপি একাই ৩৭০টি আসন পাবে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) পাবে ৪০০টির বেশি আসন। ওই কথা বলে কি মোদী নিজের উপর এবং দলের উপর চাপ তৈরি করে দেননি? প্রশ্ন শুনে, মোদীর বলা সেই ৩৭০ এবং ৪০০-র ব্যাখ্যা দিলেন মন্ত্রিসভায় তাঁরই সতীর্থ তথা বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
মঙ্গলবার কলকাতায় একটি ঘরোয়া আলোচনায় জয়শঙ্কর ৩৭০ আসন পাওয়ার দাবি নিয়ে বলেন, ‘‘ক্যাডারভিত্তিক দলে কর্মী, সংগঠকদের সামনে লক্ষ্য বেঁধে দিতে হয়। প্রধানমন্ত্রী সেই কাজটাই করেছিলেন।’’ বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয় এই কারণে, যাতে তা ছোঁয়ার জন্য সামগ্রিক ভাবে সংগঠন মাঠে নামে, ভোটে অংশগ্রহণ করে। গোটা সাংগঠনিক পরিকাঠামোয় যাতে কোনও জড়তা না থাকে।’’
জয়শঙ্করকে প্রশ্ন করা হয়, সচিন তেন্ডুলকর যদি প্রতি পাকিস্তান ম্যাচের আগেই বলেন সেঞ্চুরি করবেন, তা হলে কি তা নিজের ঘাড়ে বাড়তি চাপ নিয়ে নেওয়া নয়? মোদীর সতীর্থ জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টিকে ঠিক উল্টো দিক থেকে দেখতে চাইছেন। অর্থাৎ, তিনি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে সমগ্র বিষয়টিকে দেখতে চাইছেন। অর্ধেক গ্লাস জলকে তিনি অর্ধেক খালি না-বলে অর্ধেক ভর্তি হিসেবেই দেখাতে এবং দেখতে চান।
মোদী ৩৭০-এর কথা বলার আগে গত নভেম্বরে বাংলায় এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বঙ্গ বিজেপিকে ৩৫টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন। যদিও সেই শাহ ভোটের মধ্যে বাংলায় এসে ৩৫ থেকে কমিয়ে ৩০টি আসন জেতানোর কথা বলছেন। যাকে তৃণমূল বলেছে, ‘ভোটের আগেই হেরে যাওয়া’। মোদীর ৪০০ পারের দাবি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘ওরা ২০০ পেরোবে না। ৩০০ তো দূরের কথা।’’
গত লোকসভা ভোটে বিজেপি একাই ৩০৩টি আসন পেয়েছিল। তার পর থেকে দেখা যায়, এনডিএ বিষয়টিই ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গত বছর বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে ‘ইন্ডিয়া’ গড়ার পরেই এনডিএ নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করেন মোদী, অমিত শাহেরা। পাঁচ বছর আগের লোকসভা ভোটে দুগ্ধবলয়ের রাজ্যগুলিতে সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছেছিল পদ্মশিবির। সেখানে নতুন করে আসন বৃদ্ধি করার জায়গা আর নেই। পূর্ব ভারতে বাংলা এবং ওড়িশা ছাড়া সে ভাবে কোনও রাজ্যে পদ্মের আসন বৃদ্ধি করার সুযোগ নেই। যে সব জায়গায় বিজেপি প্রায় সব আসন জিতেছিল, সেখানেও পাঁচ বছরে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলেছে। বিজেপিকে আসন বৃদ্ধি করতে হলে দক্ষিণ ভারতে তা করতে হবে। যার লক্ষ্যে এক বছর আগে থেকেই পদক্ষেপ করা শুরু করেছিলেন মোদী-শাহেরা। এ বারে যত বার তামিলনাড়ু, তেলঙ্গনায় প্রচারে গিয়েছেন মোদী, অন্য বার সেই ‘আগ্রাসী’ মনোভাব দেখা যায়নি। মোদীর ভবিষ্যদ্বাণী মিলল কি না, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে ৪ জুন দুপুরের মধ্যে। তবে জয়শঙ্কর মনে করেন, ভোটযুদ্ধে লক্ষ্যমাত্রা লাগেই। প্রধানমন্ত্রী সেটাই করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy