ভোটের দিনেও বৃষ্টি হলে ভোটদানের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
দমদমে বৃহস্পতিবার রাতভর বৃষ্টি হওয়ার পরে শুক্রবার বেলার দিকে তা থামলেও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না রাজনৈতিক দলগুলির কর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বৃষ্টি বেশি মাত্রায় হলে ভোট দানে তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। শুক্রবার বেলার দিকে বৃষ্টি থামায় সাময়িক স্বস্তি ফিরলেও আকাশের দিকেই তাকিয়ে আছেন সকলে। রাতের বৃষ্টিতে রাস্তায় জল তেমন না জমলেও কিছু বুথ এবং সংলগ্ন এলাকায় জল-কাদার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখানে এখন হাঁটাচলা করাই কঠিন। সকাল থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে প্রশাসন। তবু আশঙ্কা যাচ্ছে না।
উত্তর দমদমের শ্যামাপ্রসাদ নগর হাইস্কুলে এ বার মডেল বুথ তৈরি করা হয়েছে। ভোটারদের জন্য জলসত্র, মহিলা ও প্রবীণদের জন্য আলাদা বসার জায়গা থেকে সেলফি জ়োন— সব কিছুই প্রায় তৈরি। তবে, বৃষ্টির জেরে ভোটারদের দাঁড়ানোর জায়গা এখন জল-কাদায় মাখামাখি। যা দেখে মাথায় হাত প্রশাসনের! উত্তর দমদম পুরসভার এক পুরপ্রতিনিধি জানালেন, বৃষ্টিতে মডেল বুথ প্রস্তুত রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আপাতত স্কুল প্রাঙ্গণে জমে থাকা জল বার করা হয়েছে। কাদার উপরে কাঠের পাটাতন ফেলা হচ্ছে। যাতে ভোটারদের কোনও অসুবিধা না হয়।
তবে, ফের বৃষ্টি হলে সমস্যা বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন স্থানীয়দের একাংশ। এ দিন সকাল থেকে বৃষ্টিতে কয়েকটি বুথের ত্রিপল ও বাঁশের কাঠামো ভেঙে গিয়েছে। দমদমের শেঠবাগান আদর্শ বিদ্যামন্দিরে ভোটারের সংখ্যা প্রচুর। তাঁদের যাতে রোদের মধ্যে দাঁড়াতে না হয়, সে জন্য স্কুলের সামনে ত্রিপল দিয়ে ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল। সেই ত্রিপলের বেশ কিছুটা অংশ ছিঁড়ে গিয়েছে। শুধু ওই বুথেই নয়, অধিকাংশ বুথেই ছাউনির এমন অবস্থা বলে জানালেন কয়েক জন ভোটকর্মী।
রাজনৈতিক দলগুলির কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, ভারী বৃষ্টি হলে রাস্তা সংলগ্ন যে সমস্ত স্কুলে বুথ তৈরি হয়েছে, সেখানে খুব একটা অসুবিধা হবে না। কিন্তু কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে এবং দমদম স্টেশন থেকে বিরাটি রেললাইন সংলগ্ন এলাকাগুলি যে হেতু নিচু, তাই সেখানকার বুথগুলিতে কিছুটা সমস্যা দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টিতে দমদমের জ’পুর-সহ বেশ কিছু এলাকায় জল জমেছিল। সেই সব জায়গায় ভোটের দিন ভারী বৃষ্টি হলে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে বাসিন্দাদের একাংশের অনুমান। তবে, স্থানীয় পুরসভাগুলির খবর, বৃষ্টি হয়ে জল দাঁড়িয়ে গেলে দ্রুত বার করে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
আজ, শনিবার, ভোটের দিনেও বৃষ্টি হলে ভোটদানের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তৃণমূল নেতা প্রবীর পাল জানান, এমনিতেই একটি অংশের ভোট দানে অনীহা থাকে। তার উপরে বৃষ্টি হতে থাকলে সেই অংশ আদৌ ভোট দিতে যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে তাঁদের আশা, আবহাওয়া ভাল থাকলে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে মানুষ অনেক বেশি সংখ্যায় ভোট দিতে যাবেন।
এ দিন সকালেই দমদমের তিন পুর এলাকার বুথগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান এবং পুলিশকর্মীরা পৌঁছে গিয়েছেন। সন্ধ্যার মধ্যে ভোটকর্মীরাও পৌঁছেছেন সেখানে। তাঁদের একাংশ আবার কিছু ভোট সামগ্রী হাতে না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
দমদমের ভোটকর্মীদের পানিহাটির গুরু নানক ডেন্টাল কলেজ থেকে ভোটের সামগ্রী আনতে হচ্ছে। কয়েক জন ভোটকর্মী জানালেন, ভোটের সামগ্রী নেওয়ার সময়ে তাঁরা দেখেছেন, তালিকায় যা যা আছে, ব্যাগে তার সব কিছু নেই। যেমন, মক পোল স্ট্যাম্প, মেটাল সিল, ভোটার স্লিপ। কোনও বুথে হয়তো ৪০০ জন ভোটার আছেন। কিন্তু ভোটার স্লিপ এসেছে ৩০০টি। এর ফলে ভোটকর্মীরা খুবই বিভ্রান্ত। আজ সকালে ভোট শুরুর আগে তাঁরা সেই সব সামগ্রী পেয়ে যাবেন বলেই আশা করছেন। যদিও প্রশাসন সূত্রের খবর, এমনটা হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট জায়গায় অভিযোগ জানালে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy