সিএএ-র প্রতিবাদে মিছিল। নিজস্ব চিত্র
সিএএ (নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন) কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকেই এই আইনের বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুর। তিনি সিএএ বাতিলের দাবি তুলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, আইন বাতিলের দাবিতে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে শীঘ্রই পথে নেমে আন্দোলন শুরু করা হবে।
সেই মতো শুক্রবার দুপুরে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে মিছিল হয়। মতুয়া ঠাকুরবাড়ি থেকে মিছিল বেরিয়ে আশপাশের এলাকা ঘুরে শেষ হয় ঠাকুরবাড়িতেই। মিছিলে নেতৃত্ব দেন মমতা ঠাকুর। ছিলেন মতুয়া দলপতি, গোসাঁই, পাগল, ভক্তেরা। মিছিলের সামনে ব্যানারে লেখা ছিল, ‘কেন্দ্র সরকারের ভাঁওতাবাজি সিএএ আমরা মানছি না, মানব না। মতুয়াদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে। নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে।’
কী ভাবে সিএএ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন আরও জোরদার করা যায়, তা নিয়ে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে মমতা ঠাকুর এ দিন মতুয়া ভক্তদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, শুক্রবার থেকে রাজ্য জুড়ে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে আন্দোলন চলবে।
মমতা বলেন, ‘‘মতুয়াদের নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে আমার শ্বশুর (প্রথমরঞ্জন ঠাকুর) শাশুড়ি (বড়মা বীণাপাণি ঠাকুর) এবং আমার স্বামী (কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর) আন্দোলন করেছিলেন। কিন্তু সিএএ আইনে নিঃশর্ত নাগরিকত্বের ব্যবস্থা নেই। ৯টি নথিপত্র দিয়ে আবেদন করার কথা বলা হয়েছে। যা মতুয়াদের কাছে নেই। এটা বিজেপি সরকারের মতুয়াদের বে-নাগরিক করার চক্রান্ত।’’ মমতার কথায়, ‘‘আমরা ধিক্কার জানাই শান্তনু ঠাকুরকে। তিনি মতুয়াদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। মতুয়াদের গোলাম বানাতে চাইছেন। আমি বিজেপির যে ভাইয়েরা সিএএ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে আনন্দ করছেন, তাঁদের কাছে প্রশ্ন করতে চাই, আপনাদের কাছে ওই ৯টি নথিপত্র আছে তো? যদি থাকে, আবেদন করে নাগরিকত্ব কার্ড পান। আমরা আপনাদের নিয়ে আনন্দ করব।’’
মমতা ঠাকুরদের এই অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় মমতা ঠাকুর রাজনৈতিক লোভে সিএএ-এর বিরোধিতা করে প্রমথরঞ্জন ঠাকুর এবং বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের আন্দোলনকে অস্বীকার করছেন। মতুয়াদের ৭৫ বছরের আন্দোলনকে অস্বীকার করছেন।’’ শান্তনুর কথায়, ‘‘সিএএ-এর বিরোধিতা করা মানে মমতা ঠাকুর যে অস্তিত্বের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন, সেই অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা। ওঁর মতো আহাম্মক মতুয়া সমাজের মানুষের মধ্যে আর একটাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সিএএ কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় না, সিএএ নাগরিকত্ব দেয়। যাঁদের কাছে নথিপত্র নেই, তাঁরা সেলফ ডিক্লেয়ার (নিজে থেকে ঘোষণা) দিয়ে আবেদন করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy