মন্দির মার্গ থানা চত্বরে ধর্নায় বসেছেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটের সময় চার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রধানকে বদল করা এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার দাবিতে সোমবারের পর মঙ্গলবারও দিল্লিতে ধর্নায় বসল তৃণমূল। মন্দির মার্গ থানা চত্বরে ধর্নায় বসেছেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। তৃণমূলের ১০ জন সাংসদ এবং প্রাক্তন সাংসদদের সেই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহম্মদ নাদিমুল হক, দোলা সেন, সাকেত গোখলে, সাগরিকা ঘোষ, বিবেক গুপ্তা, অর্পিতা ঘোষ, শান্তনু সেন, আবীররঞ্জন বিশ্বাস। এ ছাড়াও রয়েছেন তৃণমূলের যুবনেতা সুদীপ রাহা। মঙ্গলবার আম আদমি পার্টির সৌরভ ভরদ্বাজ তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে মন্দির মার্গ থানায় যাচ্ছেন বলে রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ জানিয়েছেন। তৃণমূলের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহও। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের কাছে বিচার চাইলে তৃণমূল সাংসদদের জেলে যেতে হবে। তবে এই লড়াইয়ে আমরা ওদের পাশে রয়েছি।’’
সোমবার নির্বাচন কমিশনের বাইরে ধর্নার সময় পুলিশ তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের আটক করে এই মন্দির মার্গ থানাতে নিয়ে এসেছিল। সেই থানা চত্বরেই এ বার তারা ধর্নায় বসেছে বলে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল জানিয়েছে। ধর্নায় বসে প্রতিবাদ জানাতে গান গাইতে দেখা যায় ডেরেক-দোলাদের। স্লোগান তুলতেও দেখা যায়।
সোমবার তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের অবস্থান বিক্ষোভের জেরে ধুন্ধুমার হয় কমিশন অফিসের চত্বর। ভূপতিনগরে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র ভূমিকা নিয়ে ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলে সোমবার নির্বাচন কমিশনের দফতরে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। কমিশনের আধিকারিকদের কাছে নিজেদের অভিযোগ এবং দাবি জানিয়ে বাইরে এসে ধর্নায় বসে তারা। ২৪ ঘণ্টা ধর্নায় বসার কথা ঘোষণা করেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। কিছু ক্ষণ পরেই সেই ধর্না তুলে দিতে আসরে নামে দিল্লি পুলিশ। সদস্যদের কমিশনের দফতরের সামনে থেকে সরে যেতে বলে পুলিশ। তারা রাজি না হলে পুলিশ জোর করে ধর্না তোলার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি। একে একে বিক্ষোভরত তৃণমূল নেতাদের টেনেহিঁচড়ে পুলিশ বাসে তোলা হয় বলে অভিযোগ। এর পর তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের ১০ জনকে আটক করে দিল্লির মন্দির মার্গ থানার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানাতে গিয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়ে সোমবারই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে তৃণমূলের ১০ জন প্রতিনিধির একটি দল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে বেরোনোর পর বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে অভিষেক অভিযোগ তোলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থার পাশাপাশি এ বার নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করছে বিজেপি। কমিশন বিজেপির বশ্যতা স্বীকার করেছে বলেও তিনি অভিযোগ তোলেন।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবারও সরব হয়েছেন অভিষেক। ফেসবুকে একটি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘‘কেন গণতন্ত্র আমার মাতৃভূমিতে লুণ্ঠিত হচ্ছে প্রতিপদে? সোমবার রাজধানীর বুকে আমাদের ১০ জন প্রতিনিধির সঙ্গে যা ঘটল, তা গণতন্ত্রের মৃত্যু ছাড়া আর কী ? দিল্লির পুলিশ কি আদৌ মানুষের সেবা করছে, নাকি তারা দিল্লির স্বৈরতন্ত্রের দলদাস হয়ে গিয়েছে?’’
অভিষেক আরও লিখেছেন, ‘‘আজ গোটা দেশ যে মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাক্ষী থাকল, তা দেশের জন্য লজ্জার, দেশবাসীর জন্যও লজ্জার। আমাদের প্রতিনিধিরা গিয়েছিলেন মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে এবং ইডি, এনআইএ-র পক্ষপাতদুষ্ট পদক্ষেপের কথা বলতে, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাকা স্থায়ী বাড়ি তৈরী করার অনুমতি চাইতে! ধিক্কার নির্বাচন কমিশন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy