গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
‘সন্দেশখালি স্টিং অপারেশনের’ দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ্যে এল শনিবার রাতে। আগেরটির মতো এই ভিডিয়োটিরও সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। এই ভিডিয়োতেও সন্দেশখালির দু’নম্বর ব্লকে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সেই গঙ্গাধর কয়ালকেই দেখা গেল। ৪৬ মিনিট ৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োর শুরুতেই, সন্দেশখালিতে যে মহিলারা আন্দোলন করেছিলেন তাঁদের আর্থিক সাহায্য করার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে ‘গঙ্গাধরকে’। গঙ্গাধর অবশ্য প্রথম ভিডিয়োটি ‘বিকৃত’ বলে ইতিমধ্যেই সিবিআইকে বয়ান দিয়েছেন। কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও করেছেন। শনিবার রাতে স্টিং ভিডিয়োর দ্বিতীয় পর্বটি যখন প্রকাশ্যে আসে, ঘটনাচক্রে সেই সময়ে কলকাতাতেই রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার সন্ধ্যায় এসেছেন তিনি। রবিবার রাজ্যের তিন জেলায় চারটি নির্বাচনী জনসভা করবেন।
ভিডিয়োতে যা যা শোনা যাচ্ছে
প্রশ্নকর্তা: আজকে শুভেন্দুদা টাকা পাঠানো, মোবাইল পাঠানো, সব সাপোর্ট দিচ্ছে...
গঙ্গাধর: সত্যিই খালি হাতে হবে না এ সব। আমরা নয় দীর্ঘ দিন করে আসছি। আমরা মেনে নিতে পারব। কিন্তু সবাই তা করতে পারবে না।
প্রশ্নকর্তা: আপনারা তো হাতে গুনে ১০ জন।
গঙ্গাধর: হ্যাঁ ১০ জন, ১০ জন। ১০ জনের বেশি পাওয়া যাবে না সন্দেশখালিতে। এক টাকা ছাড়া তারা কথা বলবে না। আমি তো নিজে বুঝতে পারছি। যতই পুরনো কার্যকর্তা হোক। জেলার নেতাদের দেখতে পাচ্ছেন? তাদের দেখতে পাবেন না।
প্রশ্নকর্তা: ওরা দেখছে, কয়াল উঠে যাচ্ছে! তা হলে আমরা কেন পিছনে পড়ে থাকব? শুনুন চেয়ারে বসতে গেলে মাঠে খাটতে হবে।
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, চেয়ারে বসতে গেলে মাঠে খাটতে হবে। ওদের ঈর্ষা হচ্ছে কারণ আমি সংগঠনকে দাঁড় করাচ্ছি।
প্রশ্নকর্তা: তবে আপনার কাজ নিয়ে কিন্তু দাদা খুব খুশি...
গঙ্গাধর: (হাসি)
প্রশ্নকর্তা: এ বার আমাকে কতগুলি হিসাব দিন। যে সব মহিলা আন্দোলন করেছেন, তাঁদের আগে সাপোর্ট করা দরকার। কারণ তাঁরা জ্বলেছে... এঁদেরকে সামলে রাখতে হবে। এঁদের মধ্যে কত জন এখনও পর্যন্ত টাকা পেয়েছেন? কত হবে সংখ্যাটা?
গঙ্গাধর: ৭২ জন টাকা পেয়েছেন।
প্রশ্নকর্তা: এক বার পেয়েছেন, না দু’বার?
গঙ্গাধর: এক বারই পেয়েছে।
প্রশ্নকর্তা: মোবাইল পেয়েছে কেউ?
গঙ্গাধর: না, মোবাইল পায়নি।
প্রশ্নকর্তা: ও দিকে তো মোবাইল পেয়েছে?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, ওই শান্তনুদের এলাকায় মোবাইল পেয়েছে। আমার এলাকায় কেউ পায়নি।
প্রশ্নকর্তা: আন্দোলন জারি রাখতে গেলে মোবাইলের প্রয়োজন আছে?
গঙ্গাধর: আছে, আছে। খান দশেক দিলে ভাল হয়। ১০টা দিলে কাজ হয়ে যাবে।
প্রশ্নকর্তা: এ রকম হবে না তো যে এক জনকে দিলে, অন্য জন মুখভার করে বসে রইল..
গঙ্গাধর: না, সে রকম হবে না। জানতে দিলে হবে না।
প্রশ্নকর্তা: ৭২ জনকে ২ হাজার করে দেওয়া হয়েছে?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, ২ হাজার। শান্তনু বলেছিল, লিকুইড ক্যাশ ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এনভেলপের ভিতরে কী ছিল বলেনি।
প্রশ্নকর্তা: পাঁচ হাজার টাকা করে ও মহিলাদের দিয়েছিল।
দু’জনেই: জেলিয়াখানি, বেড়মজুর ১ ও ২-তে দিয়েছিল।
প্রশ্নকর্তা: আপনার মিনিমাম কত হলে চলতে পারে? আপনার কত লাগবে?
গঙ্গাধর: এক লাখ হলে চলে যাবে।
প্রশ্নকর্তা: এই খরচাগুলো পার্টিই দেবে। ধরুন এখানে ১০টা বাইক লাগবে...
গঙ্গাধর: তাদের তেল ভরে দিতে হবে। টিফিন থেকে শুরু করে অন্যান্য খরচ। অনেক কিছু দিতে লাগে তো। মদের খরচও আছে।
প্রশ্নকর্তা: লুকিয়ে-চুরিয়ে বলার কোনও কারণ নেই।
গঙ্গাধর: এ বার ধরুন কোরাকাটিতে বৈঠক আছে। সেখানে আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপার আছে। আমিই মূল লোক। আমার কিছু হয়ে গেলে নির্বাচন শেষ। ১০টা ছেলে আমাকে এসে নিয়ে যাবে। তাদের তেল না দিলে আসবে?
প্রশ্নকর্তা: সব জোগান দিতে হবে।
গঙ্গাধর: কারও হয়তো মোবাইলে পয়সা ভরে দিতে হবে। এগুলোও দিতেই হবে। দিয়েছি তো আমি।
প্রশ্নকর্তা: আগের দিন আপনার সঙ্গে কথা হল যে বিষয়ে। মোটামুটি ৫০ জন মহিলাকে...
গঙ্গাধর: মোটামুটি ৫০ জন মহিলাকে সাপোর্ট দিতে পারলে আমাদের আন্দোলন আরও দাঁড়িয়ে যাবে এবং সংগঠন আরও মজবুত হবে। আমি একটা তালিকা তৈরি করে আপনাদের হোয়াট্সঅ্যাপ করে দেব।
প্রশ্নকর্তা: না না, হোয়াট্সঅ্যাপ নয়। কোথা থেকে কী ভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছে, কেউ জানেন না। এর থেকে আমাদের হাতে লিখে নিলাম। আপনারও ঝামেলা থাকল না, আমাদেরও থাকল না। হোয়াট্সঅ্যাপে পাঠালে প্রমাণ থেকে যাবে। ভোট পর্যন্ত আপনার মোট কতটা পরিমাণ মদ লাগবে? মহিলাদের এবং পুরুষদের জন্য আলাদা করে বলুন?
গঙ্গাধর: আদিবাসী এলাকায় বেশি লাগে। তফসিলি এলাকায় একটু কম। তিনটে অঞ্চলে প্রায় ৫০টি বুথ রয়েছে। সন্দেশখালিতে ১০টি বুথ রয়েছে। সেখানে বেশি মদ লাগবে। এখানে তফসিলি উপজাতি বেশি। মুসলিমরা সংখ্যায় ৩০০ জনের মতো।
প্রশ্নকর্তা: আপনার মণ্ডলে ভোটের দিন পর্যন্ত কতটা কী লাগবে বলুন?
গঙ্গাধর: (খানিক ক্ষণ ভেবে) আমার তো ওই ভাবে ধারণা নেই।
প্রশ্নকর্তা: তা-ও আন্দাজে একটু বলুন। এখন থেকেই বাজেট না করলে শেষ মুহূর্তে সামলে উঠতে পারব না।
গঙ্গাধর: তা-ও বুথ-প্রতি ৫ হাজার করে ধরুন।
প্রশ্নকর্তা: তার মানে ৫০টি বুথে আড়াই লক্ষ টাকা। এর মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা কত থাকবে?
গঙ্গাধর: ধরুন ৩০ শতাংশ মহিলা এবং ৭০ শতাংশ পুরুষ।
প্রশ্নকর্তা: এই মহিলাদের মধ্যে কি আমাদের আন্দোলনকারী মহিলারাও থাকবেন?
গঙ্গাধর: আন্দোলনকারী মহিলারা তো সকলে মদ্যপান করে না।
প্রশ্নকর্তা: যারা খাচ্ছে, তারাও আন্দোলনকারীদের মধ্যে থাকবেন তো? খরচও ওর মধ্যেই ধরা হচ্ছে তো?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, তারা থাকবেই। তবে আলাদা আলাদা। পুলিশের সামনে তারা আসবে না। পুরুষরা পিছন থেকে সাহায্য করবে।
গঙ্গাধর: পাঁচ হাজার টাকাটা অনেক কম বলেছি আপনাকে। সবাইকে বলেছি, অন্তত প্রথম লোকসভাটা জেতাও। পরে বিধানসভার ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা। আপনারা রয়েছেন যখন, তখন আমার একটু সুবিধা হয়ে যাবে।
প্রশ্নকর্তা: আপনার কোরাকাটি আর মণিপুরের জন্য অস্ত্র লাগবে...
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, কোরাকাটি আর মণিপুরের জন্য। সন্দেশখালিতে আমার লাগবে না।
প্রশ্নকর্তা: কী ধরনের অস্ত্র লাগবে? পিস্তল, বোমা, কী ধরনের?
গঙ্গাধর: পিস্তলই লাগবে বেশি।
প্রশ্নকর্তা: ক’টা পিস্তল লাগবে?
গঙ্গাধর: কোরাকাটির জন্য ৩০টা আর মণিপুরের জন্য ২০টা। ৫০টা হলে ঠিক আছে।
প্রশ্নকর্তা: পিস্তল যাদের হাতে দেবে, তারা ব্যবহার করতে পারবে তো?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, এরা অভ্যস্ত। কোরাকাটি আর মণিপুরের ওরা অভ্যস্ত। কিন্তু সন্দেশখালিতে বিজেপির কেউ সে ভাবে অভ্যস্ত নয়।
প্রশ্নকর্তা: ম্যানপাওয়ার আপনার কাছে আছে...
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, ম্যানপাওয়ার আছে।
প্রশ্নকর্তা: বোম লাগবে?
গঙ্গাধর: না, বোম লাগবে না। এই হলেই হবে।
প্রশ্নকর্তা: কার্তুজ ক’টা লাগবে?
গঙ্গাধর: ৩০টা চালাতে গেলে ধরুন... এগুলো কী পর্যায়ে আছে? কোনওটায় ৬টা থাকে, কোনওটায় আবার সিঙ্গল থাকে। সব ছ’টা করে?
প্রশ্নকর্তা: হ্যাঁ।
গঙ্গাধর: ধরুন ১২টা করে দেবেন। সব মিলিয়ে ৩৬০। না হলে ২৪০। ডবল না থাকলে মুশকিল।
প্রশ্নকর্তা: কাজ হওয়ার পর কিন্তু মাল ফেরত দিতে হবে। নইলে চাপ আছে। পরে যদি এই মাল পাওয়া যায়, তা হলে কিন্তু...
গঙ্গাধর: আমাকে আবার ওদের আলাদা ভাবে ডাকতে হবে।
প্রশ্নকর্তা: এই ৩০ আর ২০ জন লোককে ৩-৪টি দলে ভাগ করে দিতে হবে। মাথায় এক জন থাকবে। তারই দায়িত্ব হবে ভাগ করে দেওয়ার আর আবার সময় মতো সংগ্রহ করে ফিরিয়ে আনার। যদি ফায়ারিং হয়, তা হলে নষ্ট করে দিতে হবে। কারও হাতে যাতে না পড়ে...
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, নষ্ট করে দিতে হবে।
প্রশ্নকর্তা: তা হলে দাঁড়াল, ৩০ আর ২০টা পিস্তল হলেই কাজ হয়ে যাবে। আর আপনার মোটামুটি এক লক্ষ টাকা হলেই যাবে। আর প্রতি বুথে যদি পাঁচ হাজার টাকার মদ দেওয়া হয়, তা হলে মহিলা-পুরুষ সবারই মোটামুটি কাজ হয়ে যাবে। মহিলাদের আর কোনও ডিমান্ড?
গঙ্গাধর: ডিমান্ড বলতে এই পাঁচটা বুথে যারা আন্দোলন করল, তাদের আর্থিক দিকটা দেখলে ভাল হয়।
প্রশ্নকর্তা: আন্দোলনকারীদের আন্দোলন করার জন্য আগে যে টাকাপয়সা দেওয়া হচ্ছিল, সেটা এখন বন্ধ হয়েছে। সেটা আবার রানিং হলে ভাল হয়, তাই তো?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ। আপনারা ফোন করতে পারবেন?
প্রশ্নকর্তা: হ্যাঁ, পারব তো।
গঙ্গাধর: আমি গিয়ে শুধু সংগঠনের কথা বলব।
প্রশ্নকর্তা: সেটাও আপনি ওখানে গিয়ে নয়। ডেকে এনে। আলাদা আলাদা করে।
গঙ্গাধর: সংগঠনের বিষয়েই আমি বেশি বলব। ও সব কথা কম।
প্রশ্নকর্তা: তবে এটা যেন ওদের মাথায় ঢোকে যে, এটা আপনার মাধ্যমে হচ্ছে। এটা যেন ওরা বুঝতে পারে। তা না হলে তো ভাববে কে না কে দিয়ে গেল! এটা হলে তো হবে না।
প্রশ্নকর্তা: আমাকে দাদা আপনি যতটা পারবেন নাম এবং নম্বরের তালিকা দিন। আমাদের ধীরে ধীরে তাদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করতে হবে।
গঙ্গাধর: হ্যাঁ।
প্রশ্নকর্তা: দাদা একটা সিগারেট খেতে পারি?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ। অঞ্জলি সিংহ।
প্রশ্নকর্তা: আচ্ছা, টাকাপয়সা দেওয়ার পরে এরা মিটিং-মিছিল আন্দোলনে আসবে তো? আর একটা জিনিস দাদা। এটা বলা খুব দরকার। এই এখন যখনই বিডিও ঢুকছে, এসডিও ঢুকছে, এমএলএ-মন্ত্রীরা আসছে, এই সময় কিন্তু এদেরকে বাজে কিছু নয়, ঘিরে ধরে বিক্ষোভ শুধু। এত দিন আপনারা আসেননি কেন? আপনারা তো এখান থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকেন। আপনারা আগে আসেননি কেন? ছোট নেতা, বড় নেতা, যে-ই আসুন না কেন, ঘিরে ধরে ইস্যু তৈরি করতে হবে।
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, ইস্যু তৈরি করতে হবে।
গঙ্গাধর: অঞ্জলি সিংহ (ফোন নম্বর), মামনি সিংহ (ফোন নম্বর), লতিকা সিংহ (ফোন নম্বর), কালোমতি সিংহ (ফোন নম্বর)।
প্রশ্নকর্তা: কারা কোন পাড়ার, সেটাও বলে দেবেন।
গঙ্গাধর: সিংহপাড়া।
প্রশ্নকর্তা: পুরোটাই সিংহপাড়া চলছে, তাই তো? সিংহপাড়া শেষ হলে আমায় বলবেন।
গঙ্গাধর: হ্যাঁ। সীমা সিংহ (ফোন নম্বর), শ্রাবন্তী সিংহ (ফোন নম্বর), শিবানী সিংহ (ফোন নম্বর), মালতী সিংহ (ফোন নম্বর), গীতা সিংহ (ফোন নম্বর)।
প্রশ্নকর্তা: সিংহপাড়া শেষ হল?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, সিংহপাড়ার এই ক’জন ছিল।
প্রশ্নকর্তা: কেন বলুন তো, যখন ডিস্ট্রিবিউট করা হবে, তখন পাড়া ধরে ধরে করা হবে। বেশি লোক জড়ো করলে কিন্তু পুলিশের চোখে পড়ে যাবে।
গঙ্গাধর: তনিমা সর্দার।
প্রশ্নকর্তা: এটা কি অন্য পাড়া?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, এটা সন্দেশখালির পোলপাড়া। তনিমা সর্দার (ফোন নম্বর), অলোকা আরি (ফোন নম্বর)।
প্রশ্নকর্তা: অলোকা আরি কি এসসি?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ। সন্ধ্যারানি সর্দার (ফোন নম্বর), পুলটি পাত্র (ফোন নম্বর), শ্যামলী পাত্র (ফোন নম্বর), শুক্লা সিংহ। এটা সন্দেশখালির মাঝেরপাড়া।
প্রশ্নকর্তা: এটা পোলপাড়া শেষ হয়ে গেল। এ বার সন্দেশখালি মাঝেরপাড়া।
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, সন্দেশখালির মাঝেরপাড়া।
প্রশ্নকর্তা: সব থেকে বেশি নাম মনে হয় এই সন্দেশখালি থেকেই বেরিয়েছে?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, সন্দেশখালি থেকেই। শুক্লা সিংহ। এর নম্বর নেই কোনও। মায়া দে (ফোন নম্বর)। এক জন সাংঘাতিক মহিলা। মুখ খুলতে পারে বিশাল। আপনারা যদি মায়ার সঙ্গে এক বার কথা বলতে পারেন, তা হলে লড়িয়ে দিতে পারবেন। তৈরি করতে হবে।
গঙ্গাধর: ভাদ্রি সিংহ (ফোন নম্বর)। এদেরকে প্রচারে পাঠাব ভাবছিলাম। আপনারা একটু সহযোগিতা করবেন। করবী মিস্ত্রি। এর নম্বর নেই।
গঙ্গাধর: শেফালি দাস।
প্রশ্নকর্তা: আচ্ছা, এদের স্বামীরা এদের সাপোর্ট করছে তো?
গঙ্গাধর: একদম। স্বামী-স্ত্রী আন্দোলনে। কেস খেয়েছে না! স্ত্রীও কেস খেয়েছে, স্বামীও কেস খেয়েছে।
প্রশ্নকর্তা: শেফালি দাসের নম্বরটা বলো?
গঙ্গাধর: (ফোন নম্বর)। এইটুকু। নম্বর মিসটেক না কি? ন’টা আছে এই নম্বরটায়। ঠিক আছে। ওই একই জায়গার মধ্যে আমরা পেয়ে যাব নাম।
প্রশ্নকর্তা: আচ্ছা এদের কোন পাড়া হল?
গঙ্গাধর: এটা মাঝেরপাড়া চলছে। যেখানে শুভেন্দুদার অফিস। আরও নাম আছে। ওরা এখনও দিতে পারেনি।
প্রশ্নকর্তা: মাঝেরপাড়া চলছে এখনও?
গঙ্গাধর: মাঝেরপাড়া শেষ হল।
প্রশ্নকর্তা: এর মধ্যে কারা কারা টিভির সামনে এসেছে?
গঙ্গাধর: মায়া দে এসেছে।
প্রশ্নকর্তা: কেন বলুন তো, ওরা যে হেতু চিহ্নিত। তাই ওদের দিকে আমাদের একটু বেশি নজর দিতে হবে।
গঙ্গাধর: হ্যাঁ ঠিকই।
গঙ্গাধর: একটু গ্যাপ রাখুন। এ বার অন্য পাড়ার নাম বলব।
গঙ্গাধর: পাপিয়া দাস (ফোন নম্বর)। কাঞ্চন সর্দার (ফোন নম্বর)। বন্দনা সর্দার (ফোন নম্বর)। রুমা সর্দার (ফোন নম্বর)। প্রতিমা সর্দার (ফোন নম্বর)। ঊর্মিলা সর্দার (ফোন নম্বর)। সিমলা সর্দার। এর নম্বর নেই। এরা সবাই সন্দেশখালি কাটখালি নতুন পাড়ার। এটা হয়ে গেল।
গঙ্গাধর: কত জনের নাম হল?
প্রশ্নকর্তা: আমাদের এখনও পর্যন্ত হল এ দিকে আট আর ও দিকে ১৯। মোট ২৭ জন।
গঙ্গাধর: এক জনকে দিতে বললাম। তা সে আর দিতেই পারল না।
প্রশ্নকর্তা: শোভারানি সর্দারের নম্বর?
গঙ্গাধর: শোভারানি সর্দার (ফোন নম্বর)। প্রমীলা সর্দার (ফোন নম্বর)। সন্ধ্যারানি সর্দার।
প্রশ্নকর্তা: সন্ধ্যারানির নাম আগেও আছে।
গঙ্গাধর: এগুলির একটি দ্বিতীয় তালিকা তৈরি করা ছিল।
পাশ থেকে এক মহিলা বলে উঠলেন, “তোমার এখানে ওই এক পাত্র, তাঁর নম্বর দিয়েছ?”
গঙ্গাধর: হ্যাঁ।
গঙ্গাধর: অষ্টমী সর্দার (ফোন নম্বর)। এটা পোলপাড়ার হচ্ছে। সুচিত্রা সর্দার (ফোন নম্বর)। স্বপ্না পরমান্ন (ফোন নম্বর)।
(এর পরেই বেজে ওঠে গঙ্গাধরের ফোন। ফোন ধরে কথা বলা শুরু করেন গঙ্গাধর)
গঙ্গাধর: হ্যালো!
ফোন লাউড স্পিকারে: দাদা ভাল আছেন?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ ভাল আছি। বলুন, বলুন।
ফোন: কোথায় আছেন?
গঙ্গাধর: বাড়িতে আছি।
ফোন: ও, সন্দেশখালি আসেননি না?
গঙ্গাধর: না, সন্দেশখালি যাইনি আজকে।
ফোন: ও আচ্ছা। খবর সব ভাল তো চারিদিকে।
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, খবর সব ভাল আছে। আমি আপনাকে একটু পরে করছি। একটু কাজ করছি তো।
ফোন: আমাদের প্রার্থী কোন দিকে আছে এখন?
গঙ্গাধর: আজকে ওই বাদুড়িয়ার দিকে আছেন। হিঙ্গলগঞ্জের আর একটা পার্ট আছে, যেটা ওই পার্টে আছে।
ফোন: আমাদের দিকে আসবে কবে?
গঙ্গাধর: আমাদের দিকের শিডিউল এখনও দেয়নি। আমাদের লোকসভা কনভেনার এসেছেন। শিডিউল তো হচ্ছে। জানিয়ে দেবে। ঠিক আছে।
ফোন: ঠিক আছে।
(ফোন কেটে দিলেন গঙ্গাধর। ফের বলা শুরু করলেন।)
গঙ্গাধর: কী নাম বললাম?
প্রশ্নকর্তা: স্বপ্না।
গঙ্গাধর: স্বপ্না পরমান্ন (ফোন নম্বর)।
গঙ্গাধর: স্বপ্না পরমান্ন (ফোন নম্বর)। বৈশাখী সর্দার (ফোন নম্বর), অনিমা সর্দার (ফোন নম্বর), পুষ্পরানি সর্দার (ফোন নম্বর)।
প্রশ্নকর্তা: পুষ্পরানির নম্বর ন’টা হচ্ছে।
গঙ্গাধর: এটায় মনে হয় মিসটেক আছে।
গঙ্গাধর: আরতি মাইতি (ফোন নম্বর)। এটা হচ্ছে শিবু হাজরা। মানে এদের জমি সব জবরদখল করেছিল।
গঙ্গাধর: মানসী সাঁতরা (ফোন নম্বর)। মৌসুমি দাস। এর নম্বর নেই। টুম্বা পাত্র (ফোন নম্বর)। সুলতা দাস (ফোন নম্বর)। সারতি দাস (ফোন নম্বর)। অনামিকা দাস (ফোন নম্বর)।
প্রশ্নকর্তা: ওই যে এক জন বললেন, খুব আন্দোলন করেছে। বীণা না কী নাম বললেন?
গঙ্গাধর: বীণা মাইতি।
প্রশ্নকর্তা: ও কোথাকার?
গঙ্গাধর: পাত্রপাড়া। ওই একদম হচ্ছে আপনার রেখা যেখানে প্রার্থী।
প্রশ্নকর্তা: আমার তা হলে এখানে প্রায় ৫০টা হয়ে আসল।
গঙ্গাধর: লতিকা সিংহ। ওর নাম নেই। লতিকা সিংহ, ওটা সিংহপাড়ার মধ্যে রয়েছে।
গঙ্গাধর: দু’একটা একটু গরিব ছেলে রয়েছে। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ করছে।
প্রশ্নকর্তা: ছেলে? ছেলেদের নাম আলাদা লিখছি। ৪০ নম্বরে আপনার লতিকা সিংহ। লতিকা সিংহের নম্বর আছে?
গঙ্গাধর: লতিকা সিংহের নম্বর নেই।
প্রশ্নকর্তা: এ বার বলুন আপনার ছেলেদের কারা অ্যাকটিভ রয়েছে?
গঙ্গাধর: এ বারে হচ্ছে আমি যে ক’টা দিয়েছি, সব তো ওর থেকে।
প্রশ্নকর্তা: আপনাদের এখানে গিরি রয়েছে? গিরি?
গঙ্গাধর: হ্যাঁ। গিরিটাই উল্টোপাল্টা করেছে কিছু।
প্রশ্নকর্তা: জানেন কত টাকা পাঠিয়েছে ওর কাছে?
প্রশ্নকর্তা: জানেন কত টাকা পাঠিয়েছে ওর কাছে শুভেন্দুদা? নয়ছয় করেছে।
গঙ্গাধর: হ্যাঁ, নয়ছয় করে দিয়েছে (একটু হেসে)। আমি চাইছি আমাকে একটু সরাসরি কাজে লাগাক। আমার কাছে দিতে হবে না, কিন্তু...
প্রশ্নকর্তা: সব হবে। আপনি চিন্তা করবেন না। আপনার যেটা দরকার সেটাও হবে, বাকিগুলোও হবে।
গঙ্গাধর: দেখে দেবেন।
প্রশ্নকর্তা: দাদা গিরির কাছে অনেক কিছু পাঠিয়েছে।
গঙ্গাধর: কিন্তু ওর কাছে একটা পরিষেবা রয়েছে।
প্রশ্নকর্তা: অনেক কিছু। ফোন মনে হয় প্রায় ১৪টা।
গঙ্গাধর: যেখানে আমি ফোন পেয়েছি। বুঝতে পারছেন। শান্তনু ফোন পেয়েছে। আমি তো অবাক হয়ে গেলাম।
প্রশ্নকর্তা: শান্তনু দুটো চেয়েছে।
গঙ্গাধর: ও দুটো পেয়েছে। শান্তনু বলেছে ও ভাল ছেলে এবং আমার সঙ্গে একদম সুন্দর কোঅপারেশন।
প্রশ্নকর্তা: দুটো নয়, চারটে। চারটে ফোন, দুটো পাওয়ার ব্যাঙ্ক।
গঙ্গাধর: আর দশটার মধ্যে আমি একটা ব্যবহার করব। আপনাকে বলেই দিচ্ছি।
প্রশ্নকর্তা: হ্যাঁ।
গঙ্গাধর: না, আমি বলেকয়ে নেব। আমি কী পরিষেবা পেয়েছি আপনি ভাবুন। যেখানে আমার আন্দোলন, যেটা ভারতবর্ষে প্রথমে মোদী সাহেব ইস্যু করে শুরু করছে সন্দেশখালি, ফিনিশিং সন্দেশখালি।
প্রশ্নকর্তা: একদম।
গঙ্গাধর: আর সেই জায়গা থেকে আমি করুণ অবস্থার মধ্যে রয়েছি।
প্রশ্নকর্তা: আর এটা হচ্ছে দ্বিতীয় নন্দীগ্রাম।
গঙ্গাধর: দ্বিতীয় নন্দীগ্রামের থেকে বড় আন্দোলন। যেটা ভারতবর্ষের বুকে সেরা আন্দোলন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy