—প্রতীকী চিত্র।
গত লোকসভা ভোটের ব্যবধান এ বার অনেকটাই মুছে ফেলা গিয়েছে। কিন্তু দুর্গাপুর শহর নিয়ে চিন্তা কমছে না তৃণমূলের। এ বারের ভোটের ফল অনুযায়ী, শহরের ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ১০টিতে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। বাকিগুলিতে ‘লিড’ রয়েছে বিজেপির। পুর এলাকার ৪৩টি ওয়ার্ড থেকে মোট ১৩,০৫৪ ভোটে এগিয়ে বিজেপি। পুরভোটে ক্ষমতা ধরে রাখতে তৃণমূলকে অন্তত ২২টি ওয়ার্ডে জয় পেতে হবে। তৃণমূল অবশ্য মনে করছে, লোকসভা ও পুরসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিত আলাদা। গত কয়েক বছরে শহরের উন্নয়ন ও পরিষেবাই জেতাবে, আশা তাদের। বিরোধীদের পাল্টা দাবি, স্বচ্ছ নির্বাচন হলে পুরভোটেও মুখ পুড়বে তৃণমূলের।
দুর্গাপুর পুরসভার বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে ২০২২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। পর দিন থেকে পুরসভার দায়িত্ব গিয়েছে ৫ সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলীর হাতে। তার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় ১ বছর ৯ মাস। এখনও নির্বাচন ঘোষণা হয়নি। দ্রুত পুরভোটের দাবিতে বিরোধীরা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন করেছে। কিন্তু দুর্গাপুরের পুরভোট নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি। জল্পনা তৈরি হয়েছিল, লোকসভা ভোট না মিটলে এই পুরভোট হবে না।
বিরোধীদের অভিযোগ, ২০১৭ সালে চরম সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে ৪৩টি ওয়ার্ড দখল করেছিল তৃণমূল। যদিও তৃণমূল তা মানেনি। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে পুরভোটের সন্ত্রাস মাথায় রেখেই তৃণমূলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় শহর। দুর্গাপুর পশ্চিম থেকে ৪৯,৫১১ এবং দুর্গাপুর পূর্ব থেকে ২৬,৫৯১ ভোটের ‘লিড’ পায় বিজেপি। দুর্গাপুর পশ্চিমের মধ্যে রয়েছে ২৭টি এবং দুর্গাপুর পূর্বের মধ্যে রয়েছে শহরের বাকি ১৬টি ওয়ার্ড। এ বার তাই লোকসভা ভোটের আগে পুরভোটে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চায়নি রাজ্যের শাসক দল, দাবি বিরোধীদের।
কিন্তু পুর এলাকায় এ বার লোকসভা ভোটের ফলও তৃণমূলের জন্য তেমন আশাব্যঞ্জক নয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দুর্গাপুর পুর এলাকায় বিজেপি পেয়েছে ৪৫.২৩ শতাংশ ভোট। তৃণমূল পেয়েছে ৪১.৪৫ শতাংশ ভোট। বামের ঝুলিতে পড়েছে ৯.৯৬ শতাংশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দুর্গাপুর পশ্চিমের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে মাত্র ৬টিতে (১২, ১৪, ৩১, ৩৪, ৩৫ ও ৪১ নম্বরে)। এর মধ্যে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ ১,৯৬৯ এবং ৩৪ নম্বরে সর্বনিম্ন ৪৩ ভোটের ‘লিড’ পেয়েছে তৃণমূল। দুর্গাপুর পূর্বের ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল এগিয়ে মাত্র ৪টিতে (১, ২, ২৩ ও ২৫ নম্বর)। এর মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ ১,৭৯৮ এবং ২৫ নম্বরে সর্বনিম্ন ৩৯১ ভোটের ‘লিড’ রয়েছে।
বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের দাবি, “জোর-জবরদস্তি না করলে কোনও ভাবেই দুর্গাপুর পুরসভায় ক্ষমতায় আসতে পারবে না তৃণমূল। ২০১৭ সালেই দুর্গাপুরবাসী তৃণমূলকে পরিত্যাগ করেছে। তার পর থেকে জোর করে ক্ষমতা দখলে রেখেছে। তবে এ বার ফের তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে দুর্গাপুরবাসী রুখে দেবেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের বক্তব্য, “প্রায় দু’বছর ধরে পুরসভায় কোনও নির্বাচিত বোর্ড নেই। নাগরিক পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। উন্নয়নের কাজ যা হয়েছে সবই বাম আমলে। দ্রুত ও স্বচ্ছ পুরভোটের দাবিতে আমরা ধারাবাহিক আন্দোলন করছি। মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারলে আমরা নিশ্চিত, পুরসভায় ফের বামেরা ক্ষমতায় ফিরবে।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, “মানুষের কাছে যাব। আমাদের কাজের কথা বলব। কোনও ভুল থাকলে মাথা নত করব। লোকসভা ভোটে মানুষ আশা জুগিয়েছেন। পুরসভাতেও আশা করি তাঁরা আমাদের ফেরাবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy