Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

মতুয়াদের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ মনে করালেন মমতা

সোমবার বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে বনগাঁ শহরের অভিযান সঙ্ঘের মাঠে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা সওয়া ২টো নাগাদ হেলিকপ্টারে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী।

বনগাঁয় বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে সভা মমতার।

বনগাঁয় বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে সভা মমতার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক। 

সীমান্ত মৈত্র  
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ০৮:০২
Share: Save:

মতুয়াদের পীঠস্থান ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে তাঁর পুরনো সম্পর্কের কথা প্রচারে এসে উস্কে দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বনগাঁর সঙ্গে তাঁর পুরনো ঘনিষ্ঠতা, যোগাযোগের কথাও তুললেন।

সোমবার বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে বনগাঁ শহরের অভিযান সঙ্ঘের মাঠে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা সওয়া ২টো নাগাদ হেলিকপ্টারে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় আধ ঘণ্টা বক্তৃতা করেন। মতুয়াদের নিশান (লাল সাদা পতাকা) ওড়ান, ডাঙ্কা-কাঁসি বাজান। রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুরের সঙ্গে হরিবোল ধ্বনিতে পা মেলান। সভায় প্রার্থী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী, স্বরূপনগরের বিধায়ক বীণা মণ্ডল, বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ প্রমুখ। মমতা জানান, এ দিনের সভা ঠাকুরনগরে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জায়গা পাওয়া যায়নি। বৃষ্টিতে জল জমে চপার নামার জায়গা ছিল না।

মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁয় সভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে মতুয়াদের সঙ্গে তাঁর পুরনো সখ্যের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। মতুয়াদের প্রয়াত বড়মাকে (বীণাপাণি ঠাকুর) শ্রদ্ধা জানান। বলেন, ‘‘ওঁর শতবর্ষে ঠাকুরনগরে এসে বড়মার হাতে বঙ্গবিভূষণ সম্মান তুলে দিয়েছিলাম। রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছি। কেউ কেউ এখন ভোটের স্বার্থে বড়মার কথা বলেন। বড়মার সঙ্গে আমার ২৫-৩০ বছরের যোগাযোগ। তখন দেখার কেউ ছিল না। আমি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করিয়েছি।’’

মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে রাজ্য সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে বলে মনে করিয়ে দেন তিনি। জানান, মতুয়া বিকাশ পর্ষদ গঠন করেছেন। হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়, পিআর ঠাকুর গভর্মেন্ট কলেজ করেছেন। সেই সঙ্গে ঠাকুরনগরে ফুলমান্ডি, পলিটেকনিক কলেজ, আইটিআই কলেজ তৈরির কথা বলেন। বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির নেতারা বলছেন, বাংলায় কিছুই হয়নি। তাই একটু একটু বলা।’’

বনগাঁ মহকুমা জুড়ে মুখ্যমন্ত্রী কী কী কাজ করেছেন, তার ফিরিস্তি দেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে বনগাঁ-বাগদা রেলপথ, বনগাঁ-কল্যাণী রেলপথ অনুমোদন করে দিয়েছিলাম। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি সংস্কার করা হয়েছে।’’

বনগাঁর প্রয়াত বিধায়ক ভূপেন শেঠের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ভূপেন্দ্রনাথ শেঠ বনগাঁর বিধায়ক ছিলেন। বনগাঁয় এলে তিনি বাড়ি নিয়ে যেতেন। না খাইয়ে ছাড়তেন না। তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর ছেলে গোপালকে আমি রাজনীতিতে এনেছিলেন। সে এখন বনগাঁর চেয়ারম্যান। বনগাঁর সঙ্গে আমার দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক।’’

বনগাঁর মুটে এবং ছোট গাড়ির মালিকেরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে তিনি শুনেছেন বলে জানান মমতা। বলেন, ‘‘বিশ্বজিৎ যদি জেতে, সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁদের কী ভাবে কাজে লাগানো যায়, তা দেখব।’’
শান্তনু ঠাকুরের সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘‘এখানকার সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। তিনি কোন কাজটা করেছেন? ঘুরে বেড়িয়েছেন। আর নাগরিকত্ব দেবেন বলে টাকা তুলেছেন। তুমি (শান্তনু) প্রথমে সিএএ-তে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করো। করবেন না, কারণ, করলে বিদেশি হয়ে যাবেন। নিজে করবেন না। অন্যদের করতে বলছেন। কেউ আবেদন করেননি। আইন জানলে কেউ করবেন না।’’

বিজেপির টিকিটে জিতে বিশ্বজিৎ দাস পরে আসেন তৃণমূলে। তা নিয়ে শাসক শিবিরের অন্দরেও অনেকের আপত্তি ছিল। সে প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, ‘‘বিশ্বজিৎ বিজেপি করত। বিজেপির অত্যাচারে বিজেপি ছেড়ে দিয়েছে।’’

শান্তনু ঠাকুরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ (ডিআইবি) কেন পাসপোর্ট তৈরি করতে গেলে ১৯৭১ সালের আগের দলিল দেখতে চায়? না দেখাতে পারলে টাকা চাওয়া হয়। হাজার হাজার কোটি টাকা তোলা হয়েছে। মতুয়ারা নাগরিকত্ব পেলে সেই টাকার উৎস বন্ধ হয়ে যাবে বলেই কি মুখ্যমন্ত্রীর গাত্রদাহ হচ্ছে?’’ শান্তনুর কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল ঠাকুরবাড়ির দেবোত্তর সম্পত্তি এবং অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ লুট করতে চাইছে। আমি সিএএ-তে আবেদন করব, তা প্রথম থেকেই তো বলে আসছি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy