Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

দুই গৈরিক-সতীর্থ এখন সম্মুখ সমরে

বিজেপির প্রার্থী ঘোষণার পরে বিজুলি কলিতা মেধির নাম শুনে ভুরু কোঁচকানোর ঘটনা বিস্তর হয়েছে। কারণ, প্রার্থী মোটেই পরিচিত মুখ নন।

মীরা বরঠাকুর গোস্বামী ও বিজুলি কলিতা মেধি (ডান দিকে)।

মীরা বরঠাকুর গোস্বামী ও বিজুলি কলিতা মেধি (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৪ ০৮:২৬
Share: Save:

দুই নারী! তাঁদের হাতে তরবারি তো বটেই। ভোটযুদ্ধের অসি! সেই অসি উঁচিয়েই গুয়াহাটির রণাঙ্গনে বিজেপির বিজুলি কলিতা মেধি ও কংগ্রেসের মীরা বরঠাকুর গোস্বামী একে অন্যের বিরুদ্ধে কোমর কষছেন। এক সময় যাঁরা ছিলেন গৈরিক-সতীর্থ। এ বারের ভোটে আনকোরা দুই খেলোয়াড়ের উপরেই আস্থা রেখে রাজধানী দখলে নেমেছে শাসক ও বিরোধী জোট।

বিজেপির প্রার্থী ঘোষণার পরে বিজুলি কলিতা মেধির নাম শুনে ভুরু কোঁচকানোর ঘটনা বিস্তর হয়েছে। কারণ, প্রার্থী মোটেই পরিচিত মুখ নন। অথচ তিনি ছিলেন গুয়াহাটির ডেপুটি মেয়র। রাজ্য বিজেপির দুই দফার উপ-সভানেত্রী। কিন্তু বরাবর লো-প্রোফাইল বজায় রাখা যেমন বিজুলির চরিত্র, উল্টো দিকে, যে কোনও বিষয়ে ঝাঁপিয়ে পড়াই মীরা বরঠাকুরের ইউএসপি। প্রচারপর্বে বিজুলি যেমন এখনও অন্য নেতা ও প্রচারকদের আড়ালে ম্রিয়মাণ, তখনই তেমন কোনও বড় নেতা-নেত্রীর পরোয়া না করেই সরাসরি বাড়ি-বাড়ি হাত জোড় করে হাজির হয়ে যাচ্ছেন মীরা। এমনকি, অসমের লেডি সিংহম হিসেবে পরিচিত এসআই, প্রয়াত জোনমণি রাভার মা নিজেই মীরার হয়ে প্রচারে যাচ্ছেন। বললেন, দরকারের সময় তাঁকেই পাশে পেয়েছি!

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে বিজুলি সন্দিকৈ কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতক ও গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার পরে স্কুলে পড়ানো শুরু করেন। তাঁর বাবা বিজেপি কর্মী ছিলেন। স্বামী টিকেন মেধিও বিজেপি কর্মী। সেই সূত্রেই দুই পরিবারে আলাপ ও বিয়ে। টিকেন জ্যোতিনগরে একটি মুদিখানার দোকান চালান। ১৯৯৮ সালে সাধারণ কর্মী হিসেবে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিজুলি ২০১৩ সালে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হন। ২০১৪ ও ২০১৬ সালে হন রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। ২০১৬ সালেই গুয়াহাটির ডেপুটি মেয়রও হন তিনি। ২০১৯ সালে রঞ্জিত কুমার দাস বিজেপির রাজ্য সভাপতি হলে বিজুলি হন উপ-সভানেত্রী। ২০২২ সালে ভবেশ কলিতা রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরেও ওই পদে ফের নির্বাচিত হন বিজুলি। কিন্তু বরাবরই তিনি প্রচার থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন।

বরাবরের লড়াকু নেত্রী ও প্রচারমাধ্যমের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা মীরাকে ২০১৮ সালে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বহিষ্কার করে বিজেপি। তিনি ছিলেন বিজেপি রাজ্য সম্পাদক, মুখপাত্র, মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর, রাজ্য অর্থ কমিটির সদস্য। তাই এখন যে দলের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই, সেই দলের অন্দর ও অন্তরের কথা তাঁর ভালই জানা।

মীরার দাবি, তিনি স্বচ্ছ রাজনীতি করতে এসেছেন। তাই বিরোধী দল বা প্রার্থী সম্পর্কে কটু কথা বলবেন না। কিন্তু বিরোধী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী—সকলের ভুল মানুষের কাছে তুলে ধরার অধিকার তাঁর আছে। সেই সব ভুল ধরিয়ে দিয়েই মানুষের কাছে সুযোগ চাইছেন তিনি।

১৯৭৭ থেকে গুয়াহাটি লোকসভা কেন্দ্র বেশিরভাগ সময় মহিলাদের হাতেই ছিল। জনতা পার্টির রেণুকা দেবী বরকাকতি ১৯৭৭ সালে গুয়াহাটির সাংসদ হন। ১৯৯৯ সালে সাংসদ হন বিজেপির বিজয়া চক্রবর্তী। কেন্দ্রের মন্ত্রীও হন তিনি। ২০০৯ সালে কংগ্রেসের কিরিপ চলিহাকে হারিয়ে ফের জেতেন বিজয়া। ২০২৪ সালেও জেতেন তিনি। ২০১৯ সালে বিজেপি তাঁর বদলে কুইন ওঝাকে সাংসদ করে। এ বার ফের প্রার্থী বদল। দলের আত্মবিশ্বাস, প্রার্থী যেই হোক না কেন, মোদী ও হিমন্তের হাওয়াতেই বিজেপির গুয়াহাটি-বিজয় নিশ্চিত। এ দিকে ৫১ বছরের মীরার আশা, প্রথম কংগ্রেসি হিসেবে সম্মানের গুয়াহাটি তিনি জিতে দেখাবেন এই বার।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Assam BJP Spot Reporting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE