—প্রতীকী চিত্র।
সংগঠক দিলীপ ঘোষের থেকে রাজ্য বিজেপি যে অধ্যাপক সুকান্ত মজুমদারের হাতে গিয়েছে, তা স্পষ্ট হয়েছিল দলের বিভিন্ন পদাধিকারীদের পরিচয়ে। দলের যুব মোর্চার দায়িত্ব গিয়েছিল চিকিৎসক ইন্দ্রনীল খাঁয়ের হাতে। রাজ্য কমিটিতে জায়গা পেয়েছিলেন চিকিৎসক, অধ্যাপক, শিক্ষাবিদেরা। এ বার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থিতালিকাতেও সেই ডিগ্রিরই গুরুত্ব। প্রার্থিতালিকা ঘোষণার প্রথম থেকেই সেটা টের পাওয়া গেলেও অপেক্ষা ছিল ডায়মন্ড হারবারের প্রার্থীর নাম ঘোষণা পর্যন্ত। ওই আসনে প্রার্থী হতে পারেন এমন দুই আইনজীবীর নাম শোনা গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের নাম চূড়ান্ত না হওয়ায় হার মানতে হল আইনজীবীদের। জিতে গেলেন চিকিৎসকরা। শুক্রবার প্রথম দফার ভোট শুরুর আগে খতিয়ে দেখল আনন্দবাজার অনলাইন।
বিজেপি এ বার প্রার্থী নির্বাচনে শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পেশার উপরে যে জোর দিয়েছে, তা স্পষ্ট মোট ৪২ জনের মধ্যে ২৬ জন প্রার্থীর পরিচয়ে। এঁরা সকলেই নিজেদের পেশাগত কর্মজীবনে সফল। তবে অনেকে এমনও রয়েছেন, যাঁদের কর্মজীবন বা ডিগ্রিগত পরিচয় ছাপিয়ে গিয়েছে তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয়। এঁদের মধ্যে সবচেয়ে ভারী নাম কলকাতা উত্তরের প্রার্থী তাপস রায়। সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা তাপসকে রাজনীতিক হিসাবেই সবাই চেনেন। তবে আদতে তিনি আইনজীবী। এ ছাড়াও দমদমের প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত, পুরুলিয়ার জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতোর আইনজীবী পরিচয় অনেকের কাছেই অজ্ঞাত। তবে আইন পেশার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত শ্রীরামপুরের প্রার্থী কবিরশঙ্কর বোস। আর সবার উপরে রয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এই পাঁচ আইনজীবীকে হারিয়ে এক ভোটে এগিয়ে চিকিৎসক প্রার্থীরা। এঁদের মধ্যে দু’জন আগেই সাংসদ হয়েছেন। জলপাইগুড়ির জয়ন্তকুমার রায় এবং বাঁকুড়ার সুভাষ সরকার। এ বার তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন জয়নগরের অশোক কাণ্ডারী, হাওড়ার রথীন চক্রবর্তী, মুর্শিদাবাদের নির্মল সাহা এবং ঝাড়গ্রামের প্রণত টুডু। ২০১৯ সালে বিজেপির জেতা আসনে তিন জন এবং হারা আসনে প্রার্থী হয়েছেন তিন জন।
তবে বিজেপির প্রার্থিতালিকায় শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্তের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি। বালুরঘাটে সুকান্ত গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় নিজেকে ‘স্কুলশিক্ষক’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এই তালিকায় রয়েছেন আলিপুরদুয়ারের মনোজ টিগ্গা, আরামবাগের অরূপকান্ত দিগার, রানাঘাটের জগন্নাথ সরকার এবং মথুরাপুরের অশোক পুরকায়েত। এ ছাড়াও যাদবপুরের প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় নিজের পরিচয় দেন ‘গবেষক’ হিসাবে।
বিজেপির প্রার্থিতালিকায় রয়েছেন এক জন শিল্পপতিও। তিনি একটি শিল্পসংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর। বিজেপিতে যোগ দিয়েই প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধর। বিজেপির প্রার্থীদের মধ্যে দুই অভিনেতার সঙ্গে রয়েছেন এক গায়ক। হুগলিতে লকেট চট্টোপাধ্যায়, ঘাটালে হিরণ চট্টোপাধ্যায় এবং পূর্ব বর্ধমানে কবিগানের শিল্পী অসীম সরকার। প্রার্থিতালিকায় দু’জন পোশাকশিল্পীও রয়েছেন। মেদিনীপুরের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের সেই পরিচয় সকলের জানা। কৃষ্ণনগরের প্রার্থী অমৃতা রায়ও একটা সময় পর্যন্ত পোশাকশিল্পী হিসাবেই কাজ করেছেন। সব মিলিয়ে বিজেপির প্রার্থিতালিকায় ডিগ্রি আর খ্যাত পেশাজীবীর ছড়াছড়ি। সেটা কম নয় তৃণমূলেও। বাংলার শাসকদলে সেটা আগেও দেখা গিয়েছে। তবে বিজেপি এ বার যে রাজনীতির বাইরের মানুষদের প্রার্থী করায় জোর দিয়েছে, সেটা তালিকায় স্পষ্ট। দুই গৃহবধূ বোলপুরের পিয়া সাহা এবং বসিরহাটে রেখা পাত্রও পদ্মপ্রার্থী ২০২৪ সালের দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy