শতাব্দী রায়। —ফাইল চিত্র।
বিজেপি এখনও প্রার্থী দিতে পারেনি। প্রচারও নেই। ও দিকে, নিবিড় জনসংযোগের পাশাপাশি পরের পর সাংগঠনিক বৈঠকে নিজেকে ব্যস্ত করে তুলেছেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। বুধবার, একই দিনে খয়রাশোল ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে পৃথক ভাবে বৈঠক করলেন শতাব্দী। এ দিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তিনি ছুঁয়ে গেলেন পারশুণ্ডি, বড়রা, বাবুইজোড় এবং হজরতপুর পঞ্চায়েত এলাকা।
তাতেও অবশ্য খয়রাশোলে দলীয় কোন্দল এড়ানো গেল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল। তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, খোদ বিদায়ী সাংসদ ও প্রার্থীর ডাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না খয়রাশোল ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী। এই কাঞ্চনের সঙ্গে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদের বিবাদের কারণেই খয়ারশোল শাসকদলের ‘মাথাব্যথা’—এ কথা আড়ালে জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতা স্বীকার করেন। শুধু কাঞ্চনই নন, বড়রা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এ দিন শতাব্দীর কর্মিসভায় অনুপস্থিত ছিলেন কাঞ্চন-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ওই পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ কয়েক জন। কাঞ্চনের দাবি, ‘‘বৈঠকের বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।’’
জানা গিয়েছে, এ দিন চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটি বুথের সভাপতি সহ মোট ১০ জনের কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন শতাব্দী। সঙ্গী ছিলেন কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ এবং দলীয় নেতা দেবব্রত সাহা। শতাব্দী প্রতিটি বুথ কমিটির থেকে জানতে চান, গত লোকসভা এবং বিধানসভায় ওই বুথে তৃণমূল কত ভোট পেয়েছে। কোথায় সমস্যা, কী করলে পরিস্থিতি শুধরে যেতে পারে—তা-ও প্রার্থী জানতে চান। জানা গিয়েছে, ওই চার পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কটের প্রসঙ্গ উঠেছে।
প্রসঙ্গত, দুবরাজপুরের পরে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের ‘মাথাব্যথা’র আর এক ব্লকের নাম খয়রাশোল। সেখানে সংগঠন মজবুত করার দিকে নজর দিতে চান, সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন শতাব্দী রায়। দোল পেরোলেই ব্লকের জন্য সময় দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। বুধবার থেকে সংগঠন গোছানোর সেই কাজ শুরু করেছেন তিনি। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিশিষ্ট খয়রাশোল ব্লকের বাকি চারটি পঞ্চায়েত লোকপুর, রূপসপুর, কেন্দ্রগড়িয়া ও পাঁচড়ার কর্মীদের সঙ্গে বসবেন বীরভূমের বিদায়ী সাংসদ। খয়রাশোল ও নাকড়াকোন্দা পঞ্চায়েতের জন্য সময় দেবেন শুক্রবার।
গত লোকসভা নির্বাচনে এই ব্লকে বিজেপির চেয়ে ১৫ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। গত বিধানসভা নির্বাচনেও দুবরাজপুর আসনে বিজেপির কাছে হারতে হয়েছে মূলত খয়রাশোলের জন্যই। পঞ্চায়েত নির্বাচন অবশ্য তৃণমূল দাপট বজায় রেখে জিতেছে। কিন্তু, দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চূড়ান্ত আকার নেয়। মূল সংঘাত ছিল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী ও তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে। চলতি জানুয়ারিতে কাঞ্চন ও তাঁর বিরোধী চার নেতাকে নিয়ে পাঁচ সদস্যদের কমিটি গড়ে ব্লক সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হলেও সমস্যা মেটেনি বলেই সূত্রের খবর। দিন কয়েক আগে খয়রাশোলের ব্লকে নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয় দলের তরফে। সেখানে ব্লক সংগঠন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ওই ৫ জনের পাশাপাশি স্থান দেওয়া হয়েছে ব্লকের সব গুরুত্বপূর্ণ নেতাকেই। কিন্তু, সেই বৈঠকও এড়িয়ে যান প্রাক্তন ব্লক সভাপতি। ফলে, অস্বস্তিতে পড়তে হয় তৃণমূল নেতৃত্বকে।
এমন কোন্দলের রেশ যাতে ভোটে না-পড়ে, তার জন্য খয়রাশোলে ‘বিশেষ নজর’ দিতে চাইছেন শতাব্দী। এ দিন তিনি যে পঞ্চায়েতগুলি ঘুরেছেন, সেখানে ছিলেন ব্লকের নির্বাচন কমিটির সদস্যেরা। কিন্তু, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ও তাঁর অনুগামীদের গরহাজিরা ফের উস্কে দিয়েছে দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy