প্রয়োজনে, দলের কর্মীদের ‘লাঠি’ ধরার নিদান দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি উদয়ন গুহ। আর কোচবিহারের তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া ‘ইটের বদলে পাটকেলের’ বার্তা দিলেন। বুধবার কোচবিহারে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে ভোট প্রচার শুরু করেন জগদীশ। এর পরেই রবীন্দ্রভবনে তৃণমূলের কর্মিসভা হয়। সেখানে কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা তৃণমূল নেতারা। দিন কয়েক আগে, সিতাইয়ে সভা করেন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। সেখানে নিশীথ তাঁর বাড়ি ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ তুলে জগদীশ বলেন, “ঢিল মারলে পাটকেল ছোড়ার জন্য আমরা তৈরি।” দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবীন্দ্রভবনের কর্মিসভায় উদয়ন কর্মীদের ‘লাঠি’ ধরার নিদান দেন। পরে ওই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “কেউ আমাদের উপরে আক্রমণ করতে এলে, আমরা চুপ করে বসে থাকব না। সেই আগের মতো অবস্থা আর নেই। এখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। প্রয়োজনে লাঠি চালান, বাটি চালান—সব হবে।”
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, “ভোটের আগে হাওয়া গরম করতে চাইছে তৃণমূল। সে জন্য লাঠি ধরা বা ইটের বদলে পাটকেলের মতো কথা বলছে। আমাদের প্রার্থী কখনও কাউকে বাড়ি ছাড়া করতে চাননি। শুধু ২০১৯ সালে নির্বাচনের পরে, সিতাইয়ের বিধায়ককে ঘরছাড়া হয়ে থাকতে হয়েছিল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল। তাই রাজনৈতিক উত্তাপ না ছড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।”
রবিবার দলের ব্রিগেড সমাবেশে প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পরে এ দিনই কোচবিহারে প্রচারে নামেন জগদীশ। সিতাই থেকে শতাধিক গাড়ির কনভয় নিয়ে তিনি কোচবিহার জেলা শহরে পৌঁছন। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে রবীন্দ্রভবনে দলের কর্মিসভায় পৌঁছন। ওই সভায় জেলার সমস্ত শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ‘ঐক্যবদ্ধ’ লড়াইয়ের বার্তা দিয়ে শুরু থেকেই জগদীশ ছিলেন আক্রমণাত্মক। বিজেপির প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে গত পাঁচ বছরে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ না করার অভিযোগ তোলেন তিনি। জগদীশের সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক এবং প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “এ বারে মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। তা প্রমাণিত হবে।” পরে, দলের জেলা কার্যালয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয় জগদীশকে। অভিজিৎ ঘোষণা করেন, ১৬-২২ মার্চ জেলা জুড়ে ‘বাংলার অধিকার যাত্রা’ করবেন জগদীশ। সাত দিন সাতটি বিধানসভায় ওই যাত্রা নিয়ে প্রচার করবেন তৃণমূলের প্রার্থী।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)