পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় জলের আকাল। নিজস্ব চিত্র।
ভোট আসে, ভোট যায়। তবে গ্রামবাসীর তৃষ্ণা মেটে না। এত বছরেও নেতা-মন্ত্রীদের প্রতিশ্রুতিতে গলা ভেজেনি আড়শা ব্লকের সীতারামপুরের চুলাপানি, ভুঁইয়াডি, বামনি, পড়শিহা ও গোয়ালিকোচার বুরুডি, মিশিরটাড় টোলাগুলির বাসিন্দাদের। এই সমস্ত এলাকার মানুষের কাছে দুষ্প্রাপ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে পানীয় জলটুকু।
চুলাপানি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় ঢোকার কোনও পাকা রাস্তা নেই। পানীয় জলের জন্য নেই কোনও নলকূপ। পাঁচ বছর আগে একটি কুয়ো খনন করা হলেও তা থেকে জল পাওয়া যায়নি। ভুঁইয়াডি গ্রামের অবস্থা আরও শোচনীয় বলেই দাবি বাসিন্দাদের। অভিযোগ, সেখানে দু’টি নলকূপের জলই পানের অযোগ্য। নদীর জল পান করেই দিন কাটছে বলে জানিয়েছেন বামনির বাসিন্দারা। পানীয় জলের জন্য হাহাকার করতে দেখা যায় মিশিরটাড় ও বুরুডি, পড়শিহার বাসিন্দাদের।
পুরুলিয়ার এই প্রত্যন্ত এলাকাগুলি বঞ্চিত জল জীবন মিশন কিংবা জলস্বপ্নের মতো প্রকল্পগুলি থেকে। চৈত্রের ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে কী ভাবে দিন কাটবে? বাসিন্দাদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ। স্থানীয় বাসিন্দা সুখদেব সিং ঘাটুয়াল, মিহির সিং ঘাটুয়ালরা বলেন, “শুধু গরমের সময় নয়। সারা বছরই আমাদের জলের সমস্যা। সমাধান হবে কি না জানা নেই। লোকসভা ভোটেও সকলেই হয়ত প্রতিশ্রুতি দেবেন, পরে আবার ভুলে যাবেন।”
সীতারামপুর গ্রামেরপঞ্চায়েত সদস্য কলা সিং ঘাটুয়াল বলেন, “আমার এলাকার চারটি টোলায় জলের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় পঞ্চায়েতকে তা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এলাকার মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতি রাখতে না পেরে আমার নিজেরও খারাপ লাগে।”
বিষয়টি নিয়ে হেঁটগুগুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনসূয়া মাহাতো বলেন, “ওই এলাকায় জলের উৎস কম থাকায় সমস্যা রয়েছে এ কথা সত্য। আপাতত ট্যাঙ্কের মাধ্যমে জল দেওয়া হবে। স্থায়ী সমাধান নিয়েও ভাবছি।” পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতোও বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়ার আশ্বাস দেন, বলেন, “যদিও নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে, তবু জলের সমস্যা নিয়ে খোঁজ নেব।”
এই নিয়ে কটাক্ষ করতেছাড়েনি বিজেপি। স্থানীয় বিজেপির মণ্ডল সভাপতি পার্থসারথি মাহাতো বলেন, “শাসক দল শুধু মুখে উন্নয়নের কথা বলে। ওই এলাকাগুলি আদিবাসী অধ্যুষিত হওয়া সত্ত্বেও উন্নয়নের ছিঁটেফোঁটা পৌঁছায়নি সেখানে।” বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারের পুরুলিয়ার বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো বলেন, “জল জীবন মিশনের জন্য কেন্দ্র থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। শুধু কেন্দ্র থেকে টাকা নিয়ে আসা হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy