Advertisement
E-Paper

সিএএ ঘোষণার পরে ‘ডঙ্কা’ নিয়ে পথে মতুয়ারা

সোমবার সন্ধ্যায় সিএএ ঘোষণার পরেই শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় খোল, করতাল, ডঙ্কা নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে মতুয়া মহাসঙ্ঘের বিভিন্ন শাখা সংগঠন।

কেন্দ্র সরকারের সিএএ ঘোষণা হতেই, উচ্ছাসে উত্তরবঙ্গ মতুয়া সমাজ। শিলিগুড়ির জাবরাভিটা এলাকায় তোলা ছবি।

কেন্দ্র সরকারের সিএএ ঘোষণা হতেই, উচ্ছাসে উত্তরবঙ্গ মতুয়া সমাজ। শিলিগুড়ির জাবরাভিটা এলাকায় তোলা ছবি। ছবিঃ নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৪ ০৬:২৪
Share
Save

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন তথা (সিএএ) কার্যকর হতেই খুশি-বিভ্রান্তি দুই-ই উস্কে উঠল সোমবারের সন্ধ্যায়। দেশ জুড়ে ‘সিএএ’ কার্যকর হয়েছে শুনেই মতুয়া সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের মধ্যে খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পড়ে। জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ির গ্রামের কিছু মতুয়া মন্দিরে ঢাক-ঝোল বেজে ওঠে, কোথাও প্রদীপ জ্বালানো হয়। একই সঙ্গে শুরু হয় উৎকণ্ঠাও। নানা ধরনের খবর হাওয়ায় ছড়াতে শুরু করে। সূত্র মারফত ছড়িয়ে পড়ে, ২০১৫ সালের আগে পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে আসা মতুয়াদের নাগরিকত্বের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে, কিছু নথিও অনলাইনে জমা দিতে হবে। কোন, কোন নথি প্রয়োজন হবে তা নিয়ে প্রশ্ন ছড়াতে থাকে। তা নিয়ে নানা ‘বিভ্রান্তিও’ দেখা দেয়।

জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং এবং কোচবিহার—তিন লোকসভা কেন্দ্রেই মতুয়া ভোট রয়েছে যথেষ্ঠ। ‘সিএএ’ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্ৰতিমন্ত্রী তথা কোচবিহার লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক বলেন, ‘‘সিএএ বিল তৈরি হয়েছে কার্যকর করার জন্য। অসংখ্য মানুষ ধর্মীয় ভাবে প্রতারিত হয়ে ভারতবর্ষে আশ্রয় নিয়েছে। তাঁদের প্রত্যেকের জন্য এই আইন ফলপ্রসূ হবে। এই আইনের মধ্য দিয়ে কারও নাগরিকত্ব যাবে না। আমি সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েই বলছি।’’ জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, “উদ্বাস্তু কথাটি থেকে সকলকে মুক্তির স্বাদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।”

পক্ষান্তরে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূলের দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানার ইচ্ছে ভারতে যত নাগরিক আছেন, ভারতে যত মানুষ বাস করেন তাদের কত জনের নাগরিকত্ব নেই? ভারতে বাস করেন, ভোট দেন, রেশন তোলেন, গ্যাস নেন তাদের কারও নাগরিকত্ব নেই? যদি নাগরিকত্ব না থাকে তবে সেই লোক ভোট দিচ্ছে কী করে? সে লোক যদি ভোট দিয়ে থাকে, তবে দেশের সরকার বেআইনি। সে সরকার কেন পদত্যাগ করছে না?"

সোমবার সন্ধ্যায় সিএএ ঘোষণার পরেই শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় খোল, করতাল, ডঙ্কা নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে মতুয়া মহাসঙ্ঘের বিভিন্ন শাখা সংগঠন। শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন জাবরাভিটায় মিছিল বেরোয়। মতুয়া মহাসঙ্ঘের দার্জিলিং জেলার তরফে দাবি করা হয়েছে, শিলিগুড়ি শহর এবং মহকুমা এলাকা মিলে তাদের লক্ষাধিক কর্মী রয়েছেন। সংগঠনের বাইরেও রয়েছেন বহু মানুষ। মতুয়া মহাসঙ্ঘের দার্জিলিং জেলার তরফে মনীন্দ্রমোহন বিশ্বাস বলেন, ‘‘মতুয়াদের আন্দোলন সার্থক হল। কেন্দ্র সরকার মতুয়াদের কথা রাখল।’’ ওই সংগঠনেরই উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষক বাবুলাল বালা বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে সিএএ কার্যকর করার দাবিতে আন্দোলনে ছিলাম। এটা রাজনীতি নয়। লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনের বাস্তবতা। এই আন্দোলনে থাকতে পেরে আমরা গর্বিত।”

নমঃশূদ্র ও মতুয়া সংগঠনের কোচবিহার জেলার কোর কমিটির সদস্য হরিচরণ রায়, প্রাক্তন সহ সভাপতি সুকুমার সরকার বলেন, ‘‘আমরা সন্তুষ্ট। প্রত্যেককে নাগরিকত্বের কাগজপত্র দেওয়া হোক, আমরা চাই।’’ জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায় পাল্টা বলেন, “সিএএ করে কৌশলে কাউকে যদি দেশ থেকে তাড়ানোর চক্রান্ত হয় তাহলে আমরা কখনই হতে দেব না। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন, বাংলায় কোনও ভেদাভেদের রাজনীতি করা যাবে না।’’ ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’-এর (বংশী শিবির) প্রধান বংশীবদন বর্মণ বলেন, ‘‘ভারতভুক্তি চুক্তি অনুযায়ী, কোচবিহারের মানুষের মতামত না নিয়ে সিএএ বলবৎ করতে পারে না কেন্দ্রীয় সরকার। আমরা সিএএ চাই না। তা কোনও মতেই জারি হতে দেব না। তার বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Matua Siliguri CAA

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}