নাম না উল্লেখ করে সিউড়ি ১নং ওয়ার্ডে অনুব্রত মন্ডল কে কটাক্ষ করে বিজেপির ভোট প্রচারে দেওয়াল লিখন। নিজস্ব চিত্র।
যা ভাবা গিয়েছিল, তাই হল। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরকে বিজেপি প্রার্থী করতেই উঠে এল শীতলখুচি প্রসঙ্গ।
বীরভূমের বিদায়ী সাংসদ এবং এ বারের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের নামে তৈরি তাঁর সমর্থকদের ‘এক্স হ্যান্ডল’-এর অ্যাকাউন্ট থেকে রবিবার রাতে একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানেই গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় কোচবিহারের শীলতখুচির প্রসঙ্গ তুলে খোঁচা দেওয়ার পাশাপাশি সদ্য প্রাক্তন ওই আইপিএস রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ বা সিআইডির ‘আতশকাচের তলায়’ ছিলেন, তার উল্লেখ করা হয়েছে। দেবাশিসের ‘কয়েকশো গুণ’ সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়েছে বলেও ওই পোস্টে অভিযোগ করা হয়েছে।
শতাব্দী নিজে যদিও বলেছেন, ‘‘আমি এক্স হ্যান্ডল ব্যবহার করি না। আমার রুচিতে বাধে, এমন পোস্ট আমি করি না। আমার প্রয়োজনও নেই। কে পোস্ট করেছে, সেটা দেখতে হবে। পুলিশকে সব জানিয়েছি।’’ দেবাশিসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পরে তো আবার উনি (শতাব্দী রায়) বলেছেন, হ্যাক হয়েছে। কোনটা ভুল, কোনটা ঠিক, আমি জানি না। যদি সত্যি তিনি এ কথা বলে থাকেন, ব্যক্তি আক্রমণে নামতে চান, সেটা ওঁর রুচির পরিচয়। আমি রাজনৈতিক ভাবেই প্রার্থীর মোকাবিলা করব।’’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল, বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফায় শীতলখুচি বিধানসভার জোড়পাটকি পঞ্চায়েতের ৫/ ১২৬ নম্বর বুথে ভোট চলাকালীন গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে সিআইএসএফ জওয়ানদের বিরুদ্ধে। ভোটের লাইনে থাকা চার যুবকের মৃত্যু হয়। সেই সময় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কোচবিহারের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে ছিলেন দেবাশিস ধর। ওই ঘটনা ঘিরে তোলপাড় চলে রাজ্য রাজনীতিতে। মৃতদের পরিবার তরফে জওয়ানদের বিরুদ্ধে মামলা করে। ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডিকে। ভোট শেষে দেবাশিসকে সরিয়ে দেয় রাজ্য। তাঁকে ভবানী ভবনে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। তাঁর বহুগুণ সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়েছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেছিল সিআইডি।
সেই দেবাশিস এ বারে বীরভূমে বিজেপির প্রার্থী হতেই মনে করা হচ্ছিল, শাসক শিবির শীতলখুচি প্রসঙ্গ তুলবে। সোমবার নলহাটিতে প্রচারে ছিলেন শতাব্দী। ভোট প্রচারে শীতলখুচি প্রসঙ্গ আসবে কি না, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘আমার প্রচারে বিরোধীদের কিছু বলার প্রয়োজন হয় না। কখনও করিনি। আমার মুখ থেকে বিরোধীদের কিছু বলা হয়নি। এ বারেও অন্যথা হবে না।’’
যদিও তৃণমূল যে এই সুযোগ ছাড়বে না, জেলা নেতাদের মনোভাবে স্পষ্ট। এ দিনই দুবরাজপুরের গোয়ালিয়াড়া এলাকায় একটি সভা থেকে দেবাশিস ধর ও শীতলখুচি প্রসঙ্গ তোলেন জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী এবং মলয় মুখোপাধ্যায়। মলয় বলেন, ‘‘শীতলখুচির ক্ষত মানুষকে ভুলতে দিলে হবে না। অন্যায় করেছে যে লোক, তাঁকেই প্রার্থী করল বিজেপি। কারণ, আমরা বুঝতেই পেরেছিলা, যেমন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পদে থেকে ভিতেরে ভিতরে যোগসাজশ (বিজেপির সঙ্গে) রেখেছিলেন। ইনিও তাই।’’
বিধানসভা ভোটে শীতলখুচির তৃণমূল প্রার্থী তথা দলের রাজ্য মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় এ দিন বলেন, “সে সময়কার জেলা পুলিশ সুপারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ভোটারদের লাইনে গুলি চালানোর অবস্থা ছিল না। পুলিশ সুপারের রিপোর্টের সঙ্গে বাস্তব ঘটনার ফারাক রয়েছে। ফলে, তাঁর ভূমিকা নিয়ে তখন থেকেই প্রশ্ন চিহ্ন ছিল। এখনও সে প্রশ্ন রয়েছে।’’
এ দিন দেবাশিস ধর বলেন, ‘‘পরে তো আবার উনি(শতাব্দী রায়) বলেছেন, ওটা হ্যাক হয়েছে। কোনটা ভুল, কোনটা ঠিক, সেটা তো আমি জানি না। যদি সত্যি তিনি এ কথা বলে থাকেন, ব্যক্তি আক্রমণে নামতে চান সেটা ওঁর রুচির পরিচয়। আমি পাল্টা ব্যক্তি আক্রমণে যাব না। রাজনৈতিক ভাবেই প্রার্থীর মোকাবিলা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy