মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মলয় ঘটক। —ফাইল ছবি।
এত চেষ্টা করেও শত্রুঘ্ন সিন্হাকে হারাতে পারলে না! দলীয় বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রশ্নের মুখে পড়লেন মন্ত্রী মলয় ঘটক।
কালীঘাটে ডাকা দলীয় বৈঠকে শনিবার এই মেজাজেই ভোট-পর্বের কাটাছেঁড়া করলেন তৃণমূল নেত্রী। দীর্ঘ দিনের সঙ্গী আসানসোলের মলয়কে যেমন এ ভাবে ভর্ৎসনা করেছেন, তেমনই পুরুলিয়ার বুথে দলের এজেন্ট ‘টিফিন’ না পাওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন তিনি। সেই সূত্রেই মমতা এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন, এই বিশ্লেষণের ভিত্তিতে দল ও শাখা সংগঠনে কিছু রদবদল করতে চলেছেন তিনি। তবে ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেকর্ড ব্যবধানে জয় নিয়েও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মমতা বলেছেন, ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ! এ রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারবে বলে মনে হয় না।’ যদিও নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, দেশে কংগ্রেসের রাকিবুল হুসেন, বিজেপির শঙ্কর লালোয়ানি, শিবরাজ সিংহ, অমিত শাহ, সি আর পাটিলেরা আরও বেশি ভোটে জিতেছেন।
লোকসভা ভোটে গত বারের ধাক্কা কাটিয়ে এ বার আসন বাড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তার পরেও সাংগঠনিক ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে এ বার গোড়া থেকেই উদ্বেগ ছিল বেশ কিছু আসনে। দলীয় বৈঠকে এ দিন সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট হাতে নিয়েই জেলা ধরে ধরে আলোচনা করেছেন মমতা। সেই সূত্রেই আসানসোল লোকসভা আসনে এ বার ‘কঠিন’ লড়াইয়ে পড়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন। কয়েক মাস আগে থেকে সেখানকার সংগঠন সম্পর্কে নানা রকম রিপোর্ট আসতে শুরু করে দলীয় নেতৃত্বের কাছে। শেষ পর্যন্ত জয় পেলেও এ দিন শত্রুঘ্নের উপস্থিতিতেই আইনমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলেই মমতা বলেন, ‘ইডি, সিবিআইকে এত ভয় পাও কেন তোমরা’! লোকসভার দলনেতা নির্বাচিত করলেও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার কেন্দ্রে তিন দিনে ৩০০ ফোনে ভোট করতে হয়েছে! কী করেছি, কুণাল ঘোষ, পরেশ পাল জানে!’
কোচবিহারে নিশীথ প্রমাণিককে হারিয়েও উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক ফল নিয়ে অসন্তোষই ছিল মমতার এ দিনের বক্তব্যে। দলীয় নেতাদের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘এত কাজ করেছি আমরা উত্তরের জন্য। তার পরেও কেন মানুষের সমর্থন পাচ্ছি না?’ এই অবস্থা বদলে কী করা প্রয়োজন, দলের নেতাদের কাছে সেই পরামর্শও চেয়েছেন তিনি। তবে মালদহ জেলা ও বালুরঘাট আসনের ফলে স্পষ্ট হতাশা জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের নাম করেই তিনি বলেন, ‘নিজের বিধানসভা আসনেই জিততে পারলেন না’! মালদহের দুই কেন্দ্রের ফলে অসন্তুষ্ট মমতা মালদহ উত্তরের প্রার্থী, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ-কর্তার উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাকে আর জেলায় যেতে হবে না। আমি এখানে অন্য কাজ দেব’।
রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব মেদিনীপুরের ‘পারফরম্যান্স’ নিয়েও ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেত্রী। তমলুক আসনে প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য-সহ দলের নেতাদের ভূমিকা নিয়ে অখুশি তিনি। কাঁথিতে প্রার্থীর প্রশংসা করলেও দলের কাজ নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গেই তাঁর আক্ষেপ, ‘বিজেপি সংগঠিত ভাবে ভোট লুট করেছে। নেতারা ঠেকাতে পারেননি’।
অবুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে বীরভূমের নেতাদের প্রশংসা করেছেন মমতা। হুগলিতে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের জন্য প্রশংসা পেয়েছেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। ভোটে জিতলেও বাঁকুড়ার নবনির্বাচিত সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীকে ভর্ৎসনা করে মমতা বলেন, ‘শুধু নিজে জিতলেই হবে! আপনি একটু সাহায্য করলে বিষ্ণুপুরে সুজাতা মণ্ডলও জিতে যেত’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy