Advertisement
Back to
Kunal Ghosh

সকালে বিজেপি প্রার্থীর প্রশংসা, বিকেলেই তৃণমূল রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে অপসারিত কুণাল ঘোষ

এর আগে দলের মুখপাত্রের পদ থেকে কুণাল ঘোষকে তৃণমূল সরিয়ে দিলেও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন তিনি। এর পরে কুণাল কী করবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৪ ১৬:৩০
Share: Save:

কুণাল ঘোষকে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দিল তৃণমূল। বুধবার একটি বিবৃতি জারি করে এই ঘোষণা করেছে রাজ্যের শাসকদল। একই সঙ্গে এ-ও জানানো হয়েছে, কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।

তৃণমূলের তরফে বুধবার বিকেলে জারি করা ওই বিবৃতিতে সই রয়েছে দলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনের। বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘সম্প্রতি কুণাল ঘোষ এমন অনেক কথা বলছিলেন যা দলের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই এটা বোঝানো অত্যন্ত দরকার ছিল যে, উনি যা বলছেন, তা সম্পূর্ণ ভাবে তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত। এর সঙ্গে দলের ভাবনার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তৃণমূল ওই বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়েছে, এর আগে দলের মুখপাত্র পদ থেকেও কুণালকে সরানো হয়েছিল। এ বার তাঁকে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও অপসারণ করা হল।

দলের সিদ্ধান্ত জানার পরে কুণাল সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি। সন্ধ্যায় তিনি কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চান। তবে দলে তাঁর হিতৈষীরা কুণালকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা থেকে আপাতত বিরত রাখার চেষ্টা করছেন। শোনা যাচ্ছে, কুণাল তাঁদের পাল্টা বলেছেন, ‘যুদ্ধ’ চলবে। তিনি ‘নিজের মতো’ করে তাঁর যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। দল এখন তাকিয়ে আছে কুণালের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

বুধবার সকালে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা এবং অধুনা বিজেপির উত্তর কলকাতার প্রার্থী তাপস রায়ের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর প্রশংসা করেছিলেন কুণাল। তারও দিন কয়েক আগে কুণালের করা একটি এক্স (সাবেক টুইট) পোস্ট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করেছিলেন, নাম না-করে কুণালের লক্ষ্যে ছিলেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেব। পাঁচ দিনের মধ্যে পর পর এই দুই ঘটনাই যে কুণালের বিরুদ্ধে গিয়েছে, তা স্পষ্ট তৃণমূলের ওই বিবৃতিতেই।

তৃণমূলের বিবৃতি অনুযায়ী, এখন থেকে তৃণমূলের সদর দফতর থেকে জারি করা বিবৃতিকেই দলের বক্তব্য বলে ধরতে হবে। সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ করা হয়েছে, কুণালের মন্তব্যকে যেন দলের বক্তব্য হিসাবে গ্রহণ করা না হয়। সে ক্ষেত্রে তৃণমূল আইনি পদক্ষেপ করতে পারে বলেও জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

বুধবার সকালে উত্তর কলকাতার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ক্লাবের রক্তদান শিবিরে আমন্ত্রিত ছিলেন তাপস এবং কুণাল দু’জনেই। তাপসের উপস্থিতিতেই কুণাল সেখানে বক্তৃতা করেন। বক্তৃতাতে কুণাল কিছুটা প্রশংসার সুরেই বলেন, ‘‘তাপস রায় যত দিন জনপ্রতিনিধি ছিলেন, তত দিন মানুষকে পরিষেবা দিয়েছেন। দিন-রাত তাঁর দরজা মানুষের জন্য খোলা থাকত। মানুষ যখন তাঁকে ডেকেছেন তখন পেয়েছেন।’’ কুণাল এ-ও বলেন, ‘‘এলাকার মানুষকে ঠিক করতে দিন, কাকে তাঁরা প্রার্থী হিসাবে বেছে নেবেন। ছাপ্পা ভোট যেন না হয়।’’

এর আগে রবিবার কুণালের বিতর্কিত এক্স পোস্টটিও ছিল ইঙ্গিতপূর্ণ। তিনি লিখেছিলেন, ‘‘দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে দলবদল সমর্থনের। বিশ্বাসঘাতকেরা আমাদের দলের নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসা করলেও তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আদিখ্যেতা করে নিজের ইমেজকে সর্বপন্থী উদার রাখার চেষ্টার নাম সৌজন্য। আর বিশ্বাসঘাতক দলবদলুদের ‘গদ্দার’ বলা হলে সেটা আপত্তির!’’ এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগেই দেব এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী তাঁর পিতৃতুল্য। তাঁর সম্পর্কে ‘গদ্দার’ বলা হলে তাঁর আপত্তি রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই কুণালের এই পোস্টের গূঢ়ার্থ বুঝতে অসুবিধা হয়নি রাজনীতিবিদদের।

বুধবার দলের তরফে কুণালকে অপসারণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পর তাপস এবং দেব দু’জনেরই বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাপস যেখানে কুণালের বক্তব্যের বিরোধিতা না করে বরং প্রচ্ছন্ন ভাবে তাঁর বক্তব্যের সমর্থনই করেছেন, সেখানে দেব কুণালের অপসারণের খবর শুনে শুধুই হেসেছেন এবং ইশারায় জানিয়েছেন, তিনি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy