(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইউসুফ পাঠান (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দলের জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে শনিবার কালীঘাটে বৈঠক করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে বিশেষ ভাবে নেত্রীর প্রশংসা পেয়েছেন ইউসুফ পাঠান। বহরমপুর থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছেন তিনি। হারিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে। বহরমপুর যাঁর ‘গড়’ বলেই পরিচিত। পাঁচ বারের সাংসদ অধীরকে হারিয়ে দিদির কাছ থেকে ‘জায়ান্ট কিলার’ তকমা পেয়েছেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ।
লোকসভার প্রার্থী বাছাইয়ে এ বার বহরমপুরে বিশেষ ‘চমক’ দিয়েছিল তৃণমূল। অধীরের বিরুদ্ধে ‘তুরুপের তাস’ হিসাবে গুজরাত থেকে ইউসুফকে নিয়ে এসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকেই ভাবতে পারেননি, রাজনীতিতে ‘আনাড়ি’ ইউসুফের কাছে ৮৫ হাজারের বেশি ভোটে হেরে যাবেন বহরমপুরের পাঁচ বারের সাংসদ। তা ছাড়া, অধীরের সঙ্গে মমতা তথা তৃণমূলের তিক্ত সম্পর্কের কথাও কারও অজানা নয়। জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল হাত মেলালেও বাংলায় ‘ইন্ডিয়া’র ‘কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কার্যত অধীর একাই। তৃণমূল তাই তাঁকে হারানোর ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দিয়েছিল। সেই কারণেই বহরমপুরের জয় তৃণমূলের কাছে বিশেষ ভাবে ‘উপভোগ্য’। শেষ পর্যন্ত তাদের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। দলনেত্রীর কাছ থেকে দরাজ ‘সার্টিফিকেট’ পেয়েছেন জয়ের কাণ্ডারি ইউসুফ।
ইউসুফ ছাড়াও শনিবার দলের বৈঠকে আরও কয়েক জনের প্রশংসা করেছেন মমতা। বিশেষত, যাঁরা জিততে জিততেও শেষমেশ হেরে গিয়েছেন, যাঁরা নিজের কেন্দ্রে কঠিন লড়াই করেছেন, তাঁদের নাম করেই প্রশংসা করেছেন দলনেত্রী। কাঁথিতে উত্তম বারিক বা বিষ্ণুপুরে সুজাতা মণ্ডলের লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের বৈঠকে মমতা বলেছেন, ‘‘সুজাতা ভাল লড়াই করেছে। অল্পের জন্য হেরে গিয়েছে। এ বার সংসদে আমাদের মহিলা সাংসদদের সংখ্যাই বেশি। এ বিষয়ে আমরাই সবচেয়ে এগিয়ে। বাংলাকে বঞ্চনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের যে আন্দোলন চলছিল, তা চলবে।’’
আলাদা করে কাঁথির তৃণমূল প্রার্থী উত্তমের প্রশংসা করেছেন মমতা। উত্তমের বিপরীতে সেখানে বিজেপি শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে প্রার্থী করেছিল। তাঁদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলেছে। দিনের শেষে ৪৭ হাজার ভোটে জিতে গিয়েছেন সৌমেন্দু। মমতা বৈঠকে বলেন, ‘‘কাঁথিতে বাঘের মতো লড়াই করেছে উত্তম! ওর লড়াই মনে থেকে যাবে।’’ এ ছাড়াও বৈঠকে আলাদা করে আরামবাগে জয়ী মিতালি বাগ, হুগলিতে জয়ী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করেছেন মমতা। কালীঘাটের বৈঠকে দলনেত্রীর প্রশংসা পেয়েছেন অভিষেকও। ডায়মন্ড হারবারে তিনি ৭ লক্ষের বেশি ভোটে জিতেছেন। সে প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘অভিষেক যে ভাবে ডায়মন্ড হারবারে লড়াই করেছে, তা প্রশংসনীয়।’’
দলের জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানে তিনি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, বাংলায় ২৯ নয়, ৩৫টি আসনে তৃণমূলের জেতার কথা ছিল। কমিশন ‘রিগিং’ করে ওই কয়েকটি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীদের হারিয়ে দিয়েছে। তার মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের দুই কেন্দ্র রয়েছে বলেও জানান তিনি। ওই জেলার দু’টি কেন্দ্র হল তমলুক এবং কাঁথি। তমলুকে বিজেপির অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভোটে লড়েছেন তৃণমূলের তরুণ প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। ৭৭ হাজারের বেশি ভোটে তিনি হেরেছেন। সাংবাদিক বৈঠকে এক মহিলা প্রার্থীকে কারচুপি করে হারানোর কথাও বলেন মমতা। অনেকে মনে করছেন, এ ক্ষেত্রে তিনি বিষ্ণুপুরের সুজাতার কথা বলেছেন। প্রাক্তন স্বামী সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে লড়ে তিনি মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজার ভোটে হেরে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy