E-Paper

নেশার সাগরে রাজ্য, মানছে শাসক-বিরোধী

মাদক আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে এখনও স্পষ্ট তথ্য দেয়নি ত্রিপুরা সরকার। তবে বিরোধীদের একটি সূত্রের দাবি, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদক নেন এমন আসক্তের সংখ্যা রাজ্যে প্রায় ৯ হাজার।

vote

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অনঘ গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:২৮
Share
Save

রাজশেখর বসুর ‘উলটপুরাণ’-এ প্রিন্স ভোম রাজ্যসুদ্ধ মৌতাতের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। আর লোকসভা ভোটের আগে ত্রিপুরা যে নেশার সাগরে ভাসছে তা মানছে শাসক-বিরোধী উভয়েই। যদিও মাদকের বাড়বাড়ন্তে পরস্পরের দিকে আঙুল তুলছে তারা।

এক সাক্ষাৎকারে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার দাবি, কংগ্রেস ও কমিউনিস্ট জমানায় ত্রিপুরায় মাদকের বাড়বাড়ন্ত হয়েছিল। তাঁর দাবি, ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরে তাঁরা জানতে পারেন, ত্রিপুরাকে করিডর করে প্রতি দিন হাজার হাজার কিলোগ্রাম মাদক পাচার হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমরা চাই না এখানে গাঁজা তৈরি হয়ে বাইরে যাক। মায়ানমার থেকে অসম ও মিজ়োরাম হয়ে ত্রিপুরায় আসত মাদক। সেই মাদক যেত বাংলাদেশে।’’

কিন্তু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের এক প্রথম সারির বিজেপি নেত্রীর আত্মীয় যে মাদক ব্যবসায়ে যুক্ত তা সকলেই জানেন।’’ এই চক্রের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের একাংশের বিরুদ্ধে গরু, কয়লা পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের মিল পাচ্ছেন জিতেন্দ্র। বস্তুত মাদক দমনে আগরতলায় দফতর খুলেছে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরো। তবে পশ্চিমবঙ্গের মতো এখনও পাচার চক্রের সঙ্গে রাজনীতিকদের সম্পর্ক নিয়ে তদন্তের ঘটনা খুব বেশি দেখা যায়নি ত্রিপুরায়।

মাদক আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে এখনও স্পষ্ট তথ্য দেয়নি ত্রিপুরা সরকার। তবে বিরোধীদের একটি সূত্রের দাবি, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদক নেন এমন আসক্তের সংখ্যা রাজ্যে প্রায় ৯ হাজার। ১৬-২০ বছর বয়সিদের মধ্যে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদক নেন এমন আসক্তের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। পাশাপাশি, ২১-২৫ বছর বয়সি আসক্তদের মধ্যে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদক নেন, এমন আসক্তের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার।

বিএসএফ সূত্রের দাবি, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে গত মার্চ পর্যন্ত ত্রিপুরায় প্রায় ১৪ কোটি টাকার গাঁজা, ৯ কোটি টাকার ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩ কোটি টাকার ফেনসিডিল বা ইকসুফ, ৬ কোটি টাকার ব্রাউন সুগার আটক হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে বহু গাঁজার খেত। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ও রাজ্য পুলিশ হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছে।

মাদকের সঙ্গে ত্রিপুরায় বাড়ছে এইচআইভি পজ়িটিভ বাসিন্দার সং‌খ্যাও। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা জানান, ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ত্রিপুরায় এইচআইভি/এডস আক্রান্তের সংখ্যা ৫,৩৩০ জন। তার মধ্যে মহিলা ১,০৩৩ জন, পুরুষ ৪,২৯৫ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রী রয়েছেন ৫৫৮ জন।

বিরোধী সূত্রের দাবি, ২০২১ সাল থেকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদক নেন এমন আসক্তদের মধ্যে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘নেশার প্রকোপ শুরু হয়েছিল বাম-কংগ্রেস আমলে। আমরা তা দমন করতে লড়াই করছি।’’ আর বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীর পাল্টা, ‘‘শাসক দলের সঙ্গে মাদক চক্রের যোগ দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Tripura Spot Reporting

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।