E-Paper

দেবের গ্রামে হিরণ, শুনলেন ভোট লুটের নালিশ

শুক্রবার সকালে মহিষদায় পৌঁছন হিরণ। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেছেন। স্থানীয় মন্দিরে গিয়েছেন। পুজো দিয়েছেন। কয়েকজন গ্রামবাসী তাঁকে জানান, তাঁদের ভোট দিতে দেয় না।

দেবের গ্রাম কেশপুরের মহিষদাতে হিরণ।

দেবের গ্রাম কেশপুরের মহিষদাতে হিরণ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:০৩
Share
Save

তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেবের গ্রামে প্রচারে এলেন বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। গ্রামের কয়েকজন তাঁকে শোনালেন, তাঁরা ভোট দিতে পারেন না। তাঁদের ভোট দিতে দেয় না তৃণমূলের লোকেরা। শুনে হিরণের আশ্বাস, ‘‘এ বারে ভোটের দিনে আমি নিজে কেশপুরে থাকব। দেখব কার কত দম আছে!’’ বিজেপি প্রার্থীর আরও আশ্বাস, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটের আগে থাকবে। ভোট হয়ে যাওয়ার ছ’মাস পরেও থাকবে।’’

শুক্রবার কেশপুরের মহিষদা সহ কয়েকটি এলাকায় প্রচার করেছেন হিরণ। দেবের আদি বাড়ি মহিষদায়। তাঁর ছোটবেলার কিছুটা সময় এখানে কেটেছে। এ বারও কেশপুরে প্রচারে এসে শৈশবের স্মৃতিতে ডুব দিয়েছিলেন দেব। এখানে তাঁর প্রথম দিনের প্রচারেই তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘আমার পৈতে হয়েছিল কেশপুরে। মহিষদা গ্রামে। জেঠুর বাড়িতে। তিন দিন সন্ন্যাসী হয়ে থাকতে হয়। অন্ধকারের মধ্যে। আমিও সন্ন্যাসী হয়ে ছিলাম।’’

শুক্রবার সকালে মহিষদায় পৌঁছন হিরণ। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেছেন। স্থানীয় মন্দিরে গিয়েছেন। পুজো দিয়েছেন। কয়েকজন গ্রামবাসী তাঁকে জানান, তাঁদের ভোট দিতে দেয় না। ভোট দিতে গেলে তৃণমূলের লোকেরা ‘ভোট হয়ে গেছে’ শুনিয়ে ভাগিয়ে দেয়! তাঁদের ভোট লুট করা হয়। হিরণের দাবি, মহিষদা যে তৃণমূল প্রার্থীর গ্রাম, তিনি তা জানতেন না! এখানে এসেই জেনেছেন! হিরণের কথায়, ‘‘আমি জানতামই না, এটা ওঁর গ্রাম! কেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রচারে যাচ্ছি। সেই মতো এখানেও এসেছি। এখানে আসার পরে মা-বোনেরা বললেন যে, এটা
ওঁর গ্রাম।’’

এ দিনও যথারীতি দেবকে বিঁধেছেন হিরণ। মহিষদায় পথসভায় বিজেপি প্রার্থীকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘অভিনেতা- সাংসদ দশ বছরে কী করেছে? কেশপুরে কী করেছে? কলেজ বানিয়েছে? হাসপাতাল বানিয়েছে? মেয়েদের স্কুল বানিয়েছে? কোল্ড স্টোরেজ বানিয়েছে? ভাঙা রাস্তা সারিয়ে দিয়েছে? দশ বছরে করেছেটা কী? উনি ওঁর নিজের গ্রামের জন্য কোনও
স্কুল বানিয়েছেন?’’

দেবের গ্রামে দাঁড়িয়ে হিরণ বলছিলেন, ‘‘আমি কারও নামে সমালোচনা করব না। কারও নামে নিন্দা করতে এখানে আসিনি। শুধু জানতে চাইছি, কেশপুরের জন্য গত দশ বছরে কী করেছে?’’

গ্রামবাসীর উদ্দেশে বিজেপি প্রার্থীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘উনি আপনাদের গ্রামের ছেলে, আপনারাই সেটা বলুন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘উনি অভিনেতা- সাংসদ। অথচ ওঁর গ্রামের লোকেরাই ভোট দিতে পারে না। আমার কাছে গ্রামের লোকেরা বলছেন যে, তাঁরা ভোট দিতে পারেন না। তাঁদের ভোট দিতে দেওয়া হয় না। উনি তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনীকে পাঠিয়ে দেন! বাহিনীকে পাঠিয়ে ভোট করান। নিজের গ্রামের লোকেদেরকেও এ ভাবে দমিয়ে রেখে দিয়েছেন! এর চেয়ে বড় দু:খজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না।’’

এ বারে কেশপুরে ভোট লুট হতে তিনি দেবেন না, দেবের গ্রামের লোকেদের আশ্বস্ত করেছেন হিরণ। তাঁর কথায়, ‘‘ভয় পাবেন না। ভয় দেখালে আপনারা বেশি ভয় দেখাবেন। দেখবেন তৃণমূলের গুন্ডারা পালিয়ে যাবে। আমি কেশপুরে থাকব। ভোটের দিনও থাকব। এখানকার সাংসদ কেশপুরে ভোট লুট করেছে। এটা আর হতে দেব না। মানুষ ভোট দেবে। বাকি আমরা বুঝে নেব! দেখব কত বড় গুন্ডা আছে। মানুষ ভোট দিতে পারলে ৫০ হাজার ভোটে কেশপুর থেকে
হারবেন উনি।’’

নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই তৃণমূল প্রার্থীকে ‘আক্রমণ’ করে যাচ্ছেন হিরণ। এদিন কেশপুরে দেবের গ্রামেও তার অন্যথা হয়নি! হিরণের দাবি, কেশপুরে শান্তি নেই। এলাকা সন্ত্রস্ত। দেব অবশ্য বারবার দাবি করেছেন, কেশপুরে শান্তি ফিরেছে। উন্নয়নও হয়েছে। এ বারও কেশপুরে প্রচারে এসে দেবকে বলতে শোনা গিয়েছে, গত দশ বছর ধরে আমি চেষ্টা করেছি কেশপুরের মান- সম্মানটাকে শুধু বাংলায় নয়, বাংলার বাইরেও নিয়ে যাওয়ার জন্য। আপনাদের ভাল রাখার জন্য। কী ভাবে কেশপুরের উন্নয়ন হয়, কী ভাবে কেশপুরের মানুষের উন্নয়ন হয়, সেটা দেখার চেষ্টা করেছি। যদি মনে হয় কাজ করতে পেরেছি, তাহলে ভোটটা দেবেন।’’ হিরণ বলছেন, ‘‘ভোট আমাকে নয়, বিজেপিকে দেবেন,
মোদীজিকে দেবেন।’’

এ বার এখনও অবধি তিন দিন কেশপুরে প্রচারে এসেছেন দেব। তিন দিনে তিন প্রান্তে প্রচারে গিয়েছেন। নিজের গ্রাম মহিষদায় অবশ্য এখনও অবধি প্রচারে আসেননি তিনি। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, শীঘ্রই মহিষদায় প্রচারে আসবেন দেব। তাঁর আসার আগেই দেব-গ্রাম ছুঁলেন হিরণ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Hiran Chatterjee Dev BJP TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।