তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। —ফাইল চিত্র।
দলের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সাম্প্রতিক সময়ে সমাজমাধ্যমে নানা মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। শেষ পর্যন্ত দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে তিনি সমাজমাধ্যমে বিতর্কিত মন্তব্য করা থেকে বেশ কিছু দিন বিরত ছিলেন। এ বার লোকসভা ভোটের মুখে তাঁর ফেসবুক পোস্টে শুভেন্দু অধিকারী, নওসাদ সিদ্দিকীর মতো বিরোধী দলের নেতাদের প্রশংসা ঘিরে ফের শোরগোল পড়েছে। মনোরঞ্জন অন্য দলে ভিড়তে চান কি না, এমন জল্পনাও শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার ফেসবুক পোস্টে এই তৃণমূল বিধায়ক লেখেন, ‘দেখা হলেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হাত তুলে তাঁকে নমস্কার করেন, আলিঙ্গন করেন। তাঁকে বলেন, তাঁর মতো লোকের রাজনীতিতে থাকা একান্তই দরকার’। মনোরঞ্জনের সংযোজন, ‘এই প্রাপ্তি তো রাজনীতির জন্য। রাজনীতিতে না এলে উনি আমাকে চিনতেন না’। মনোরঞ্জন আরও লেখেন, ‘দেখা হলেই আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ তাঁকে হাত ধরে টেনে বিধানসভার ক্যান্টিনে নিয়ে যান। তাঁকে তো বটেই, তাঁর নিরাপত্তারক্ষী ও গাড়ির চালককেও চা-টোস্ট খাওয়ান। শরীর-স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন’।
এর পাশাপাশি মনোরঞ্জন লেখেন, কিছু দিন আগে বিধানসভার এক কর্মচারী তথা সিপিএম সদস্য তাঁকে জানান, কোনও এক দিন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মনোরঞ্জন যোগ করেন, ‘‘সেই যখন উনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন, তখন থেকে আমাকে চেনেন।’’
একই পোস্টে মনোরঞ্জন লিখেছেন, তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচির সময় ডুমুরদহ গ্রামে তাঁরা হেঁটে যাওয়ার সময় পিছন থেকে হঠাৎ ‘চোর’ স্লোগান ওঠে। তিনি কারণ জিজ্ঞাসা করলে স্লোগানকারীরা তাঁকে বলেন, তাঁরা তাঁকে ‘চোর’ বলেননি। বলেছেন, তাঁর সামনে হেঁটে যাওয়া লোকেদের।
রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, তাঁর সামনে থাকা লোক বলে তিনি প্রকারান্তরে দলের কিছু লোককে বোঝাতে চেয়েছেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
বিজেপির বলাগড় বিধানসভার সহ-আহ্বায়ক অলক কুণ্ডু বলেন, ‘‘বিজেপির নীতি-আদর্শ ও উন্নয়নের গতি দেখে অনেকেই বিজেপিতে আসতে চাইছেন। বিরোধী দলনেতার প্রশংসা করে উনি বিজেপির দিকে এক ধাপ পা বাড়িয়ে রাখলেন মনে হচ্ছে।’’ সিপিএম নেতা সজল মালোর বক্তব্য, ‘‘আমাদের নেতা সুজন চক্রবর্তী ওঁর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, এই কথার সত্যতা কতটা, আমার প্রশ্ন আছে। তৃণমূল বিধায়ক হতাশা থেকে এ কথা বলছেন। তাঁর ফেসবুক পোস্ট দেখে মনে হচ্ছে, তিনি অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের ডাল ধরতে চাইছেন।’’
এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে মনোরঞ্জনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওই পোস্টের কোনও উত্তর দেব না। তবে আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই আছি।’’ আর বলাগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, ‘‘বিধায়ক হয়তো সৌজন্যবশত এই বক্তব্য লিখেছেন। এতে অন্য দলে যাওয়ার কোনও বিষয় নেই। বিরোধীদের কাজ নেই, এখন ভোট এসেছে, ওঁরা নানা মন্তব্য করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy