Advertisement
E-Paper

জলই ‘ডোবাবে’ তৃণমূলকে, আশা বিরোধীর

ফি বছর গরমে রঘুনাথপুর শহরে পানীয় জলের সমস্যা নতুন নয়। জলপ্রকল্প থাকলেও গরম পড়তেই জলকষ্টে ভুগতে হয় শহরের কমবেশি পঁচিশ-তিরিশ হাজার বাসিন্দাকে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:২৩
Share
Save

নির্বাচনে ‘জলই’ কি রঘুনাথপুর শহরে ‘ডোবাবে’ তৃণমূলকে। ভোট আবহে শহরের পাড়া, মহল্লায় কান পাতলে তেমন কথাই শোনা যাচ্ছে। পুরসভায় টানা পনেরো বছর ক্ষমতায় থেকেও তৃণমূল শহরের জলের সমস্যা মেটাতে ব্যর্থ, অভিযোগ এমনই। ফি বছর গরমে জলকষ্টে ভুগতে হয় পুর-এলাকার বাসিন্দাদের। প্রচারেও জল-প্রসঙ্গ তুলে সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা। পাল্টা জলকষ্টের কারণ জানিয়ে সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আশ্বাস দিতে দেখা যাচ্ছে শাসকদলের নেতাদের। কার কথায় চিঁড়ে ভিজবে, জবাব মিলবে ইভিএম খোলার পরে। তবে আপাতত জল নিয়েই লড়ে যাচ্ছে শাসক ও বিরোধীরা।

ফি বছর গরমে রঘুনাথপুর শহরে পানীয় জলের সমস্যা নতুন নয়। জলপ্রকল্প থাকলেও গরম পড়তেই জলকষ্টে ভুগতে হয় শহরের কমবেশি পঁচিশ-তিরিশ হাজার বাসিন্দাকে। এ বারে বৈশাখের আগে থেকেই তীব্র দাবদাহ শুরু হওয়ায় পানীয় জলের চাহিদা বেড়েছে। সেই মতো জলের জোগান না মেলায় ক্ষোভ জমেছে বাসিন্দাদের মধ্যে।

বাসিন্দাদের এই ক্ষোভকে শাসকদলের বিরুদ্ধে পুঁজি করে ভোটবাক্সে প্রতিফলিত করার চেষ্টায় খামতি রাখছে না বিরোধীরা। বিজেপি থেকে শুরু করে কংগ্রেস, সব পক্ষই প্রচারে তুলে ধরছে জলের সমস্যা মেটাতে পুরসভা ব্যর্থতার প্রসঙ্গ। শাসকদলের নেতারাও জল নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের আঁচ টের পাচ্ছেন প্রচারে বেরিয়ে। পুরপ্রধান তরণী বাউরিও জানান, প্রচারে বেরিয়ে জলের সঙ্কটের অভিযোগ ভালই পাচ্ছেন। শহরের ২, ৩, ৫, ৬-সহ আরও কয়েকটি ওয়ার্ডের কয়েক জন বাসিন্দা স্পষ্টই বলেন, “জলের সমস্যা শহরে দীর্ঘদিনের। পুর-নির্বাচনের আগে তৃণমূল জলের সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছিল। দু’বছর হতে চলল নতুন বোর্ড গঠন হয়েছে। সমস্যা তবে মেটেনি। শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানানো যাচ্ছে না। কিন্তু এই নির্বাচনে জল নিয়ে আমাদের মতো অনেকেই ক্ষুব্ধ।”

এই সব ঘটনার প্রেক্ষিতেই বিরোধীদের আশা, লোকসভা নির্বাচনে রঘুনাথপুর শহরে জলই ‘ডোবাবে’ শাসকদলকে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির পুর-প্রতিনিধি দীনেশ শুক্লা বলেন, “পনেরো বছর ধরে পুরসভা চালাচ্ছে তৃণমূল। জলের সমস্যা মেটাতে মিথ্যা আশ্বাস ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি তারা। রাজ্য সরকার রঘুনাথপুরে জলের সমস্যা মেটাতে পদক্ষেপ নেয়নি। প্রচারে বেরিয়ে আমরা সেই দিকটাই বেশি করে তুলে ধরছি।” তাঁর কটাক্ষ, যে দল একটা পুরসভায় দলের সমস্যা মেটাতে পারে না, তাদের প্রার্থী লোকসভায় জিতে দেশের সমস্যা কী ভাবে মেটাবে!

পুরসভা জানাচ্ছে, নিতুড়িয়ার ইন্দো-জার্মান জল প্রকল্প থেকে পুরসভায় জল দেয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। তবে সেই প্রকল্প থেকে পর্যাপ্ত জল না মেলায় সমস্যা বাড়ছে। সূত্রের খবর, পুরসভায় জলের চাহিদা দৈনিক ২.৭৫ মিলিয়ন লিটার। সেখানে বর্তমানে জল মিলছে ১.৩৬ মিলিয়ন লিটার। পুরপ্রধান তরণীর দাবি, চাহিদার অর্ধেক জল পাওয়া যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে চিঠি দিয়ে জল সরবরাহের পরিমাণ বাড়াতে অনুরোধ করা করেছে। যে সব ওয়ার্ডে জলের সঙ্কট বেশি, সেখানে জলের ট্যাঙ্কার পাঠানোর জন্যও দফতরকে বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, “প্রতি ওয়ার্ডে জলের চাহিদা কিছুটা হলেও মেটাতে পুরসভা ২ কোটির কিছু বেশি ব্যয়ে ২৬টি সৌরবিদ্যুৎ-চালিত পাম্প বসিয়েছে। শহরের সাড়ে চারশো টিউবয়লকেও সচল রাখা হয়েছে।” দীনেশের পাল্টা, সৌরবিদ্যুৎ-চালিত পাম্পের প্রকল্পের অর্থ বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকারই দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ‘অম্রুত ২’ জলপ্রকল্পের বিষয়টি প্রচারে আনছে তৃণমূল। প্রকল্পটি রূপায়িত হলে শহরের চাহিদা মিটিয়েও জল উদ্বৃত্ত হবে বলে দাবি।

তরণী বলেন, “৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্প গড়তে দরপত্র আহ্বানের কাজ শেষ করেছে এমইডি। আগামী দেড় বছরের মধ্যে প্রকল্প রূপায়িত হবে। প্রতি বাড়িতে পর্যাপ্ত পানীয় জল যাবে। অনেক দিন কষ্ট সহ্য করেছেন। আর দেড়টা বছর মানিয়ে নিন। তার মধ্যে পর্যাপ্ত জল দিতে না পারলে নির্বাচনের প্রচারে আমরা আসব না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Water crisis Raghunathpur

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}