Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

প্রতীক ‘চুরির’ খেসারত অজিত-শিন্দে-বিজেপির

এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের নির্বাচনী প্রতীক ঘড়ি এবং উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার প্রতীক তির-ধনুক ‘চুরি’ করেছেন যথাক্রমে অজিত পওয়ার এবং একনাথ শিন্দে— এই অভিযোগের তরঙ্গ ছিল মহারাষ্ট্রের প্রায় সর্বত্র।

উদ্ধব ঠাকরে-শরদ পওয়ার।

উদ্ধব ঠাকরে-শরদ পওয়ার। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪ ০৭:১৯
Share: Save:

‘চুরি’র সাজা দিলেন মহারাষ্ট্রবাসী। আজ মহারাষ্ট্রে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরে রাজ্যের স্থানীয় রাজনৈতিক শিবির এমনটাই বলছে।

এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের নির্বাচনী প্রতীক ঘড়ি এবং উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার প্রতীক তির-ধনুক ‘চুরি’ করেছেন যথাক্রমে অজিত পওয়ার এবং একনাথ শিন্দে— এই অভিযোগের তরঙ্গ ছিল মহারাষ্ট্রের প্রায় সর্বত্র। আজ আসনের হিসাব বুঝিয়ে দিচ্ছে, উদ্ধব এবং শরদের প্রতি সহানুভূতি আছড়ে পড়েছে ভোটযন্ত্রে। গত বারের লোকসভায় মহারাষ্ট্রে এনডিএ-র চেহারা ছিল ভিন্ন। উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার সঙ্গে সে বার জোট গড়ে লড়ে এনডিএ মহারাষ্ট্রের মোট ৪৮টি আসনের মধ্যে পেয়েছিল ৪১টি আসন। কংগ্রেসের ভাগ্যে জুটেছিল মাত্র ১টি আসন। এ বার যে রাজ্যগুলিতে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি তথা এনডিএ, তার মধ্যে প্রথম সারিতে রইল মহারাষ্ট্র। এখনও পর্যন্ত হওয়া গণনা অনুসারে, এই রাজ্যে মহাবিকাশ আগাড়ি তথা ইন্ডিয়া মঞ্চ পেয়েছে ২৯টি আসন। তার মধ্যে কংগ্রেস ১২টি, শরদ পওয়ারের এনসিপি ৭টি এবং উদ্ধবের শিবসেনা ১০টি আসন পেয়েছে। অন্য দিকে বিজেপির নেতৃত্বাধীন মহাদ্যুতি জোট (বিজেপি, অজিত পওয়ারপন্থী এনসিপি, একনাথ শিন্দেপন্থী শিবসেনা) পেয়েছে ১৮টি আসন, গত বার যে সংখ্যা ছিল ৪১টি। অর্থাৎ গত বারের তুলনায় ২৩টি আসন কমেছে এনডিএ-র।

নরেন্দ্র মোদী যে ভাষায় আক্রমণ করছিলেন শরদ পওয়ারকে, তা মহারাষ্ট্রের সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নয়, এ কথা বলেছিলেন পুণে এবং মুম্বইয়ের মানুষ। সম্প্রতি মোদী তাঁর জনসভায় পওয়ারকে ‘অস্থির আত্মা’ বলেছিলেন। ক্ষোভ ছিল তা নিয়েও। সে রাজ্যের মানুষের বক্তব্য ছিল, মরাঠা পরিবারের সবচেয়ে বড় সংস্কার সবচেয়ে বৃদ্ধ মানুষটির প্রতি বাড়তি যত্নআত্তি, তাঁকে সব সময়ে আগলে রাখা। কিন্তু ‘দাদা’ (ভাইপো অজিত পওয়ার) ‘সাহেবের’ (শরদ) ঘরে বড় হয়ে তাঁরই লোক, নাম ভাঙিয়ে নিলেন, দলের এত বছরের ঐতিহ্যের ঘড়িকেও (এনসিপি-র আদি প্রতীকচিহ্ন) ‘চুরি’ করে নিলেন। এটা মেনে নিতে পারেনি মানুষ।

মহারাষ্ট্রে বিজেপির নেতৃত্বাধীন মহাদ্যুতি জোটের বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ এবং ‘ষড়যন্ত্রের’ ধারাবাহিক অভিযোগ এনে প্রচার করে গিয়েছিলেন কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খড়্গে, পওয়ার এবং উদ্ধব। তাঁদের বক্তব্য, মোদী ভয় দেখিয়ে, ব্ল্যাকমেল করে একের পর এক রাজ্যে দল ভাঙানোর খেলায় নেমেছেন। অন্য দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে বিজেপিকে যারা সমর্থন করছে, তাদের দিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বিরোধী নেতারা এ-ও অভিযোগ তোলেন যে, সুপ্রিম কোর্ট ও নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে সিলমোহর দিচ্ছে, কারণ তারা মোদীর কথায় চলছে। তবে আজকের রায় স্পষ্ট করে দিয়েছে, মহারাষ্ট্রের মানুষ বিজেপির এই দল ভাঙানো এবং প্রতীক কেড়ে নেওয়াকে সুনজরে দেখেনি মোটেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE