Advertisement
Back to
Citizenship Amendment Act

দুই ফুলের প্রচারে বিভ্রান্ত মতুয়ারা

মঙ্গলবার সকাল থেকে দলে দলে মতুয়া গোঁসাই পাগল ভক্ত ঠাকুরনগরে মতুয়া মহাসঙ্ঘে এসে ডঙ্কা কাঁসি নিশান নিয়ে মাতামে মাতেন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান তাঁরা।

ঠাকুরবাড়িতে মতুয়াদের উল্লাস। মঙ্গলবার।

ঠাকুরবাড়িতে মতুয়াদের উল্লাস। মঙ্গলবার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৪ ০৭:৩৭
Share: Save:

কেন্দ্র সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ ) কার্যকর করা ইস্তক আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি ও তৃণমূল। দুই দলের বিপরীত প্রচারে মতুয়াদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। মতুয়ারা কেউ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুরের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন। কেউ আবার শান্তনুর কাছে গিয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন।

মঙ্গলবার সকাল থেকে দলে দলে মতুয়া গোঁসাই পাগল ভক্ত ঠাকুরনগরে মতুয়া মহাসঙ্ঘে এসে ডঙ্কা কাঁসি নিশান নিয়ে মাতামে মাতেন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান তাঁরা। কিন্তু মতুয়াদের মধ্যে যাঁদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড আছে, যাঁরা নিয়মিত ভোট দেন, তাঁদের অনেকেই সংশয়ে পড়েছেন। নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা উচিত কি না তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না।

এ দিনই হাবড়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে তাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন না করেন। তাঁর দাবি, ওই আবেদন করলেই তাঁরা বে-নাগরিক হয়ে যাবেন। সব মিলিয়ে মতুয়াদের বড় অংশ বিভ্রান্ত, তাঁরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। তাঁদের আদৌ আবেদন করতে হবে কি না তা তাঁরা জানেন না।

যাঁরা আবেদন করতে চাইছেন তাঁদের এক জন অমূল্য রায় বলেন, “আমি পঞ্চাশ বছর আগে এ দেশে এসেছি। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড আছে। তবে মনে হয়, নাগরিকত্ব কার্ড থাকলে আর কিছুর প্রয়োজন হবে না।” সুনীল হালদার নামে এক মতুয়া ভক্তের কথায়, “আমার ভারতীয় পরিচয়পত্র আছে। তবে পাসপোর্ট তৈরি করতে গেলে ১৯৭১ সালের আগের জমির দলিল দেখতে চাওয়া হয়। হয়রানি করা হয়। মনে হয়, নাগরিকত্ব কার্ড থাকলে এ সব হয়রানির মধ্যে পড়তে হবে না।”

এ দিন ঠাকুরবাড়িতে আসা কয়েক জন মতুয়া ভক্ত জানান, তাঁদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড সবই আছে। ভোটও দেন। কিন্তু এখনও তাঁদের ‘অনুপ্রবেশকারী’, ‘বাংলাদেশি’ বলে কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়। অনেকেই বাঁকা নজরে দেখেন। এ বার নাগরিকের মর্যাদা পেলে আর মাথা নিচু করে থাকতে হবে না। পরবর্তী প্রজন্মকেও কটাক্ষ শুনতে হবে না।

এ দিন নদিয়া থেকে ঠাকুরবাড়িতে এসেছিলেন মতুয়া গোঁসাই মোতিলাল সিকদার। তাঁর মতে, "প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শান্তনু ঠাকুরেরা আমার মতো মতুয়াদের মৃত্যুশয্যা থেকে বাঁচিয়ে তুললেন।”

২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বরের আগে আসা মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষ যাঁদের ভারতীয় পরিচয়পত্র এখনও হয়নি, তাঁদের আশা, এ বার নাগরিকত্বের কার্ড পাবেন। সেই কার্ড দেখিয়ে ভোটার তালিকায় নামও তোলা যাবে। পুলিশের হেনস্থার মুখে পড়তে হবে না। তবে কবে, কোথায়, কী ভাবে আবেদন করতে হবে তা তাঁরা জানেন না। মতুয়া ঠাকুরবাড়ি থেকেও তাঁদের এ দিন স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। ভোটার কার্ড না থাকা এক মতুয়া ভক্ত বলেন, “২০১৪ সালের আগে আমি এ দেশে এসেছি। কিন্তু তার তো কোনও নথিপত্র নেই। তা হলে আবেদন করব কী ভাবে?”

শান্তনু অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন, “কোনও নথিপত্র লাগবে না। আবেদন করলেই হবে।" মমতাবালা পাল্টা বলেন, “আবেদন করে সময় বা টাকা নষ্ট করার কোনও প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রের সদিচ্ছা থাকলে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সকলকে নাগরিক বলে ঘোষণা করুক। কিন্তু বিজেপি সরকার তা করবে না কারণ ওরা আসলে সিএএ সামনে রেখে দেশে এনআরসি চালু করতে চাইছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Citizenship Amendment Act Matua Community
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy