দীপ্সিতা ধর। —ফাইল চিত্র।
তিনি লড়ছেন এক ভোটে। কিন্তু তাঁর মন পড়ে রয়েছে দেড় হাজার কিলোমিটার দূরের অন্য ভোটে। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের উঠোনে, ক্লাসরুমে, ক্যান্টিনে, হস্টেলে। তিনি সিপিএমের তরুণ নেত্রী দীপ্সিতা ধর। যাঁকে এ বার হুগলির শ্রীরামপুর লোকসভায় প্রার্থী করেছে সিপিএম।
দীপ্সিতা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) প্রাক্তনী। শুক্রবার সেখানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শেষ বার জেএনইউতে ছাত্র সংসদের ভোট হয়েছিল। বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে নিজের প্রচারের মাঝেই দীপ্সিতা জানালেন, তাঁর মনখারাপ! তিনি মিস্ করছেন পুরনো ক্যাম্পাসকে, নির্বাচনকে। কিন্তু ‘বৃহত্তর’ দায়িত্ব পালন করতে তাঁকে পড়ে থাকতে হচ্ছে শ্রীরামপুরের কঠিন লড়াইয়ে।
দীপ্সিতার কথায়, ‘‘২০১৩ সাল থেকে এই প্রথম জেএনইউয়ের ভোটে আমি থাকতে পারছি না। মিস্ তো অবশ্যই করছি।’’ তবে এ-ও জানালেন যে, সুযোগ পেলেই খোঁজ নিচ্ছেন ঐশী ঘোষ, অভিজিৎ ঘোষেদের কাছ থেকে। শেষ বার ভোটে জিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী হয়েছিলেন বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের নেত্রী ঐশী। তিনি দুর্গাপুরের মেয়ে। ২,৩১৩ ভোট পেয়ে এবিভিপির প্রার্থীকে হারিয়েছিলেন তিনি। এ বার উত্তরবঙ্গের ছেলে অভিজিৎকে সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী করেছে এসএফআই। ২০১৪ সালের ছাত্র সংসদ ভোটে এসএফআই দিল্লির এই বিশ্ববিদ্যালয়ে খাতা খুলেছিল। সে বার কাউন্সিলর পদে জয়ী হয়েছিলেন দীপ্সিতা। তাঁর সঙ্গে জিতেছিলেন এসএফআইয়ের আরও পাঁচ জন।
আশুতোষ কলেজে পড়ার সময় দীপ্সিতা এসএফআই করতেন। কিন্তু সেই সময়ে তাঁর তেমন পরিচিতি ছিল না। দিল্লিতে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যলয়ে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন করার সময়েই তাঁর পরিচিতি। ক্রমে সংগঠনে সর্বভারতীয় স্তরে জায়গা করে নেওয়া। সুবক্তা হিসাবে পরিচিতি রয়েছে বামমহলে। গত বিধানসভা ভোটে দীপ্সিতাকে বালি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল সিপিএম। তবে তাঁকে পরাস্ত হতে হয়েছিল। দীপ্সিতার বাড়ি বালি ঘোষপাড়ায়। সেই এলাকা পড়ে ডোমজুড় বিধানসভার মধ্যে। ঘটনাচক্রে, ডোমজুড় আবার শ্রীরামপুর লোকসভার অধীন।
বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে দীপ্সিতা জানিয়েছেন, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যলয়ে ভোট হতে দেখেছেন, এমন ছাত্র নেতৃত্ব বলতে এখন কেবল ঐশীই রয়েছেন। বাকিরা নতুন। তাঁরা ভোট দেখেননি। ফলে নতুন নেতা-কর্মীরাও দীপ্সিতাকে ফোন করে পরামর্শ চাইছেন। শ্রীরামপুরের প্রচারের ফাঁকে সে সব বলে দিচ্ছেন ‘দিদি’ দীপ্সিতাও।
দিল্লির রাজনীতিতে জেএনইউয়ের ছাত্রভোটের আলাদা ‘তাৎপর্য’ থেকেছে বরাবর। লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে সেখানকার ফলাফল নিয়ে যে রাজনৈতিক ভাষ্য তৈরি হবে, তা-ও বলাই বাহুল্য। দীপ্সিতাও তা মেনে নিচ্ছেন। আগামী ২৪ মার্চ জেএনইউয়ের নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে। তবে গত চার বছরে দিল্লির প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শক্তি বাড়িয়েছে অখিল সঙ্ঘের সংগঠন ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। তারা কতটা শক্তিশালী হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএফআইয়ের ভিত তারা টলিয়ে দেবে কি না, তার দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। যেখানে মন পড়ে রয়েছে শ্রীরামপুরের দীপ্সিতারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy