প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার অরুণ গয়াল (বাঁ দিকে), মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক রাজীব কুমার (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ভোটের মুখে আচমকাই ইস্তফা দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনার অরুণ গয়াল। তাঁর ইস্তফার কারণ ঘিরে জল্পনা দানা বেঁধেছিল। লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার মধ্যেই তা নিয়ে প্রথম বার মুখ খুললেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) রাজীব কুমার। সাংবাদিক বৈঠকে সিইসির দাবি, তাঁর পদত্যাগের নেপথ্যে ব্যক্তিগত কোনও কারণ থাকলে তাকে আমাদের অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।
গত ৯ মার্চ নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন অরুণ গয়াল। অথচ, পঞ্জাব ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত আইএএসের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৭ সালে। কী এমন ঘটল যে, কমিশনের ফুল বেঞ্চের বঙ্গ সফর শেষ হতে না হতেই ইস্তফা দিতে হল অরুণকে? তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়িয়েছিল। বাংলা নিয়ে কমিশনের ‘বৈমাতৃসুলভ’ মনোভাবের আতিশয্যে বিরক্ত হয়েই অরুণ পদত্যাগ করেছেন বলে সরাসরি দাবি তুলেছিল তৃণমূল। ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে তৃণমূলের ‘জনগর্জন সভা’য় মঞ্চে উঠেই অরুণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীদের দাবি ছিল, সিইসির সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণেই পদ ছাড়তে হয়েছে অরুণকে। কিন্তু কেন অরুণ পদ ছাড়লেন, তা নিয়ে কমিশনের তরফে স্পষ্ট কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। সেই জবাব এল ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার দিন।
শনিবার লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করার সময় থেকেই সিইসি রাজীবের কাছে এ নিয়ে প্রশ্ন আসতে থাকে। তার পর তিনি মুখ খোলেন। রাজীব তাঁকে নিয়ে বলেন, ‘‘পদত্যাগের নেপথ্যে যদি কোনও ব্যক্তিগত কারণ থাকে, তা হলে তাকে আমাদের সম্মান জানাতেই হবে।’’ অরুণকে ‘সম্মাননীয় সদস্য’ হিসাবে উল্লেখ করে রাজীব আরও বলেন, ‘‘ভারতের নির্বাচন কমিশনে সর্বদাই ভিন্নমতের পরিসর থাকবে।’’
২০২২ সালের নভেম্বর মাসে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব নেন অরুণ। ঘটনাচক্রে, তার ঠিক আগের দিনই তিনি আইএএস আধিকারিক হিসাবে স্বেচ্ছাবসর নেন। তাঁর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে খোদ সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ‘‘এত তাড়াহুড়োর কী আছে!’’ কিন্তু অরুণের নিয়োগ আটকায়নি। সব ঠিক চললে, আগামী বছর রাজীবের অবসরের পর দেশের পরবর্তী মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হতে পারতেন অরুণ। কিন্তু ভোটঘোষণার ঠিক আগে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ইস্তফাপত্র পাঠান। সূত্রের খবর, নিজের ইস্তফাপত্র তিনি সিইসি রাজীবের কাছেও পাঠাননি। এর পরেই অরুণের সঙ্গে রাজীবের মতপার্থক্যের বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে জল্পনা তৈরি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy