—প্রতীকী ছবি।
এখনও নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। এরই মধ্যে দুয়ারে হাজির কেন্দ্রীয় বাহিনী। কেন্দ্রীয় বাহিনী বা অতিরিক্ত পুলিশ থাকার জন্য অধিগ্রহণের চিঠি আসছে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। শিক্ষক মহলের আশঙ্কা, বিদ্যালয় এখনই নিরাপত্তা বাহিনীর দখলে চলে গেলে শিকেয় উঠবে লেখাপড়া। শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই জোর ধাক্কা খাবে পঠনপাঠন।
বিদ্যালয় প্রধানদের একাংশ জানান, মার্চে গরমের ছুটির আগে পর্যন্ত এই সময়টা নিরবচ্ছিন্ন লেখাপড়ার সময়। তবে লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এত আগে বাহিনী থাকার জন্য বিদ্যালয় অধিগ্রহণের চিঠি আসতে শুরু করায় কত দিন বিদ্যালয়ে পড়াশোনা হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন তাঁরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার তেহট্ট, নাকাশিপাড়া, ভীমপুর, কোতোয়ালিতে ইতিমধ্যেই বাহিনী এসে পড়েছে। কোথাও বিদ্যালয় অধিগ্রহণের চিঠি না-এলেও সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা বিদ্যালয় পরিদর্শন করে গিয়েছেন। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের পঠনপাঠনে যাতে বিঘ্ন না-ঘটে তার জন্য বিদ্যালয়গুলিতে বাহিনী না-রাখার কথা বলা হয়েছে।
বিভিন্ন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, নির্বাচনের এত আগে বিদ্যালয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে চলে গেলে পাঠ্যসূচি শেষ করা অসম্ভব হবে। এর বাইরে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী সকলকেই ভোটগ্রহণের কাজে যেতে হয়। আছে ভোটগণনা, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। পাশাপাশি প্রায় সব বিদ্যালয়ই ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হিসাবে অধিগৃহীত হয়। সব মিলিয়ে বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ আগামী কয়েক মাসে পড়ুয়াদের মিলবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
অধিগ্রহণের চিঠি পেয়েছেন কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “বিদ্যালয় না নিয়ে যে সব সরকারি ভবন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে সেগুলিতে বাহিনী রাখার ব্যবস্থা করলে পড়ুয়াদের ভাল হয়।” এই প্রসঙ্গে দেপাড়া-বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত ভট্টাচার্য বলেন, “ক্লাস না-হলে শিক্ষকদের পক্ষে সিলেবাস শেষ করা মুশকিল হবে। অথচ পর্ষদের নির্দেশিকায় বলা আছে, প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন এপ্রিলের এক তারিখ থেকে সাত তারিখের মধ্যে শেষ করতে হবে।” পাশাপাশি তিনি জানান, বিদ্যালয় বন্ধ মানে মিড-ডে-মিলও বন্ধ। গ্রামীণ এলাকার ছাত্রছাত্রীরা এতে খুব অসুবিধায় পড়ে।
বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির নদিয়া জেলা কমিটির সভাপতি কিংশুক চক্রবর্তী বলেন, “কেন প্রতিবার নির্বাচনে বিদ্যালয়ের গঠনপাঠন ক্ষতিগ্রস্ত হবে? এটা বন্ধ হওয়া উচিত বলে আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এই পদ্ধতি বছর পর বছর চলতে পারে না। বিকল্প ব্যবস্থা করতেই হবে।” তাঁর বক্তব্য ‘‘জেলায় অসংখ্য কিসান মান্ডি, সরকারি অতিথি আবাস, কমিউনিটি হল, বড় বড় ফ্লাড শেল্টার ফাঁকা পড়ে আছে। বাহিনী সেখানে রাখার ব্যবস্থা হোক।’’
বিজেপি জেলা শিক্ষক সংগঠনের আহ্বায়ক অমিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বিদ্যালয়ের পড়াশোনা বন্ধের পক্ষে নই। এই বিষয়ে আদালতেরও নির্দেশ আছে। রাজ্য সরকারের বিকল্প পরিকাঠামো নেই। তারই ফল ভোগ করতে হচ্ছে পড়ুয়াদের।” এবিটিএ-এর নদিয়া জেলা সম্পাদক সৌমেন পাল বলেনস “প্রতি বছর নির্বাচন হবে আর লম্বা সময় ধরে বিদ্যালয়শিক্ষা লাটে উঠবে, এটা কোন নীতি হতে পারে না। আমরা চাই বাহিনী অন্যত্র থাকুক।”
তৃণমূলের নদিয়া জেলা শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি রমেন ঘোষ বলেন, “এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে হয়। তাঁরা যদি একটু ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেন, তা হলে বহু স্কুলের পঠনপাঠন স্বাভবিক ভাবে চলতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy