Advertisement
E-Paper

প্রসূনের প্রচারে বিক্ষোভ পুরনো কর্মীদের, অস্বস্তি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আঁচে

তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ হাওড়ার বেলগাছিয়ার মনসাতলা এলাকায় হুড খোলা জিপে প্রচারে বেরিয়েছিলেন তিন বারের সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।

হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।

হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ০৮:০৩
Share
Save

শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে বেরিয়ে দলীয় কর্মীদেরই বিক্ষোভের মুখে পড়লেন হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের মাত্র কয়েক দিন আগে দলের পুরনো কর্মীরাই নতুন কর্মীদের বিরুদ্ধে তোলাবাজি, দাদাগিরি, দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন। সোমবার রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক মনোজ তিওয়ারিকে নিয়ে প্রচার করছিলেন প্রসূন। সেই সময়ে তাঁর উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয় বলে দাবি। অভিযোগ, তা শুনে মেজাজ হারান প্রসূনও। তিনি কর্মীদের চলে যেতে বলেন বলেও দাবি। ঘটনার ভিডিয়ো দ্রুত ভাইরাল হয় সমাজমাধ্যমে। সব মিলিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টিই ফের সামনে এল বলে দাবি করেছেন বিরোধীরা। এতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও জোরালো হল বলে তাঁদের দাবি।

তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ হাওড়ার বেলগাছিয়ার মনসাতলা এলাকায় হুড খোলা জিপে প্রচারে বেরিয়েছিলেন তিন বারের সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন এলাকার বিধায়ক মনোজ তিওয়ারি। সেই সময়ে ওই এলাকার বেশ কিছু পুরনো দলীয় কর্মী বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তখনই প্রসূন ধৈর্য হারান বলে অভিযোগ।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। হাওড়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। কেউ ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেননি।

তবে, এ দিনের ওই বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা তৃণমূলের প্রাক্তন ওয়ার্ড সভাপতি দুলাল শীলের দাবি, ‘‘১৯৯৮ থেকে দল করছি। ওয়ার্ড সভাপতি ছিলাম ২৫ বছর। আর এই নির্বাচনে সম্পূর্ণ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে আমাদের। এই চক্রান্ত সমস্তটাই বিধায়কের নেতৃত্বে হয়েছে। এ সব নিয়ে এলাকার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। কেউ হয়তো প্রসূনদার সঙ্গে মন্ত্রীকে দেখে ‘গো ব্যাক’ বলে ফেলেছে। সেটা ঠিক হয়নি।’’

জগৎ দাস নামে আর এক বিক্ষোভকারী তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘‘আমাদের বাদ দিয়ে নতুন একটি বাহিনী গঠন করেছেন মনোজ। তাঁরা এলাকায় তোলাবাজি করে বেড়াচ্ছেন। তাঁরাই এখন দলের কাজ করছেন। ভোটের আর সাত দিন বাকি, কিন্তু এখনও বুথ স্লিপ পর্যন্ত আসেনি। এ ভাবে চললে শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রসূনদা লিড পাবেন না। এমনকি, আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও ভরাডুবি হবে।’’

এই বিক্ষোভ নিয়ে প্রসূনের অবশ্য দাবি, ‘‘এটা পুরোটাই দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না।’’ শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ব্লক সভাপতি মহেন্দ্র শর্মা বলেন, ‘‘আমিও ওই রোড শোয়ে ছিলাম। এ সব মিথ্যা কথা। কিছুই ঘটেনি। কেউ ‘গো ব্যাক’ বলেননি। কর্মীরা শুধু সাংসদকে বলছিলেন আরও কাজ করতে।’’ এ বিষয়ে কথা বলতে মোবাইলে এলাকার মন্ত্রী তথা বিধায়ক মনোজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি, মেসেজেরও উত্তর দেননি।

অন্য দিকে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে যাওয়ায় আসরে নেমেছেন বিরোধী দলের প্রার্থীরা। হাওড়া সদরের বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তী এই ঘটনায় তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘যে ভাবে শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় তোলাবাজি-সহ নানা ধরনের কাটমানির খেলা চলছে, তাতে মন্ত্রী এবং সাংসদ দু’জনেই যুক্ত। আজ দলের লোকেরাই ক্ষোভ চেপে রাখতে না পেরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’’

ওই কেন্দ্রের বাম প্রার্থী, সিপিএমের সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি সব সময়েই বলি, তৃণমূলে তোলাবাজ ছাড়াও কিছু ভাল কর্মী আছেন। এখন তো শুধু প্রসূনবাবু ‘গো ব্যাক’ শুনেছেন। এর পরে রাজ্যের সর্বত্র বাকিদেরও তা শুনতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Prasun Banerjee Howrah

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy