প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
অসমের ইতিহাসে প্রথম বার একই সঙ্গে ১১,৬০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের ঘোষণা করা হল। কিন্তু স্বাস্থ্য, সড়ক বা অন্যান্য প্রকল্পকে পিছনে রেখে অযোধ্যার সূত্র ধরে অসমের মন পেতে কামাখ্যা দিব্যলোক প্রকল্পকেই অস্ত্র করলেন নরেন্দ্র মোদী। বললেন, “গত কয়েক দিনে অনেক তীর্থ ঘুরে, অযোধ্যায় রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার পরে আজ আমি মা কামাখ্যার দুয়ারে হাজির হয়েছি। মা কামাখ্যা দিব্যলোক পরিযোজনা (কামাখ্যা করিডর) প্রকল্পের জেরে ভোল বদলে যাবে এখনকার অর্থনীতির।” তাঁর দাবি, “স্বাধীনতার পরে যারা দীর্ঘদিন শাসন চালিয়েছে, তারা ভারতের পবিত্র স্থানগুলির মাহাত্ম্যই বুঝতে পারেনি।”
৯ মাস ধরে অশান্ত মণিপুর নিয়ে মোদীর নীরবতা নিয়ে সরব বিরোধীরা। কিন্তু অসমে দাঁড়িয়ে উত্তর-পূর্বে সামগ্রিক শান্তি, অহিংসা নিয়ে নাগাড়ে বড়াই করে গেলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “আমাদের তীর্থ, মন্দির, ধর্মস্থল শুধুই দর্শনস্থল নয়, হাজার বছরের সভ্যতার যাত্রার অটুট নিশানা। ভারত সব সঙ্কটের মোকাবিলা করে কী ভাবে নিজেদের অটল রেখেছে তার সাক্ষী।” কংগ্রেসকে নিশানা করে মোদী বলেন, “দুর্ভাগ্যের কথা, স্বাধীনতার পরে দীর্ঘদিন দেশ শাসন করা দল শুধুই রাজনৈতিক লাভের জন্য নিজের সংস্কৃতি, অতীত নিয়ে লজ্জিত হওয়ার পরিকল্পনা বানিয়ে ফেলেছিল। কোনও দেশ নিজের অতীতকে এ ভাবে ভুলিয়ে, নিজের শিকড় কেটে ফেলে বিকশিত হতে পারে না। কিন্তু গত ১০ বছরে ভারতে পরিস্থিতি বদলেছে।”
মোদী বলেন, “করিডর তৈরির পরে গত এক বছরে সাড়ে ৮ কোটি মানুষ কাশী ও সাড়ে ৫ কোটি মানুষ উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দির গিয়েছেন। অযোধ্যায় প্রাণপ্রতিষ্ঠার ১২ দিনের মধ্যেই ২৪ লক্ষের বেশি মানুষ দর্শন করেছেন। কামাখ্যা দিব্যলোক প্রকল্প শেষ হওয়ার পরে এখানেও এমনই দৃশ্য দেখা যাবে। অসম উত্তর-পূর্বের পর্যটন প্রবেশদ্বারে পরিণত হবে। তীর্থযাত্রী বাড়লে গরিবদের রোজগার বাড়ে, সামগ্রিক ভাবে অর্থনীতি উন্নত হয়।” প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গত ১০ বছরে উত্তর-পূর্বে পর্যটকের সংখ্যা নতুন রেকর্ড গড়েছে। তার আগে পর্যন্ত ছিল সন্ত্রাসের আমল। ছিল না পরিকাঠামো, যাতায়াতের ব্যবস্থা। অশান্ত মণিপুরের প্রসঙ্গ অগ্রাহ্য করে তিনি বলেন, “বিজেপির আমলে উত্তর-পূর্ব জুড়ে এখন শুধুই শান্তি বিরাজমান। সীমানা সমস্যা মিটেছে। বন্ধ-অবরোধ-বিস্ফোরণ-হিংসা আজ অতীত। বহু জায়গা থেকেই তুলে নেওয়া হয়েছে আফস্পা। ১০টি শান্তি চুক্তির মাধ্যমে অসমের সাত হাজারের বেশি যুবক অস্ত্র ছেড়ে দেশের উন্নয়নের শরিক হতে মূল স্রোতে ফিরেছে।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, “আগের প্রধানমন্ত্রী তো আপনাদের রাজ্য থেকেই নির্বাচিত হয়ে যেতেন। কিন্তু তাঁর থেকে বেশি কাজ আপনাদের এই সাথী করছে। আগামী এক বছরে ডাবল ইঞ্জিন সরকার পরিকাঠামো বিকাশে যে টাকা বিনিয়োগ করবে, আগের সরকার তা ১০ বছরে করেছে। গত ১ বছরে দেশে ১ কোটি মহিলা লাখপতি হয়েছেন। সরকার লাখপতি দিদির সংখ্যা ২ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৩ কোটি করার লক্ষ্য নিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy