তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
পদ নয়, পথে আছেন। উত্তর কলকাতার দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে এমন বার্তাই দিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। দলের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার পর আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদেও ফেলেন তিনি। কুণাল দলীয় কর্মীদের জানান, তাঁদের প্রাণ দিয়ে রক্ষা করবেন তিনি। বুথে বুথে কাজ করার সময় তৃণমূল কর্মীরা বাধার মুখে পড়লে তাঁদের পাশে দাঁড়াবেন। তাঁদের হয়ে কথাও বলবেন। কুণালের দাবি, হোয়াট্সঅ্যাপে ‘চামচাবাজি’ করে দল করা যায় না। দল চালাতে কর্মীদের প্রয়োজন। কর্মীদের অপমান তিনি কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবেন না বলেও সাফ জানিয়েছেন। এ সব কথা বলতে গিয়েই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন কুণাল। কর্মীদের সামনেই কেঁদে ফেলেন তিনি। পাশাপাশি বলেন, ‘‘আমি পদে নয়, পথে আছি। কোনও পদ দিয়ে কুণাল ঘোষকে আটকে রাখা যায়নি। পদে না থাকলেও ত়ৃণমূল কর্মীদের পাশে সব সময় আছি এবং থাকব।’’
কুণাল যে সংবাদমাধ্যমে কর্মরত, বৃহস্পতিবার সেই অফিসের সামনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন উত্তর কলকাতার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। কুণালের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। কিছু বিষয়ে অনুযোগও জানান। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কুণাল বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলের সৈনিক। ১৯৯৩ সাল থেকে দলের পাশে রয়েছি। যিনি বা যাঁরা আজ সাধারণ কর্মীদের আবেগকে সম্মান না করে জমিদারি চালাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলব। আমি কর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি বরাবর। কোনও ঘরে বসে থাকা নেতারা যদি কর্মীদের সঙ্গে অসভ্যতা করে তা হলে এগিয়ে যাব। হোয়াট্সঅ্যাপে চামচাবাজি করে দল চালানো যাবে না। তৃণমূল একটা পরিবার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেত্রী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেনাপতি। তাঁদের নেতৃত্বে দল চলছে। সাধারণ কর্মীদের আবেগকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাঁদের অপমান করা যাবে না। আমি কর্মীদের পাশে আছি। আশা করি মমতাদি এবং অভিষেক বিষয়টি অনুধাবন করবেন। সামনে ভোট। ৪২-এ ৪২ টার্গেট করে এগোচ্ছি আমরা।’’
বুধবার বিকেলেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল একটি প্রেস বিবৃতি জারি করে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয় কুণালকে। এর পর বৃহস্পতিবার তৃণমূলের পঞ্চম দফার তারকা প্রচারকদের নামের তালিকা প্রকাশ করলে দেখা যায়, সেখান থেকেও বাদ পড়েছে তাঁর নাম। তবে তারকা প্রচারকদের তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ায় তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই বলে জানিয়েছেন কুণাল। তাঁর কথায়, ‘‘এটা দলের নেতৃত্বের ব্যাপার। তখন রেখেছিলেন, এখন রাখেননি। আমি গতকাল শুনেছি আমাকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমাকে যদি তারকা প্রচারকদের তালিকাতে না রাখা হয়, তা হলে ভাল। আমাকে গরমে ঘোরাঘুরি করতে হবে না। আমি নিজে তৃণমূল কর্মী। আছি এবং থাকব।’’
পাশাপাশি, তালিকায় থাকা ৪০ তারকা প্রচারকদের কটাক্ষও করেন। তাঁর দাবি, তৃণমূলের তারকা প্রচারকদের তালিকার অধিকাংশ নেতাকেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে ‘চোর’ বলার আগে পাঁচ বার ভাবতে হয়। তাই তাঁদের নাম থাকাকে তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজি নন বলেও জানিয়েছেন কুণাল। কুণাল বলেন, ‘‘কয়েক জন সত্যিই ভাল বক্তৃতা করেন। কিন্তু যে দলের অর্ধেক নেতাকে শুভেন্দুকে ‘চোর’ বলতে গেলে আগে তিন বার বাথরুম যেতে হয়, তাঁদের আবার কিসের লিস্ট! শুভেন্দুকে চোর চিটিংবাজ, দলবদলু, জালিয়াত শুধু কুণাল ঘোষ বলে। আর কোনও নেতাকে বলতে দেখেছেন? কেউ তৃণমূলকে গালাগাল করলে আমি ব্যক্তিগত ভাবে নিই। ওই তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের অনেকেই এটা করে না। মমতাদিরও বিরোধিতা করা হয়েছে। এই সব তারকা যত এগোবেন এবং কর্মীরা পিছিয়ে পড়বেন, তত ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে দলের। ঈশ্বর মঙ্গল করুন। আমার কোনও আফসোস নেই। আমি ধরেই নিয়েছিলাম আমার নাম বাদ পড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy