—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মহিলা ভোটেই বাজিমাত হবে। বুথফেরত সমীক্ষার প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে এমনই দাবি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। বিধানসভা-পরবর্তী দুই নির্বাচন, পুরসভা ও পঞ্চায়েতে মহিলাদের ‘আশীবার্দ’ ভোট বৈতরণী পার হতে সাহায্য করেছে, বারে বারেই শোনা গিয়েছে শাসকদলের নেতাদের মুখে। এ বারও ‘লক্ষ্মীদের’ আস্থা তাদের দিকে থাকবে বলে দাবি। দলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ”নির্বাচন মিটতেই বুথ থেকে পাওয়া রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, মোট প্রদত্ত ভোটের মধ্যে মহিলা ভোটই পঞ্চাশ শতাংশের কিছু বেশি। পুরসভা ও পঞ্চায়েতের মতো লোকসভাতেও মহিলাদের সমর্থন আমরা পাচ্ছি। পুরুলিয়া আসন পুনরুদ্ধার হওয়া নিয়ে কোনও সংশয় নেই।”
দল সূত্রের খবর, মহিলাদের ভোট নিশ্চিত করতে ‘ভোট মেশিনারি’ তৈরি করেছিল তৃণমূল। ব্লক কমিটি থেকে শুরু করে অঞ্চল, বুথ স্তরের নেতাদের কাছে দলের জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ ছিল, মহিলা ভোটটা নিশ্চিত করতে হবে। ভোট-কুশলী সংস্থাও তেমন পরামর্শ দিয়েছিল বলে খবর সূত্রের। সেইমতো প্রথমার্ধেই মহিলারা যাতে ভোট দেন, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছিল জেলা নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি সৌমেন বলেন,”আমরা চেয়েছিলাম বেলা ১২টা-১টার মধ্যেই মহিলারা যাতে ভোটটা দিয়ে দেন। সে ভাবেই কাজ করেছেন বুথ স্তরের নেতা-কর্মীরা। দেখা গিয়েছে, প্রথমার্ধেই ভাল সংখ্যায় মহিলারা ভোট দিয়েছেন। বাকিরাও রোদ একটু কমতে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সব মিলিয়ে পুরুষদের চেয়ে মহিলা ভোটের হারই ছিল বেশি।”
পুরুলিয়ায় ভোটার সংখ্যা ১৮ লক্ষ ২০ হাজারের মতো। ৭৮.৩৯ শতাংশ ভোট পড়ার নিরিখে ১৪ লক্ষ ২৬ হাজারের কিছু বেশি ভোট পড়েছে। তার মধ্যে ৫২-৫৩ শতাংশ মহিলা-ভোট ধরলে সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে সাড়ে সাত লক্ষের মতো। তৃণমূলের দাবি, এই সাড়ে সাত লক্ষ ভোটের বেশির ভাগটাই গিয়েছে তাদের দিকে। জেলা স্তরের এক নেতার কথায়, “কুড়মি সমাজের নেতা অজিত মাহাতো কত মাহাতো ভোট পাবেন বা কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতো কতটা বাম-কংগ্রেস ভোট পুনরুদ্ধার করতে পারবেন, সে অঙ্ক তো আছেই। কিন্তু সব হিসেব ছাপিয়ে যাবে তৃণমূলের প্রতি মহিলাদের সমর্থনের বিষয়টি।”
জেলা সভাপতি সৌমেনের ব্যাখ্যা, মূলত তিনটি কারণে মহিলাদের সমর্থন তারা পাবেন। প্রথমত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মহিলাদের স্বতঃস্ফূর্ত একটা আবেগ প্রথম থেকেই আছে। যার প্রতিফলন ঘটেছে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় মহিলাদের বিশাল উপস্থিতিতে। দ্বিতীয়ত, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প শুরুর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর উপরে মহিলাদের আস্থা আরও বেড়েছে। মাসে এক হাজার-বারোশো টাকা দিয়ে তাঁদের আর্থিক দিক দিয়ে আরও স্বাবলম্বী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃতীয়ত, কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্প চালু করা বা মহিলা স্বনির্ভর দলগুলিকে এককালীন আর্থিক সাহায্য দিয়ে তাদের আরও সাবলম্বী করার মতো একাধিক পদক্ষেপে মহিলাদের সমর্থন আসবে তৃণমূলের দিকেই।
তথ্য় বলছে, পুরুলিয়ায় পুরুষ ও মহিলা ভোটারের ফারাক মাত্র পঁচিশ হাজার। সেই প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত, পুরুলিয়া আসন দখলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন মহিলা ভোটারদের সমর্থন।
বিজেপির রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর তবে দাবি, ‘‘তৃণমূল মূলত লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের জন্যই মহিলাদের সমর্থন পাওয়ার আশা করছে। কিন্তু বাস্তবে তা হবে না। কারণ, যে পরিবারের মহিলারা মাসে মাত্র হাজার-বারোশো টাকা পাচ্ছেন, সেই পরিবারের যুবকেরাই কাজের সন্ধানে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে যাতায়াতের পথে তাঁদের অনেকের মৃত্যুও হচ্ছে। মহিলারা বরাবরই রাজনৈতিক দিক দিয়ে যথেষ্ট সচেতন। ওঁরা বুঝে গিয়েছেন, তৃণমূল তাদের পরিবারের ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ। পরিবর্তে উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই মহিলাদের সমর্থন বিজেপির দিকেই থাকবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy