(বাঁ দিকে) অনুব্রত মণ্ডল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
প্রায় দেড় বছর হল বীরভূমে নেই অনুব্রত মণ্ডল। এ বারের লোকসভা নির্বাচনও হচ্ছে তাঁকে ছাড়াই। বোলপুরের প্রার্থীর প্রচারে গিয়ে আউশগ্রামের জনসভা থেকে সেই অনুব্রতের প্রশংসা শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। স্মৃতিচারণ করে তিনি জানালেন, কোনও দিন দরিদ্র কাউকে বিনা সাহায্যে ফিরিয়ে দেননি কেষ্ট। কেউ তাঁর কাছে হাত পাতলে তিনি যতটা সম্ভব সাহায্য করতেন সকলকেই।
বুধবার আউশগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ফুটবল ময়দানে বোলপুরের তৃণমূল প্রার্থী অসিত কুমার মালের সমর্থনে জনসভা করেন মমতা। সেখানেই উঠে আসে অনুব্রতের প্রসঙ্গ। গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে অনুব্রতের ঠিকানা এখন তিহাড় জেল। মমতা বলেন, ‘কেষ্ট এখানকার মাটির ছেলে। ওকে আপনারা কত ভালবাসতেন। ওর বিরুদ্ধে মামলায় কী আছে আমি জানি না। ওর অগুণ কী আছে, জানি না। আইন আইনের পথে চলবে। তবে এটুকু বলতে পারি, কোনও গরিব লোক ওর কাছে গিয়ে দাঁড়ালে, ও তাঁকে ফিরিয়ে দিত না। গোটা জেলাটা ওর হাতের মুঠোয় ছিল।’’
মমতা আরও বলেন, ‘‘আমি বীরভূমে একাধিক প্রশাসনিক বৈঠক করতে গিয়ে দেখেছি, অনুব্রত কী ভাবে কাজ করত। প্রতি ভোটে ওকে নজরবন্দি করে রাখা হত। যাতে ও ভোটের দিন বেরোতে না পারে।’’
বিজেপির বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতরের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে বশ করে রাখার অভিযোগ দীর্ঘ দিন ধরেই তুলে আসছেন মমতা। বুধবারও অনুব্রতের গ্রেফতারির নেপথ্যে সেই চক্রান্তের অভিযোগই করেন। এমনকি, বীরভূমে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের বাড়িতে ইডির হানা নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘চাঁদুর বাড়িতেও ওরা হানা দিয়েছে। যে কারও বাড়িতে ওরা যখন-তখন হানা দিচ্ছে। বলছে, বিজেপিকে ভোট না দিলে জেলে ভরে দেবে।’’
অনুব্রতের গ্রেফতারির প্রসঙ্গে নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকেও আক্রমণ করেন মমতা। তাঁকে ‘গদ্দার’ বলে সম্বোধন করে মমতা বলেন, ‘‘অনুব্রত যদি গ্রেফতার হয়, তোমাদের গদ্দার তো আরও বড় দুর্নীতিবাজ। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা থাকলেও তাকে ধরা হচ্ছে না।’’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের অগস্ট মাসে গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে গ্রেফতার করে সিবিআই। পরে ইডি-ও তাঁকে গ্রেফতার করেছে। একই মামলায় তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকেও গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে দু’জনেই আছেন তিহাড় জেলে। অনুব্রত ছিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। জেলায় তাঁর দাপটের কথা সকলেরই জানা ছিল। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে বীরভূম অনুব্রতহীন। ভোটও হচ্ছে তাঁকে ছাড়াই। তিন বছর আগে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও অনুব্রতই ছিলেন বীরভূমের দায়িত্বে। মাঝে পঞ্চায়েত নির্বাচন গিয়েছে। এ বার লোকসভাতেও তিনি এলাকায় নেই। কেষ্টহীন সেই বোলপুর কেন্দ্রের প্রচারে গিয়ে তাঁরই স্মৃতি হাতড়ালেন মমতা। মঙ্গলবার বীরভূমে গিয়েও অনুব্রতের কথা তিনি স্মরণ করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy