বহরমপুরের দলীয় মঞ্চে একসঙ্গে পায়রা ওড়াচ্ছেন হুমায়ুন এবং ইউসুফ। — নিজস্ব চিত্র।
স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বহরমপুরের মাটিতে জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দিলেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা জোড়া বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ইউসুফ পাঠান। বৃহস্পতিবারই তিনি প্রথম বার পা রাখেন বহরমপুরে। সেখানে তাঁকে বরণ করে নেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। যে হুমায়ুন একদা ইউসুফের প্রার্থিপদের বিরোধিতা করে নির্দল হিসাবে লড়ার হুমকি দিয়েছিলেন। ‘বদলে’ যাওয়া হুমায়ুনের দাবি, পাঠানকে জেতানোর দায়িত্ব তাঁর। পাশাপাশি, হুঁশিয়ারি অধীর চৌধুরীকে।
মারকুটে ব্যাটার হিসাবে পরিচিত পাঠান জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসেও ‘চালিয়ে’ই খেলতে চান। প্রথম বার বহরমপুরে পৌঁছে সোজা ব্যাটে খেলে সেই বার্তা দিলেন তিনি। নাম ঘোষণার পর থেকেই পাঠানকে বহিরাগত বলে আক্রমণ শুরু করেছিল বিরোধীরা। বহরমপুরের বিদায়ী সাংসদ অধীর ছিলেন সেই সম্মিলিত আক্রমণের পুরোভাগে। এত দিন এ নিয়ে কোনও কথাই বলেননি পাঠান। বহরমপুরের ‘ঘূর্ণি পিচে’ ব্যাট করতে নেমে সপাটে সেই প্রশ্নের জবাব দিলেন। বললেন, ‘‘আমাকে বহিরাগত বলা হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদীও তো গুজরাতের বাসিন্দা হয়ে বারাণসী থেকে ভোটে লড়েন। কিন্তু ওঁকে কি বহিরাগত বলা হয়? আমিও গুজরাত থেকে বাংলায় এসেছি ভোটে লড়তে, তা হলে আমি কেন বহিরাগত হতে যাব! আমি বাংলারই ছেলে। এখানে থাকতেই এসেছি।’’ এ কথা শুনে চেয়ার থেকে প্রায় লাফিয়ে উঠে হাততালি দিলেন দু’দিন আগে ইউসুফের প্রার্থিপদের ঘোর বিরোধিতা করা বিধায়ক হুমায়ুন। ভোটে জিতলে দলনেত্রী মমতাকে কী উপহার দেবেন? হাসতে হাসতে ইউসুফের জবাব, ‘‘আমি কী উপহার দেব? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তো বলেছেন, আমি ভোটে জিততে পারলে উনি আমাকে কলকাতার যত বিখ্যাত মিষ্টি আছে, সব খাওয়াবেন। আমি তারই অপেক্ষায় আছি।” রাজনীতির ‘ডেবিউ’ ম্যাচ খেলতে নেমে কি একটু নার্ভাস? আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নে ইউসুফ বলেন, ‘‘আমার ক্রিকেটীয় ট্র্যাক রেকর্ড আপনারা সবাই জানেন। আমি একটু ডেয়ারিং। প্রথম থেকেই চালিয়ে খেলব।’’
বহরমপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের কাছে মঞ্চ বেঁধে পাঠানকে স্বাগত জানিয়েছে জেলা তৃণমূল। সেই মঞ্চে সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন ভরতপুরের ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ক। যে হুমায়ুন ক’দিন আগে পর্যন্তও ইউসুফের নামে প্রকাশ্যে আপত্তি জানাচ্ছিলেন। এমনকি, হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিলেন যে, প্রয়োজনে বহরমপুর কেন্দ্রে নির্দল হিসাবে লড়বেন। তার পর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। সম্ভাবনার শিল্প রাজনীতির আঙিনার বাসিন্দা হুমায়ুনের ভাবনাতেও এসেছে আমূল বদল। বৃহস্পতিবার ইউসুফকে জেতানোর চ্যালেঞ্জ নিলেন সেই হুমায়ুন। পাশাপাশি, অধীরকে কটাক্ষ করে বললেন, ‘‘ইউসুফকে জেতানোর দায়িত্ব আমার। বহরমপুর কেন্দ্রে রেকর্ড মার্জিনে জিতবে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ। এ বার দেখে নেব অধীর কত বড় বাঘ!’’
এ দিন মঞ্চে প্রচারের আলো পুরোটাই ছিল পাঠানকে ঘিরে। জোড়া বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্যকে দেখতে ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। জেলা তৃণমূলের তরফ থেকে অবশ্য কার্যত ‘হুইপ’ জারি করা হয়েছিল দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে। বস্তুত, ইউসুফকে নিয়ে বহরমপুরবাসীর মধ্যে কতটা উন্মাদনা তৈরি হয় তা মাপতে তৈরি ছিল বিরোধীরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy