রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
অমেঠী, রায়বরেলী থেকে রাহুল গান্ধী বা গান্ধী পরিবারের কেউ প্রার্থী হোন বলে কংগ্রেসের উপরে চাপ বাড়াচ্ছে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ও ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের শরিক দলগুলি। তাঁদের মতে, রাহুল বা গান্ধী পরিবারের কেউ অমেঠী-রায়বরেলী থেকে প্রার্থী না হলে উত্তরপ্রদেশের লড়াইয়ে কংগ্রেস তথা বিরোধীরা হাল ছেড়ে দিয়েছে বলে বিজেপি প্রচারের সুযোগ পেয়ে যাবে।
এখনও পর্যন্ত রাহুল তাঁর কেরলের ওয়েনাড় আসন থেকেই ভোটে লড়বেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। এর পাশাপাশি তিনি বা প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা গান্ধী পরিবারের পুরনো গড় অমেঠী বা রায়বরেলী থেকে লড়বেন কি না, তা এখনও ঠিক হয়নি। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, রাহুল নিজেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। অমেঠী-রায়বরেলী থেকে গান্ধীদের কেউ প্রার্থী না হলে নরেন্দ্র মোদী যে তা প্রচারে তুলে ধরবেন, আজ তার ইঙ্গিত মিলেছে। সনিয়া গান্ধীর রায়বরেলী থেকে প্রার্থী না হয়ে রাজ্যসভা থেকে সংসদে যাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে আজ, শনিবার বিহারের ঔরঙ্গাবাদের জনসভায় মোদী বলেছেন, ‘‘আমি সংসদেই বলেছিলাম, সবাই পালাচ্ছে। আপনারা দেখছেন, এ বার লোকসভা থেকে লড়তে কেউ রাজি হচ্ছেন না। রাজ্যসভার আসন খুঁজছেন।’’
এই পরিস্থিতিতে রায়বরেলী-অমেঠী নিয়ে গান্ধী পরিবারের উপরে চাপ বাড়িয়ে এসপি সভাপতি অখিলেশ যাদব প্রকাশ্যে বলেছেন, “এখনও পর্যন্ত যা জানি, গান্ধী পরিবারেরই কেউ না কেউ অমেঠী, রায়বরেলী থেকে প্রার্থী হবেন। কংগ্রেস এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এই দু’টি আসন গান্ধী পরিবারের পুরনো, চিরাচরিত আসন।’’ উত্তরপ্রদেশে ‘ইন্ডিয়া’ র আসন সমঝোতায় এসপি কংগ্রেসকে ১৭টি আসন ছেড়েছে। অতীতে আসন সমঝোতা না হলেও এসপি গান্ধী পরিবারের প্রতি সৌজন্যের খাতিরে অমেঠী-রায়বরেলীতে প্রার্থী দিত না। সেই সময়ে সনিয়া রায়বরেলী থেকে প্রার্থী হতেন। এ বার তিনি ভোটে লড়বেন না। গত লোকসভা নির্বাচনে স্মৃতি ইরানির কাছে অমেঠীতে হেরে যাওয়ার পরে রাহুল ফের সেখান থেকে লড়বেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। তাঁর সামনে সনিয়ার ছেড়ে যাওয়া রায়বরেলী থেকে প্রার্থী হওয়ার বিকল্প থাকছে। বিজেপি আজ অমেঠীর প্রার্থী হিসেবে ফের স্মৃতির নাম ঘোষণা করলেও রায়বরেলীর প্রার্থী ঘোষণা করেনি। সনিয়ার বদলে সেখানে কংগ্রেসের কে প্রার্থী হবেন, তা দেখে নিতে চাইছে বিজেপি।
এসপি চাইছে, গান্ধী পরিবারের সদস্যই এই দু’টি আসনে লড়ুন। সে ক্ষেত্রে তাঁরা উত্তরপ্রদেশে প্রচারে অনেক বেশি সময় দিতে পারবেন। তার প্রভাব গোটা উত্তরপ্রদেশেই পড়বে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জোর মিলবে। নরেন্দ্র মোদী এ বারও উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকেই লড়বেন। সেখানে গান্ধী পরিবারের কেউই অমেঠী-রায়বরেলী থেকে প্রার্থী না হলে বিজেপি বলবে, ‘ইন্ডিয়া’র ‘বড়’ দল কংগ্রেসের প্রধান নেতারাই হিন্দি বলয়ে রণে ভঙ্গ দিয়েছেন।
গত লোকসভা নির্বাচনে রাহুল দু’টি আসনে লড়েছিলেন। অমেঠী থেকে হেরে গিয়েছিলেন। ওয়েনাড় থেকে জিতে লোকসভায় যান। কংগ্রেসের একটি সূত্রের বক্তব্য, ‘ইন্ডিয়া’র কিছু শরিক দলের মতে, বিরোধী দলের প্রধান নেতাদের একটি মাত্র আসনেই প্রার্থী হওয়া উচিত। তা হলে তাঁরা গোটা দেশে বিরোধী জোটের হয়ে প্রচারে সময় দিতে পারবেন। সেই সূত্র মানলে রাহুলকে ওয়েনাড়, অমেঠী বা রায়বরেলীর মধ্যে যে কোনও একটি আসন বেছে নিতে হয়। ওয়েনাড়ে রাহুলের লড়াই ‘ইন্ডিয়া’র শরিক বামেদের বিরুদ্ধে। ওই কেন্দ্রে সিপিআই অ্যানি রাজাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তিনি সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার স্ত্রী, দলের মহিলা সংগঠনের নেত্রী। বাম নেতাদের মতে, রাহুলের কেরলের বদলে এমন রাজ্যে প্রার্থী হওয়া উচিত, যেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির মুখোমুখি লড়াই। তেলঙ্গানার প্রদেশ কংগ্রেস রাহুলকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রের দাবি, এই বিষয়ে রাহুল নিজেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। পাঁচ দিনের বিরতির পরে রাহুলের ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ আজ রাজস্থানের ঢোলপুর থেকে শুরু হয়ে মধ্যপ্রদেশে ঢুকেছে। গোয়ালিয়রে ‘রোড শো’ করেছেন রাহুল। মধ্যপ্রদেশের পরে ন্যায় যাত্রা প্রবেশ করবে গুজরাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy