Advertisement
Back to
DYFI

কংগ্রেস কি থাকবে, প্রশ্ন সিপিএমের যুব কর্মশালায়

কংগ্রেসের এই ‘দোদুল্যমানতা’য় অস্বস্তি বাড়ছে বাম শিবিরে। তারই প্রতিফলন ধরা পড়ল যুব সিপিএমের নির্বাচনী কর্মশালায়।

DYFI

ডিওয়াইএফআইয়ের নির্বাচনী কর্মশালা। কলকাতায় হরেকৃষ্ণ কোঙার ভবনে। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:২৪
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনের আগে হাতে সময় বেশি নেই। রাজ্যে আসন সমঝোতার জন্য প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে রাজ্য সিপিএমের বার্তা বিনিময় চলছে। আবার এরই মধ্যে দিল্লি থেকে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে দাবি করা হচ্ছে, সমঝোতার ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা চলছে। কংগ্রেসের এই ‘দোদুল্যমানতা’য় অস্বস্তি বাড়ছে বাম শিবিরে। তারই প্রতিফলন ধরা পড়ল যুব সিপিএমের নির্বাচনী কর্মশালায়। জেলার যুব নেতৃত্ব প্রশ্ন তুললেন, কংগ্রেস কি শেষ পর্যন্ত বামেদের পাশে থাকবে? নাকি আবার ডিগবাজি খেয়ে শাসক তৃণমূলের হাত ধরবে?

দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিকে নিয়ে কলকাতায় শুক্রবার ছিল ডিওয়াইএফআইয়ের নির্বাচনী কর্মশালা। সিপিএমের কৃষক সভার রাজ্য দফতরে অনুষ্ঠিত ওই কর্মশালায় ছিলেন যুব সংগঠনের রাজ্য স্তর এবং জেলা নেতৃত্বের প্রতিনিধিরা। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কোন কোন বিষয়ে উপরে জোর দিতে হবে, সাংগঠনিক প্রস্তুতি কেমন হবে, সে সব নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়ে বামেদের আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে গেলেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তৃণমূল ও কংগ্রেসের ফের কথার খবর সামনে এসেছে। সিপিএম সূত্রের খবর, সংবাদমাধ্যমের ওই খবরের প্রসঙ্গ তুলেই কর্মশালায় একাধিক জেলার যুব প্রতিনিধিরা প্রশ্ন তুলেছেন, কংগ্রেসের কি সঙ্গে কি আদৌ সমঝোতা হবে? এই পরিস্থিতিতে বামেদের ভূমিকাই বা কী হবে? উত্তরে সেলিম বলেছেন, ‘হাওয়া’য় কী খবর ভাসছে, সে সব নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। কংগ্রেস তাঁদের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে বার্তা দিয়েছে। অন্য কোনও সিদ্ধান্তের কথা তারা এখনও জানায়নি। আপাতত এই নিয়ে ভাবিত না হয়ে বামেদের কাজ হবে ‘মাটি শক্ত’ করে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া। নিজেদের সংগঠন শক্তিশালী করায় জোর দিতে হবে। যাতে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য বামেরা তৈরি থাকতে পারে।

তৃণমূলের সঙ্গে জোট-চর্চার খবরে অস্বস্তি ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরেও। বাংলায় কংগ্রেসের জন্য দু’টির বাইরে তৃতীয় আসন দূরবীন দিয়েও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না বলে যে মন্তব্য তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন করেছেন, তার প্রেক্ষিতে প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের আসন না খুঁজে আপনি বরং দেখুন দূরবীনে সন্দেশখালি দেখা যাচ্ছে কি না!’’ প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক সুমন রায় চৌধুরীরও মন্তব্য, ‘‘বাংলায় জোটের ব্যাপারে যা বলার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীই বলবেন। তবে ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারি, রাজ্যের কংগ্রেস কর্মীরা দুর্নীতিগ্রস্ত ও কালিমালিপ্ত কোনও দলের সঙ্গে জোট চান না!’’

ডিওয়াইএফআইয়ের কর্মশালায় ঠিক হয়েছে, বিজেপি ও তৃণমূলের কাজকর্মকে বিঁধেই প্রচার চালাতে হবে। কারও প্রতি ‘নরম’ হওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। বিজেপির বিরুদ্ধে শুধু সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ বা ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তায় আটকে না থেকে তাদের অর্থনীতির বিপদকে বেশি করে তুলে ধরতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে, সঙ্ঘ-বিজেপি যে রাষ্ট্র তৈরি করতে চায়, সেখানে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া, সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন।

কর্মশালার পরে এ দিনই সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার এবং মুর্শিদাবাদে আইন অমান্য কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে ধৃত বাম কর্মী-সমর্থকদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে কলকাতায় পথে নেমেছিল বাম যুব, ছাত্র ও মহিলা সংগঠনগুলি। মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে প্রমুখ। মিছিলে শামিল হয়েছিলেন ‘নিহত’ ছাত্র নেতা আনিস খানের বাবা সালেম খানও। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বাজেটে শিক্ষা কর্মসংস্থানের ‘দিশাহীনতা’র প্রতিবাদও করা হয়েছে মিছিল থেকে। পুলিশি আপত্তি না মেনেই কিছু ক্ষণ ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং অবরোধ করেন বাম নেতা-কর্মীরা। মীনাক্ষীর অভিযোগ, ‘‘সন্দেশখালিতে রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের আয়োজনে দুর্নীতি, সন্ত্রাস হয়েছে। সহায়কের ভূমিকায় ছিল বিজেপি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

DYFI Congress Lok Sabha Election 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy