Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

জোট চেয়েও সসেমিরায় অধীরেরা, প্রার্থী-প্রস্তুতি বামে

বাম শরিক দল এবং আইএসএফের সঙ্গে আজ, বৃহস্পতিবারই ফের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে চলেছে সিপিএম। তার পরে বামফ্রন্টের বৈঠক।

Adhir Chowdhury

অধীর চৌধুরী। — ফাইল চিত্র।

 সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪ ০৫:৫৯
Share: Save:

এক দিকে বঙ্গ কংগ্রেসের সঙ্গে দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। অন্য দিকে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএম। লোকসভা ভোটে আসন সমঝোতাকে কেন্দ্র করে এখন দুই শিবিরে একই সঙ্গে জোড়া স্নায়ুযুদ্ধ তুঙ্গে!

রাজ্যে তারা যে বামেদের সঙ্গে জোট করেই ভোটে লড়তে চায়, তা ফের স্পষ্ট করে দিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। কিন্তু এআইসিসি নেতৃত্বের পরিষ্কার সঙ্কেত না মেলায় জোট চেয়েও সিপিএমের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারছেন না অধীর চৌধুরীরা! কংগ্রেসের এমন সসেমিরা অবস্থায় ঘর গুছিয়ে নেওয়াই শ্রেয় বলে মনে করছে সিপিএম। সূত্রের খবর, বাম শরিক দল এবং আইএসএফের সঙ্গে আজ, বৃহস্পতিবারই ফের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে চলেছে সিপিএম। তার পরে বামফ্রন্টের বৈঠক। এর মধ্যে কংগ্রেস তাদের আসনের চাহিদার রূপরেখা স্পষ্ট করলে ভাল। নইলে এক-দু’দিনের মধ্যে অন্তত গোটাদশেক আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাম শিবির।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, এআইসিসি-র স্পষ্ট নির্দেশিকার অপেক্ষায় বসে থেকে বাংলায় তাঁদের ভোট-প্রস্তুতি যে ব্যাহত হচ্ছে, সেই বিষয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর। তার পরেই আসরে নেমেছেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল। তিনি প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে জানতে চেয়েছেন, বাংলায় তাঁরা একা লড়তে চান কি না। প্রদেশ কংগ্রেসের বক্তব্য, একা লড়া যেতেই পারে। কিন্তু তাতে আসন জয়ের কোনও নিশ্চয়তা দেওয়া মুশকিল। বামেদের সঙ্গে রফা হলে বরং কিছু আসন ‘ইতিবাচক’। এই মত শুনে বেণুগোপাল স্পষ্ট কিছু বলেননি। কেরলের আলপ্পুঝা আসনে ফের লোকসভায় প্রার্থী হয়েছেন বেণুগোপাল, তাঁর লড়াই সেখানে সিপিএমের সঙ্গে। বাংলায় বাম-কংগ্রেস সমঝোতা হলে পাছে বিজেপি প্রচার করে ‘দক্ষিণে কুস্তি, পূর্বে দোস্তি’— এই ভাবনায় রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বেণুগোপাল বঙ্গ কংগ্রেসকে কালক্ষেপের কৌশলে আটকে রাখছেন বলে দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা।

বামেরা যে অপেক্ষা করতে চাইছে না, সেই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর বুধবার বলেছেন, ‘‘কেউ কোনও সময়সীমা বাঁধলে আমার কী করার আছে! জোটের সম্ভাবনা প্রবল। আমি গোড়া থেকেই বলেছি, বামেদের সঙ্গে জোট করে লড়তে চাই। আমরা ২০১৬ সালে জোট করেছি। এখনও বলছি, জোট চাই। কিন্তু আমাদের সর্বভারতীয় দল। তারা আমাকে সিদ্ধান্ত জানালে আমিও বাকিটা জানাতে পারব।’’ অধীর যে জোট চান, তা নিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে কোনও সংশয় নেই। সিপিএমের পলিটব্যুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘মুশকিল হল, এআইসিসি শুধু বিজেপি-বিরোধী ভোট বিভাজন আটকানোর কথা বলছে। বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভও প্রবল। এই ধরনের কৌশল নিতে গেলে তৃণমূল-বিরোধী ভোট বিজেপিতে চলে যাবে! কংগ্রেস অপারগ হলে তাই আমাদের তো পথ বেছে নিতেই হবে।’’ বাম সূত্রের খবর, কংগ্রেসের তরফে আসনভিত্তিক স্পষ্ট পদক্ষেপ এর মধ্যে না হলে যাদবপুর, দমদম, হাওড়া, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, বর্ধমান-দুর্গাপুরের মতো কিছু আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়া হবে।

পরিস্থিতি জরিপ করতে মঙ্গলবার রাতে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব ও জেলা সভাপতিদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন প্রদেশ সভাপতি। সেখানে জেলা নেতৃত্বের কাছে জানতে চাওয়া হয়, একা লড়লে মালদহ দক্ষিণ আসন কি কংগ্রেস রাখতে পারবে? উত্তর এসেছে, সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বামেদের সঙ্গে জোট হলে বরং মালদদের দুই আসনেই জোরদার লড়াই হবে। একই যুক্তি প্রযোজ্য বহরমপুর আসন সম্পর্কেও। একা লড়ে দাগ কাটতে পারার দাবি কার্যত কোনও জেলা সভাপতিই করেননি। এখন প্রশ্ন, এই বাস্তব দিল্লির কংগ্রেস নেতৃত্বকে কে বোঝাবে!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy