পুরুলিয়া জামশেদপুর 32 নম্বর জাতীয় সড়কে কাঁন্টাডি এলাকয় চলছে পুলিশের নাকা। নিজস্ব চিত্র।
ভোটগ্রহণের দেরি থাকলেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে বিস্তীর্ণ ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া এলাকায় আরও ৩২টি নাকা চেকিং পয়েন্ট চিহ্নিত করল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। নতুন নাকা চেকিং পয়েন্টগুলির বিস্তারিত তথ্য ইতিমধ্যে কমিশনকে জানানো হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি ঝাড়খণ্ড-বাংলা সীমানা লাগোয়া থানাগুলির পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ লাইনে বৈঠক হয়। দু’রাজ্যের সীমানা লাগোয়া এলাকার বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিকট অতীতের বিভিন্ন ঘটনা এবং রাজনৈতিক ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পরেই নতুন এই ৩২টি নাকা পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। সে তথ্য ঝাড়খণ্ড পুলিশকেও জানানো হয়েছে।
পুরুলিয়ার জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুরুলিয়ার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের ৩৮২ কিলোমিটার সীমানা রয়েছে। ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে পুরুলিয়ার ন’টি নাকা চেকিং পয়েন্ট রয়েছে। পাশাপাশি বিস্তীর্ণ ঝাড়খণ্ড সীমানা জুড়ে আরও ৩২টি নতুন নাকা চেকিং পয়েন্ট চিহ্নত করা হয়েছে। এ সম্পর্কিত তথ্য ঝাড়খণ্ড পুলিশকে জানানো হয়েছে। নতুন এই পয়েন্টগুলির বেশ কিছু জায়গায় ইতিমধ্যেই নজরদারি শুরু হয়েছে।’’
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে যে ন’টি আন্তঃরাজ্য নাকা চেকিং পয়েন্ট রয়েছে সেগুলি হল— বান্দোয়ানের ধবনি, বরাবাজারের বামনিডি, বলরামপুরের দাঁতিয়া, ঝালদার তুলিন, জয়পুরের কাঁঠালটাঁড়, পুরুলিয়া মফস্সলের ঘোঙা, পাড়ার দড়দা সেতু, সাঁওতালডিহির গোয়াই সেতু এবং নিতুড়িয়ার মহেশনদী চেকপোস্ট। তার মধ্যে চেকপোস্ট রয়েছে: ধবনি, বামনিডি, তুলিন, কাঁঠালটাঁড় ও ঘোঙায়। এ ছাড়া বাঁকুড়া-বান্দোয়ান সীমানায় কুইলাপাল, বাঁকুড়া-সাঁতুড়ি সীমানায় মুড়লু ও পশ্চিম বর্ধমান-নিতুড়িয়া সীমানায় দিশেরগড় ঘাটে আন্তঃজেলা নাকা চেকিং পয়েন্ট রয়েছে। যেখানে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলে।
তবে ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়া সীমানায় অনেক কাঁচা রাস্তা রয়েছে। সেগুলিও দুষ্কৃতীদের নখদর্পণে। গত বছর অগস্টে পুরুলিয়া শহরের স্বর্ণ বিপণিতে ডাকাতি সেরে মূল রা্স্তা এড়িয়ে এ রকমই একটি রাস্তা দিয়ে ঝাড়খণ্ডে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। বলরামপুরের একটি গ্রাম থেকে আন্তঃরাজ্য মোটরবাইক চোরাই চক্রের হদিশ পেয়েছিল পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, ঝাড়খণ্ড থেকে বাইকগুলি ছিনতাই করে এমনই মেঠো রাস্তা দিয়ে বলরামপুর থানার একটি গ্রামে আনা হত।
পুরুলিয়ায় না হলেও ঝাড়খণ্ডের কিছু এলাকায় মাওবাদীদের গতিবিধির খবর মাঝে মধ্যে পাওয়া যায়। জানুয়ারি মাসে বাঘমুণ্ডির চাউনিয়ার জঙ্গল থেকেই সিপিআই (মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে থাকা সব্যসাচী গোস্বামী ওরফে কিশোরদাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। চাউনিয়ার জঙ্গল থেকে জঙ্গল পথে ঝাড়খণ্ডের দূরত্ব মেরেকেটে তিন-চার কিলোমিটার।
জেলা পুলিশ সুপার জানাচ্ছেন, জেলার অন্দরে বা সীমানা লাগোয়া এ রকম ১০৯টি স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে, যার ৪৬টিতে প্রতিদিন দু’ঘণ্টা করে হঠাৎ নাকা তল্লাশি চালানো হয়। তিনি বলেন, ‘‘কয়েকটি নাকা পয়েন্টে নজরদারি ক্যামেরা বসানোর কথাও ভাবনায় রয়েছে। এছাড়া সীমানা এলাকায় নজরদারি ও টহল বাড়ানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy